x 
Empty Product
Tuesday, 18 February 2020 07:50

কিভাবে কোন কিটনাশক আম গাছের মুকুলে স্প্রে করলে ফলন ভালো হয়

Written by 
Rate this item
(0 votes)

আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল হচ্ছে আম। বর্তমানে গাছে গাছে আমের মুকুল এসেছে। এই মুকুলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে ঝড়ে পড়ে। চলুন জেনে আসি কিভাবে এই মুকুলে আক্রান্ত রোগ মুক্ত করা যায়। আম গাছের মুকুলে যেভাবে স্প্রে করবনে।

অ্যানথ্রাকনোজ

এ রোগ আমের পাতা ও ফলে হয়ে থাকে। এটি কোলিটোট্রিকাম গোলেসপোরিওডিস (Colletotrichum gloeosporioides) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। এ রোগের কারণে আমের ফলন শূন্যের কাছাকাছি আসতে পারে।

লক্ষণগুলো : ১. এ রোগ নতুন পাতা, পুষ্পমঞ্জরি ও ফলে দেখা যায়। ২. পাতায় ধূসর-বাদামি ছোট কৌষিক দাগ পড়ে এবং পরে সব পাতায় ছড়িয়ে পড়ে ও এক পর্যায় পাতা ঝরে পড়ে। ৩. ফলের ওপর প্রথমে গাঢ় বাদামি দাগ পড়ে। ৪. দাগগুলো পরে বড় হয়ে কাল বর্ণ ধারণ করে। ৫. আক্রমণ মারাত্মক হলে পরবর্তীতে সম্পূর্ণ আম পচে যায়।

অনুকূল অবস্থা : ১. তাপমাএা ২৫-২৮ ডিগ্রি সে.। ২. আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭০-৮০%। ৩. অধিক বৃষ্টিপাত। ৪. ঘন কুয়াশা ও আকাশ মেঘাচ্ছন এ রোগের প্রকোপ বাড়ায়।

দমন ব্যবস্থা : ১. ফল সংগ্রহের পর বাগানের অবশিষ্টাংশ ধ্বংস করতে হবে। ২. স্বাস্থ্যবান চারা রোপণ করতে হবে। ৩. বোর্দো মিক্সচার ০.৩% হারে ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে (ফুল ধরার পূর্বে ও পরে এবং ফল সংগ্রহের পূর্বে)। ৪. ব্যাভিসটিন ডবলিউ/পি ০.২ % হারে অথবা ডাইথেন-এম ০.৩ % হারে দুই বার (ফুল ধরার আগে ও পরে ) স্প্রে করতে হবে।

আমের বোঁটা ও ফল পচা

রোগের কারণ : এ রোগ বোট্রিওডিপ্লডিয়া থিয়োব্রোমি (Botryodiplodia theobromae) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগ আমের বোঁটা ও ফলে হয়ে থাকে।

রোগের লক্ষণগুলো : ১. প্রথমে বোঁটার চারদিকে কিছু জায়গা জুড়ে কাল দাগ পড়ে। ২. পরবর্তীতে আমের অধিকাংশ ও সর্বশেষ অংশ পচে কাল রঙ ধারণ। ৩. আক্রান্ত স্থানে চাপ দিলে ভেতর থেকে পচা কাল গন্ধযুক্ত আমের রস বের হয়ে আসে।

রোগ দমন : ক. যে কোনো একটি পদ্ধতিতে রোগ দমন করবেন : ১. ডাইথেন-এম-৪৫, ০.৩ % হারে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। ২. রিডোমিল ০.১ % হারে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। ৩. রোভরাল ০.১ % হারে ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে। খ. আম হারভেস্ট করার পর ৪৩ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রায় ৫ মিনিট ৬% বোরাক্স দ্রবণে চুবাতে হবে। গ. ফল সংগ্রহ করার পর ডালপালা, অবশিষ্টাংশ ধ্বংস করতে হবে।

আমের পাউডারি মিলডিউ

রোগের কারণ : এ রোগ ওডিয়াম মেংগিফেরা (Oidium mangiferae) নামক ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।

রোগের লক্ষণগুলো : ১. পুষ্পমঞ্জরি ও উহার সংলগ্ন কচিপাতা এবং ছোট ফলের ওপর সাদা-ধূসর পাউডার দেখা যায়। ২. সাধারণত সংক্রামণে পুষ্পমঞ্জরির অগ্রভাগ ক্ষত শুরু করে নিচের দিকে ধাবিত হয় এবং কুঁচকে যেয়ে ডাই-বেক লক্ষণ প্রকাশ পায়। ৩. ফল অপরিপক্ব অবস্থায় ঝরে পড়ে এবং বিকৃত ও বিবর্ণ হয়।

দমন ব্যবস্থা : ১. আমের বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। ২. ছত্রাকের গঠন ধ্বংস করতে মাঝে মাঝে গাছে পানি স্প্রে করতে হবে। ৩. থিয়োভিট ০.৩ % হারে ফুল ফোটার পূর্বে এক বার ও পরে দুই বার স্প্রে করতে হবে। ৪. ম্যালাথিয়ন ০.২ % হারে ফুল ফোটার পর একবার ও গুটি আসার পর ১৫ দিন পর পর দুই বার স্প্রে করতে হবে।

৩. পোকামাকড় দমন

আমের শোষক পোকা/ আমের হপার
এই পোকার তিনটি প্রজাতি ক্ষতি করে থাকে। নিম্নে ক্ষতির প্রকৃতি ও দমনব্যবস্থা দেয়া হলো।
ক্ষতির প্রকৃতি : আমের অনিষ্টকারী পোকার মধ্যে এ পোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করে থাকে। আমের পাতা ও বোঁটায় এরা ডিম পাড়ে। এজন্য আক্রান্ত পাতা ও ফুল শুকিয়ে যায় এবং গুটি আসার আগেই ফুল ঝরে য়ায়। এতে ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়। এ পোকার আক্রমণের অন্যতম লক্ষণ হলো, আক্রান্ত গাছের নিচে দিয়ে হাঁটলে পোকা লাফিয়ে গায়ে পড়ে।

দমন ব্যবস্থা : এ পোকা দমন করতে হলে মুকুল আসার আগে অথবা মুকুল আসার মুহূর্ত থেকে নিম্নলিখিত কীটনাশক স্প্রে করতে হবে : ডায়াজিনন ৬০ ইসি বা লেবাসিড ৫০ ইসি চা চামচের ৪ চামচ ৮.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পর পর দুই বার স্প্রে করতে হবে। অথবা ম্যালাথিয়ন বা এমএসটি ৫৭ ইসি উপরোক্ত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে।

ফলের মাছি বা আমের মাছি পোকা

ক্ষতির প্রকৃতি : এ পোকার কীড়া পাকা আমের মধ্যে প্রবেশ করে শাঁস খেয়ে ফেলে। এতে ফল পচে যায় ও ঝরে পড়ে। আক্রান্ত আম কাটলে অসংখ্য পোকা দেখা য়ায়। পোকার আক্রমণ বেশি হলে গাছের সব আম খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়।

দমন ব্যবস্থা : আম পাকার আগে যখন পূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ডিপটেরেক্স চা চামুচের ৪ চামচ ৮.৫ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর দুই বার স্প্রে করতে হবে। অথবা ডায়াজিনন ৫০ ইসি ২মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ফলে স্প্রে করতে হবে (ওই সময়ে ফল খাওয়া যাবে না)।

বিঃদ্রঃ লিখাটি কপি করা হয়েছে:  farmsandfarmer24.com থেকে। সমস্ত ক্রেডিট উনাদের। আম চাষী ভাইদের উপকারের স্বার্থে লিখাটি এখানে প্রকাশ করা হলো।

Read 2564 times

Leave a comment

Make sure you enter the (*) required information where indicated. HTML code is not allowed.