x 
Empty Product
Friday, 16 August 2013 11:09

হাঁড়িভাঙ্গা আম মৌসুমে ছেলেমেয়েদের বিয়ে

Written by 
Rate this item
(0 votes)

ংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আমের কদর সারা দেশে দিন দিন বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত নিয়ে যাচ্ছে এ আম। দেশের গ-ি ছাড়িয়ে এখন বিদেশ যাচ্ছে রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম। অনেকে আবার ভোটের কৌশল হিসেবে ভোটারের সঙ্গে বিনামূল্যে এ আমের চারা বিতরণ করছে।

সূত্র মতে, এ বছর রংপুর অঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এ আম থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন চাষিরা। রংপুরের মিঠাপুকুর, সদর ও বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর সীমান্ত ঘেঁষা মিঠাপুকুর গোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের উৎসবমুখর পরিবেশ। হাঁড়িভাঙ্গা আমের আমদানি বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও বাজারে ফজলি, কেরোয়া, আশ্বিনী, সাদা লেংড়া, গোপালভোগ আম্রপালি, চোষা আটিসহ হরেক-রকম আম থাকলেও রংপুর নগরীতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। হাঁড়িভাঙ্গা আমের বৈশিষ্ট্য খুবই মিষ্টি ও আঁটি ছোট এবং ওজন ৪০০ গ্রাম থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আমের নামকরণ নিয়ে কথা হলে গোড়াগাছ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরে আলম জানান, তার দাদা নফল উদ্দিন মাসিমপুর এলাকার কুমারবাড়ির পাশে জঙ্গল থেকে আম কিনে আনেন এবং প্রথমে ভাঙ্গা হাঁড়ির মাঝখানে আম গাছটি হওয়ায় নামকরণ করা হয় হাঁড়িভাঙ্গা আম। সে থেকে এখনও এ নাম অনেক খ্যাতি লাভ করে।

লালপুকুর জুরুল্লাপুরে আম চাষি সালাম সরকার জানান, এবার ৪ একর জমির আম ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বাগান ফড়িয়ারা কিনে আবার ৬ লাখ টাকা বিক্রি করে। ওই এলাকার অনেক বাগান মালিকের পুঁজি না থাকায় আমের মুকুল আসার আগে বিক্রি করে দিচ্ছে ফড়িয়াদের কাছে। ফড়িয়ারা সে বাগান কিনে ২-৩ গুণ লাভ করে চড়া দামে বিক্রি করছে পাইকারদের কাছে। আম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকার লক্ষাধিক মানুষ আম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আমের ওপরই চলে তাদের সংসার। বাইরের অনেক লোক জমি লিজ নিয়ে আম চাষ করে। তারা সারা বছর অপেক্ষায় থাকে, আম মৌসুম এলে ছেলেমেয়েদের বিয়ে হবে। আমের মৌসুম শেষে ছেলেমেয়েদের বিয়েসহ অন্যান্য স্বপ্ন পূরণ করেন চাষিরা। সুবিধাভোগী সাইফুল ইসলাম হাবিবুরসহ অনেকে জানান, বাগান মালিকরা অনেক আগে আম গাছ বিক্রি করায় লাভের অংশ কম পায়। বর্তমানে আমের মণ ৪০ কেজির দাম ২ হাজার ২০০  থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা।

আম বাগান মালিকরা জানান, প্রযুক্তি সমস্যা এবং কৃষি অধিফতরের কোনো মনিটরিং না থাকায় রোগবালাই নির্মূলের ব্যাপারে পরামর্শ পাচ্ছেন না কৃষক। এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি বিভাগের উপপরিচালক ফিরোজ আহম্মদ জানান, আমাদের কাছে কেউ পরামর্শ চাইলে দিয়ে থাকি। আম চাষিদের দাবি আম বাগান পরিচর্যার জন্য আলাদাভাবে কৃষি বিভাগের তদারকি থাকলে আমের ফলন বাড়বে।

এছাড়াও সরকারিভাবে ফল রাখার হিমাগার ব্যবস্থা থাকলে আম সংরক্ষণ করে দেরিতে বিক্রি করে অনেক লাভবান হতো আম চাষিরা। রংপুর-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবীব-উন-নবী আশিকুর রহমান জানান, এবারে ৩ লাখ হাঁড়িভাঙ্গা আমের চারা ভোটারদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। ভোটারদের ধারণা ভোট সংগ্রহের আশায় লোভনীয় আমের চারা বিতরণ করা হবে।

অবহেলিত এ অঞ্চলে আম চাষ উপযোগী এলাকায় সরকারি নজরদারি, কৃষি বিভাগের বিশেষ ব্যবস্থায় আম বাগান মালিকদের সরকারিভাবে সাহায্য করলে রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষ করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন সম্ভব হবে।

Read 3975 times

Leave a comment

Make sure you enter the (*) required information where indicated. HTML code is not allowed.