কক্সবাজার শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে উখিয়া সৈকতে ফলছে এই আম। থাইল্যান্ড থেকে আনা ‘রুপালি’ জাতের আমগাছ লাগানো হয়েছে উখিয়ার পাটোয়ারটেক সৈকত পারের তারকা হোটেল ‘রয়েল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্টে। রিসোর্টের সুইমিংপুলের উত্তর পাশে খোলামাঠে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা হয়েছে ৫৫টি গাছ। ১৫ একর জমির ওপর তৈরি করা রিসোর্টটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন পর্যটকেরা। তাঁদের জন্য বাড়তি পাওয়া রুপালি আম।
২০ জানুয়ারি বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, আম বাগানে ২০ জনের বেশি পর্যটক রয়েছেন। অনেকে বাগানে সেলফি তুলছেন। বাগান পরিচর্যায় রয়েছেন ছয়জন মালি।
কথা হয় ঢাকা থেকে আসা পর্যটক হেফাজতুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ছোট একটি গাছে এত বেশি আম ধরতে কোথাও দেখিনি। জোর কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি হলে অনেকে এই জাতের আম চাষে উৎসাহিত হতেন।
রিসোর্টের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহেদ আলম জানান, সৈকত ভ্রমণে আসা পর্যটক এবং হোটেলের অতিথিদের বিনোদনের জন্য থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে অন্য রকম আমের এই জাতটি। এই গাছের আম রিসোর্টের অতিথিদের বিনা মূল্যে খাওয়ানো হবে। পরে আমের বিচি থেকে চারা সৃজন করে আশপাশের এলাকায়ও সরবরাহ করা হবে। যেন উপকূলের মানুষ সারা বছর আম খেতে পারেন।
বাগান মালিদের প্রধান বাদল ব্যাপারী জানান, ১০ বছর ধরে তিনি আম বাগান করে আসছেন। তাঁর বাড়ি বরিশালের গৌরনন্দী গ্রামে। থাইল্যান্ড থেকে আনা রুপালি জাতের আম বাগানটি সৃজনের জন্য হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে নিয়োগ দিয়েছেন। এক বছরের মাথায় গাছগুলোর উচ্চতা পাঁচ থেকে ছয় ফুট হয়ে গেছে। এখন প্রতিটি গাছে ৪০ থেকে ৯৭টি আম ধরেছে। আগামী ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে গাছের আম পাকবে। ঠিকমতো পরিচর্যা করা গেলে ২০ বছর পর্যন্ত এই গাছে আম পাওয়া যাবে।
বাদল ব্যাপারী বলেন, রুপালি জাতের আম খুবই মিষ্টি। পোকায় ধরে কম। দেশে এই আমের চাষ তেমন হয় না। প্রতি কেজিতে আম ধরে পাঁচ থেকে ছয়টি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার জানান, সাধারণ গাছে আম পাকে এপ্রিল-মে মাসে। কিন্তু বিশেষ জাতের এই গাছে আম পাকবে ফেব্রুয়ারিতে। এ জাতীয় গাছে সারা বছর আম ও মুকুল লেগে থাকে। শখের বসে লোকজন এই আমের বাগান করেন।
টেকনাফ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ জানান, এই সময়ে টেকনাফের সাবরাং এলাকার কিছু গাছেও ‘রাংগুয়াই’ জাতের আম ধরে। মিয়ানমার থেকে আনা এই জাতের আমও পাকে ফেব্রুয়ারি মাসে। রুপালি আমের চেয়ে রাংগুয়াই ওজনে বড়।