x 
Empty Product

করোনা পরিস্থিতিতে আম, লিচুসহ মৌসুমী ফল এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনলাইনে (জুম প্ল্যাটফর্মে) মতবিনিময় সভায় বক্তারা ১০ দফা সুপারিশ করেছেন। শনিবার (১৬ মে) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বাজারজাতকরণ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এই সভা হয়।

 

সভায় কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম মতিয়া চৌধুরী, খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহম্মেদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন  এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

১০ দফা সুপারিশ হচ্ছে -

১. হাওরে ধান কাটা শ্রমিকদের যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠানো হয়েছে, তেমনি অন্যান্য জেলা থেকে ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ফড়িয়াদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা। প্রয়োজনে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রত্যয়নপত্র প্রদান ও নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা নেওয়া।

২.  মৌসুমী ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের অবাধ যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা, পরিবহণের সময় যাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর  মাধ্যমে কোনও ধরনের হয়রানি করা না হয় সে ব্যবস্থা করা।  

৩. বিআরটিসির ট্রাক ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া।

৪. স্থানীয়ভাবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানো।

৫. পার্সেল ট্রেনে মৌসুমী ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহণের আওতা বাড়ানো, হিমায়িত ওয়াগন ব্যহার করা যায় কিনা তা নিশ্চিত করা।

৬. ফিরতি ট্রাকের বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল হার কমানো।

৭. ত্রাণ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতে আম, লিচুসহ মৌসুমী ফল অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো।

৮. অনলাইনে ও ভ্যানে ছোট ছোট পরিসরে কেনাবেচার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা।

৯. প্রাণ, একমি, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠান যারা কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করে জুস, ম্যাঙ্গোবার,আচার, চাটনি প্রভৃতি তৈরি করে,তাদের এবছর  বেশি বেশি আম-লিচু কেনার অনুরোধ জানানো।

১০.  মৌসুমি ফলে যেন কেমিক্যাল ব্যবহার করা না হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এবং কৃষি বিপণন অধিদফতর সমন্বিতভাবে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা।

এই নিউজটির মুল লিখা আমাদের না। আমচাষী ভাইদের সুবিধার্তে এটি কপি করে আমাদের এখানে পোস্ট করা হয়েছে। এই নিউজটির সকল ক্রেডিট: https://www.banglatribune.com

Published in ব্লগ

ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী অঞ্চলের আম ও লিচু নিয়ে সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছেন রাজশাহী অঞ্চলের চাষি ও ফল ব্যবসায়ীরা। এটি বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণত ট্রেন, ট্রাক ও কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করলেও করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় সব পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও করোনায় দেশের একটি বড় কর্মক্ষম জনশক্তি বেকার হয়ে পড়ায় আমের ক্রেতা নিয়েও রয়েছে সংশয়। ফলে বাগানে বাগানে দেখা মিলছেনা মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদের। এ সঙ্কট নিরসনে আজ শনিবার জনপ্রতিনিধি, বিশেষজ্ঞ, কর্মকর্তা, ফলচাষি, ব্যবসায়ীদের সাথে অনলাইনে বৈঠক করবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

 

বৈঠকে আম পাঠানোর জন্য ট্রেনকে অগ্রাধিকার দেয়ার দাবি জানাবেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বর্তমানে ট্রাক ভাড়া বেশি পড়বে। মালিক ও ড্রাইভার করোনা এবং রাস্তায় চেকিং নামে হয়রানির অজুহাতে বেশি ভাড়া চাচ্ছেন। কুরিয়ার সার্ভিসে এখন অন্যান্য বছরের চেয়ে চার্জ বেশি। বাণিজ্যিকভাবে আমি ও লিচু সরবরাহ করার জন্য ট্রেন চালু করলে সঙ্কট কিছুটা কমতে পারে।

 

জানা গেছে, কৃষকদের দাবির মুখে সম্প্রতি পঞ্চগড় থেকে কাঁচামাল পরিবহনের জন্য একটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হয়েছে। একই দাবি করবেন রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর আম উৎপাদনে এগিয়ে থাকা নওগাঁ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা জেলা আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আম ব্যবসায়ী ও আড়তদার মনজুর হোসেন বলেন, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছয়-সাত ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি ঢাকা পৌঁছে যায়। যদি এই ট্রেনের সাথে আরো ৪-৫টি মালবাহী ওয়াগন সংযুক্ত করা হয় তাহলে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টন আম পরিবহন করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে এখনই রেল মন্ত্রণালয়কে সিদ্ধান্ত নেয়া দাবি জানান তিনি।

 

আম উৎপাদনকারী অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ীরাও চলতি বছর ট্রেনের মাধ্যমে আম সরবরাহ করার দাবি জানাবেন। কুরিয়ার সার্ভিস ও বেসরকারি ট্রাকগুলোর পরিবহন ভাড়া সহনীয় মাত্রায় রাখা এবং রাস্তায় কোনো হয়রানি না করার দাবি ও জানাবেন চাষি ও বিক্রেতারা।

 

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমচাষিরা বলছেন, গত ৩ বছর ধরে ক্রমাগত আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনছে বিভিন্ন কারণে। যেমন আম সংগ্রহে তারিখ বেঁধে দেয়া, কারবাইড দিয়ে আম পাকানোর অভিযোগে ট্রাকভর্তি আম ধ্বংস করে দেয়া, পরিবহন ধর্মঘট, ভারত থেকে আম আমদানি করা, প্রচুর পরিমাণে আম রফতানি না হওয়া, আম সংরক্ষণে বিজ্ঞানসম্মত কোনো পদ্ধতি উদ্ভাবন না হওয়া, আম সংরক্ষেণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইথোফেন ব্যবহারকারীদের প্রশাসন কর্তৃক জরিমানা করা।

 

আমচাষিরা বলছেন, পর পর ৩ বছর লোকসান হওয়ায় চাষিরা এবার আমগাছের জন্য প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করেনি। ফলে মাত্র ৬৪% আম গাছে মুকুল এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই এবার আম উৎপাদন কম হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৩ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩০টি আমগাছ রয়েছে। এই আমই জেলার প্রায় ৮ লাখ মানুষের মধ্যে আড়াই লাখ মানুষের সারা বছরের আয় রোজগারের উৎস। এই আম মৌসুমজুড়ে কমপক্ষে প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকার লেনদেন বা ব্যবসা হয় শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই।

 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদরঘাট, রহনপুর, ভোলোহাট, চৌডালা ও কানসাটের বড় বড় আড়তগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতা ও মজুরদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কিভাবে নির্বিঘœ হবে তা নিশ্চিত নয়। এ জন্য বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়াটি নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় আছে তারা।
স্থানীয়রা জানান, এসব আড়তে বড় বড় ক্রেতারা আসেন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে। এর মধ্যে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে করোনা সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। তাই এ জেলা থেকে আসা পাইকারদের কিভাবে আলাদা করে চিহ্নিত করবে তা-ও বলা হয়নি প্রশাসন থেকে। পাইকারদের থাকার জন্য নির্দিষ্ট হোটেলগুলো খোলা হবে কি না তা-ও নিশ্চিত নয়।

 

ক্রেতা নিয়ে সংশয় : করোনার কারণে চলতি বছর মানুষ আম কতটুকু কিনবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। করোনার কারণে দুই মাসব্যাপী দেশে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে অন্ততপক্ষে দুই কোটি শ্রমজীবী মানুষ সম্পূর্ণ বেকার অবস্থায় রয়েছেন। এ ছাড়া গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্তরাও রয়েছে প্রায় দুই কোটি মানুষও অভাবগ্রস্তে। এই চার কোটি মানুষের আমের স্বাদ নেয়া তো দূরের কথা আসন্ন ঈদের খুশিও তারা অনুভব করতে পারবে না। ফলে ক্রেতা না থাকলে আম উৎপাদনকারী চাষিরা আমের উৎপাদন মূল্য পাবে কিনা সে ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছে আম উৎপাদনকারী চাষি ও ব্যবসায়ীরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগান মালিক মঞ্জুরুল হুদা বলেন, আমের উৎপাদন পরিবহন ব্যবস্থা ইতিবাচক হলেও করোনার কারণে অসংখ্য মানুষ আম কিনবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

 

দেখা মিলছে না মৌসুমি ব্যবসায়ীদের : প্রতি বছর আম নামানোর আগে কয়েক দফায় বাগান বিক্রি হলেও এবার করোনাভাইরাসের কারণে চিত্রটা উল্টো। আম বাজারজাত করতে না পারার আশঙ্কায় বাগান মালিকদের কাছ থেকে আম কিনছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে আম বিক্রি ও দাম নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন বাগান মালিকরা।
নাটোরের বাগান মালিক আব্দুর রউফ বলেন, আগামী ২০ মে থেকে নাটোর জেলায় গাছ থেকে আম পাড়া শুরু হবে। প্রতি বছর মুকুল আসা থেকে শুরু করে আম নামানোর আগ পর্যন্ত বাগান বিক্রি হয় ৩ দফায়। তবে করোনাভাইরাসের কারণে বাগান বেচাকেনা হয়নি এবার।

 

গত কয়েক বছর ইউরোপে আম রফতানি করার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। গত বছর ৬৮ মেট্রিক টন আম ইউরোপের কয়েকটি দেশে রফতানি হওয়ায় চলতি বছর রফতানির পরিমাণ বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও করোনার কারণে তা কমে গেছে।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সুধেন্দ্র নাথ রায় বলেন, কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। রাজশাহী অঞ্চলে আম ও লিচুর ব্যাপক ফল হয়েছে। এই ফল এখন বিপণনই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।

এই নিউজটির মুল লিখা আমাদের না। আমচাষী ভাইদের সুবিধার্তে এটি কপি করে আমাদের এখানে পোস্ট করা হয়েছে। এই নিউজটির সকল ক্রেডিট: https://www.dailynayadiganta.com

Published in ব্লগ
Page 5 of 6