আমের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বরেন্দ্র অঞ্চল রাজশাহীতে গাছে গাছে সবুজ পাতা ভেদ করে উঁকি দিয়েছে আমের মুকুল। সারি সারি আমের গাছে এখন ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ। সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের সোনালী স্বপ্ন। আম চাষিরাও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার আমের ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
চাষিরা বলছেন, কিছু দিনের মধ্যেই আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে সুরভিত হয়ে উঠবে প্রকৃতি। এসময়টাতে মুকুলের যত্ন না নিলে আমের ভালো ফলন সম্ভব নয়। আর এ কারণেই আশায় বুক বেঁধে শুরু হয়েছে পরিচর্যা। মুকুল যাতে পোকার আক্রমণ না হয় ও ঝরে না পড়ে সেদিকেই নজর রাখছেন আম চাষিরা। তীব্র শীত পেরিয়ে আমের গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্তত মাস খানেক আগেই মুকুলের দেখা মিলেছে। তবে পরিচর্যা খরচ বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেকে।
জেলার চারঘাট-বাঘা উপজেলার আম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গেল বছরে প্রলম্বিত শীতের কারণে ছোট গাছের তুলনায় পুরাতন আম বাগানের বড়-বড় গাছগুলোতে মুকুল কম এসেছিলো। এ বছর সব ধরনের আম গাছে মুকুল আসছে। তবে কীটনাশক, সেচের খরচ আর শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে কৃষকদের।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর শীতের প্রভাব আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে গাছগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাগানে এখন মুকুলের মৌ-মৌ গন্ধ। যে কারো প্রাণ জুড়িয়ে যাবে। কোন কোন গাছ থেকে ক্ষুদ্র আকারে মুকুল বের হচ্ছে, আবার কোন-কোন গাছে পরিপূর্ণ মুকুল এসে গেছে। ফলে বাগান পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার ৯ টি উপজেলার মধ্যে ৮ টিতে যে পরিমান আম বাগার রয়েছে। তার সমপরিমান বাগান রয়েছে শুধু বাঘা উপজেলায়। এখানকার প্রধান অর্থকারী ফসল আম।
বাঘা উপজেলার আম চাষি শামসুল হক বলেন, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। এতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৪৫ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে। সে হিসেবে বাঘায় ৯ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমির আমগাছে বছরে প্রায় ৭ লাখ টাকার কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার হয়ে থাকে। যার কমতি হবে না এবারও ।
উপজেলার আরেক আম চাষি মেহেদেী হাসান বলেন, আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পুরোদমে মুকুল আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। তাই এসম গাছের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হয়। এছাড়াও বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে স্প্রে করা হচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলার আমচাষি আসলাম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে প্রতিটি অঞ্চলেই বাণিজ্যিকভাবে আমচাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এই আম প্রক্রিয়াকরনের জন্য আধুনিকমানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, আম সংরক্ষণের জন্য হিমাপ্রায় স্থাপন করা হলে আমচাষীরা যেমন লাভবান হতেন তেমনিভাবে সরকারও সেই আমগুলো মানভেদে বিদেশে চালান করেও অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারতো। তাই আমচাষীদের দিকে সুদৃষ্টি প্রদান করতে আমি জেলার সকল আমচাষীদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ্ সুলতান বলেন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রফতানিসহ বাজারজাত করলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল আলিম বলেন, এবার গরম আগেই চলে এসেছে। আম গাছে মুকুল আসা শুরু করেছে। কিছু কিছু গাছে মুকুল এসেছেও। আবার কিছু কিছু গাছে মাথা ফাটছে। এই ফাটা জায়গা থেকেই মুকুল বা নতুন পাতা বের হবে। তবে সেগুলো মুকুল হবে না নতুন পাতা হবে সেটা বুঝতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে।
বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলটি আমাদের নিজস্ব না। অনলাইনে আম সেক্টরকে আরও বেশি প্রসারিত করার জন্য বিভিন্ন সোর্স থেকে গুরুত্বপুর্ন কন্টেন্টগুলো আমরা কপি করে প্রকাশ করে থাকি। যেহেতু এই নিউজটি একাধিক সাইটে বা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে, তাই এখানে আমরা কোন সোর্স লিংক প্রকাশ করছি না। কারন আমরা নিজেরাও জানিনা এই আর্টিকেলটি মুল স্বত্তাধীকারি কে বা কাহারা...