x 
Empty Product
Sunday, 20 September 2020 08:48

৭০ প্রজাতির আম গাছের বাগান

Written by 
Rate this item
(0 votes)

মহালছড়িতে আমের মুকুলে ভরে গেছে হ্লাচিং মং চৌধুরীর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির আম বাগান। তার বাগানে ৭০ প্রজাতির আম গাছ রয়েছে।

উপজেলার কাটামুড়া নামক ধুমুনিঘাট এলাকায় সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৫ শত ফুট সু-উচ্চ পাহাড়ে প্রায় ২০ হেক্টর জায়গায় তিনি গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বাগান। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রকার বনজ ও বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ সৃজন করেছেন। তার বাগানে প্রায় ২০ হাজার এর উপরে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ রয়েছে। এই বাগানে রয়েছে বিচিত্র ফলজ গাছের সমারোহ। বিভিন্ন প্রজাতির ফলের মধ্যে আম একটি। এই বার তার বাগানে ৭০ প্রজাতির আম গাছের মধ্যে গুটি কয়েক বাদে প্রায় সব প্রজাতির আম গাছেই মুকুল এসেছে। গত বছরের তুলনায় এবারে বেশি ফলনে আশাবাদী তিনি।

বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছের মধ্যে তার সংগ্রহে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি-১ থেকে বারি-১১ পর্যন্ত জাতের আম। এছাড়াও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের মধ্যে রয়েছে কিউজাই (থাই), পালমার (ফ্লোরিডা), জাম্বুরা আম (থাই), দোকমাই (থাই), রানী পছন্দ, রেড লেডি (ফ্লোরিডা), সূর্য ডিম (থাই), ত্রিফলা, চৌফলা (ইঅট-৯), শ্রাবণী-১ (ইঅট-১), শ্রাবণী-২ (ইঅট-২), মাহেলেসা (ইঅট-১৪), গৌরমতী, ম্যট্রোস তোতা, আলফানসো, চোষা, পূর্ণা হাইব্রিড ও কেন্টসহ প্রায় ৭০ প্রজাতির আম গাছ। বিভিন্ন ফলের মধ্য রয়েছে মালতা বারি-১, সূর্যমুখী কলাসহ বিভিন্ন জাতের কলা, ড্রাগন ফল, আনার ও ডালিমসহ বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ।

হলাচিংমং এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষিত বেকার যুবকরা যখন চাকরির পিছনে ছুটতে ব্যস্ত, তখন তার একটা স্বপ্ন ছিলো নিজে কিছু করার, তখনি তার মাথায় বুদ্ধি এলো বিজ্ঞানসম্মত ভাবে মিশ্র ফলের বাগান করলে কেমন হয়। যেই ভাবা সেই কাজ, পুরোদমে নিজ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় শুরু করলেন বাগান গড়ার কাজ, তাও সুমদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫ শত সুউচ্চ পাহাড়ে। ঝুঁকি নিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ করে সাফল্য পাওয়ায় পুরো খাগড়াছড়ি জেলা তথা পার্বত্য চট্টগ্রামে চমক সৃষ্টি করেন। বর্তমানে তার বাগানে চার হাজারের অধিক ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে।

এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি, একে একে সাফল্য আসতে থাকলো তার। বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চারা সংগ্রহ করে চাষ করতে লাগলেন। গত বছর ড্রাগন ফল সহ বিভিন্ন জাতের বিদেশি আম বিক্রি করে যে টাকা পেয়েছেন তাতে বাগানের খরচ বাদ দিয়ে তিনি স্বচ্ছল ভাবেই চলতে পারতেছেন। উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। তার এই উদ্যোগের ফলে তার বাগানে নিয়মিত প্রায় ২০/৩০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই ছাড়াও তিনি যুব সমাজকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। বলা যায় বেকার যুবকদের আইডল এখন তিনি।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তার জামপ্লাজম সেন্টার করার পরিকল্পনা আছে। যাহাতে প্রকৃতি প্রেমিকরা তার বাগানে এসে নতুন নতুন গাছের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। বেকার যুবক তথা যারা বাগান করতে আগ্রহী তারা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে কি ভাবে চাষ করে লাভবান হতে পারবেন সেই বিষয়ে জানার সুযোগ পাবেন এই সেন্টারের মাধ্যমে। এছাড়াও ভবিষ্যতে এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি করার পরিকল্পনা আছে তার।

তাছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে যুব সমাজকে উজ্জীবিত করছেন, যাহাতে কেউ বেকার বসে না থেকে নিজের প্রচেষ্টায় কিছু করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছ থেকে যদি প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সর্বাত্মক সহযোগিতা পান তা হলে তার স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

কৃষি কাগজ/ এস এম

 সূত্রঃ ইত্তেফাক

Read 1774 times

Leave a comment

Make sure you enter the (*) required information where indicated. HTML code is not allowed.