x 
Empty Product
Wednesday, 21 February 2024 12:00

অনলাইনে আমের দাম কেন বেশি?

Written by 
Rate this item
(0 votes)

গান এবং পাইকারি বাজার ঘুরে আমি যে কারণ গুলো বের করতে পেরেছি।
ভুমিকা না দিয়ে সরাসরি লেখায় চলে যাচ্ছি, যদিও আমি ভাল লিখতে পারিনা। অনলাইনে সেলাররা অনেকটা আতশি কাচের নিচে থাকে, কিছুটা আতংকেও হয়তো থাকে। কখন কোন কাস্টমার নেগেটিভ রিভিউ দিয়ে দেয় আবার সেটা ভাইরাল করে ফেলে। প্রায় সময়ই কাস্টমাররা অন্যায্য যুক্তি চাপিয়ে দেয়।
কয়েকদিন আগে এক অনলাইন নিউজে রিপোর্ট হয়েছে, বানেশ্বরে আমের দাম কম, ক্রেতা নাই। এটা দেখে অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, অনলাইনে দাম বেশি কেন? অনলাইন সেলাররা কি বেশি দাম নিচ্ছেন?
চলুন কয়েকটা কারণ দেখি, কেন অনলাইনে দাম বেশি।
১। প্রথমেই বলতে হয় রিপোর্টের সত্যতা পুরোপুরি পাইনি। যেমন, বলা হয়েছে আমের ক্রেতা কম তাই দাম কম। ক্রেতা কম ঠিক আছে কিন্ত দাম অতটা কম নয় যতটা নিউজে বলা হয়েছে। আগে হিমসাগর বিক্রি হতো ২২০০-২৬০০ টাকা মণ, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা মণ। ৫০ কেজিতে মণ কেউ দিতে রাজি হলোনা, বাগানেও না, বানেশ্বর বাজারেও না। ৪৫ কেজিতে মণ দিচ্ছে সবাই। বাগানে গেলে ২০০০ এর নিচে কেনা যাচ্ছেনা। আজকে কয়েকটা বাগান দেখলাম।
২। হিমসাগর আমের মধ্যেও অনেক প্রকার আছে। আটির আম নামে এক রকম হিমসাগর পাওয়া যায় এখানে যেটার দাম কম। ১২০০-১৪০০ টাকা মণ। আমার কাছে অনেকটা হিমসাগরের “ক্লোন” এর মত মনে হলো। স্বাদে তেমন কোন পার্থক্য নেই, খুব মিষ্টি, আজ খেলাম। দেখায়ও তফাৎ নেই। আম চাষীরা না বলে দিলে কেউ ধরতে পারবেনা এটা আমি শিউর।
৩। অনলাইনে যারা আম কিনেন তারা সবাই বড় সাইজের আম কিনতে চান। কিন্ত গাছে কি শুধু বড় সাইজের আমই হয়? ছোট সাইজ হয়না? বেছে বেছে বড় আম পাঠাতে গিয়েই অনলাইন সেলাররা বিপদে পড়েন। সাইজে কিছুটা ছোট আম পাঠালেই সেই সেলারের বিরুদ্ধে নেগেটিভ রিভিউ দিতে কেউ কার্পণ্য করেনা।
বাজার থেকে কিনতে গেলে ছোট বড় মিলিয়ে কিনতে হয়, বাগান থেকেও একই অবস্থা। কিন্ত যখনই বেছে বেছে বড় আম কিনতে যাই তখনই পাইকার বা বাগান মালিকরা দাম বাড়িয়ে দেয়। এখন অনেক ক্রেতাই জানতে চান এক কেজিতে কয়টা আম ধরে? তো, বড় আম কিনতে গিয়ে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
তারপর, প্যাকেজিং, কুরিয়ার, ক্যারিয়িং কস্ট। শারীরীক পরিশ্রমের কথা বাদই দিলাম। দিনশেষে আমরা অনলাইন সেলাররাও মানুষ। প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন খরচাদি বাদ দেওয়ার পর যদি কিছু মুনাফা ঘরে নিতে না পারি তাহলে এত কষ্ট করা কি মানে হলো?
গতকাল ও আজ বানেশ্বর বাজারে ৩৭-৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ঘুরাঘুরি করেছি। ঘামে ভিজে একাকার হয়েছি।
৪। অফলাইন ব্যবসায়ীদের পরিবহন ও প্যাকেজিং চার্জ কম পরে। তারা একই ক্যারেট বারবার ব্যবহার করতে পারে কিন্ত অনলাইনে আপনাকে ক্যারেকসহ কিনে নিতে হচ্ছে। আমাদের কুরিয়ার খরচ যেখানে ১০-১৫ টাকা কেজি সেখানে তাঁদের হয়তো ২-৩ টাকা কেজি।
এই কারণগুলোই আমি খুজে পেয়েছি। কারও কাছে অন্য কারন থাকতে পারে, আমার সাথে দ্বিমতও থাকতে পারে, সেটা জানালে আমি শুধরে নিতে পারব।
পরিশেষে বলব, আমরা অনলাইন সেলাররা আপনাদেরকে বিষমুক্ত আম খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েই পরিশ্রম করছি। কিছু কিছু সেলার হয়তো অনেক বেশি পরিমাণে প্রফিট করেন। আবার কেউ হয়তো জাতের কিছুটা মিশ্রণ দিয়ে দাম কমাচ্ছেন। কেউ হয়তো সীমিত লাভ করে দাম কমাচ্ছেন। তবে যারা কথা কাজ মিল রেখে আম বিক্রি করছেন তাদেরকে সাপোর্ট করুন। বিরুধিতা কইরেন না, প্লিজ। চারদিকে ভেজালের ভীরে নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনের নিরব যোদ্ধা হিসেবেই আমরা কাজ করছি।

 

Read 39 times

Leave a comment

Make sure you enter the (*) required information where indicated. HTML code is not allowed.