আম চাষ নিয়ে সমস্যা ও সমাধান---
প্রশ্ন --আম গাছের কলম করার উপযুক্ত সময় কখন ?
উত্তর/মতামত---
আম গাছের কলম করার সময় হল মে হতে আগস্ট মাস। ভাল কলম পেতে চাইলে মে মাসের ২য় সপ্তাহ হতে জুলাই মাসে কলম করা উত্তম।
প্রশ্ন --দেশী আম গাছ কি কলম করা যাবে,কিভাবে কলম করতে হয়,,নিয়ম টা লিখবেন plzz
উত্তর/মতামত--
আপনি চাইলে দেশি আমের গাছের উপর দেশি জাতের কলম করতে পারবেন। এছাড়াও, দেশি গাছকে rootstock হিসেবে ব্যবহার করে অন্য ভাল জাতের আমের scion নিয়ে কলম করতে পারবেন। বিভিন্ন ধরনের কলম পদ্ধতি রয়েছে। গুটি কলম, ক্লেফট গ্রাফটিং, ভিনিয়ার গ্রাফটিং ইত্যাদি। কলম পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন আপনার নিকটস্থ আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। এছাড়াও সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন, ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, গাজীপুর.
প্রশ্ন -- আমি সিলেট এর মৌলভীবাজার জেলার অধিনস্ত এলাকায় বাস করি,ভাল জাতের কয়েক টি আম গাছের নাম দিবেন,ভাল জাতের আম গাছের ছেড়া কোথায় পাওয়া যাবে,plz amer ans ta diben..
উত্তর/মতামত--
বিএআরআই উদ্ভাবিত আমের ১১টি জাত রয়েছে। এগুলোর সবই ভাল জাত। এর মধ্যে বারি আম-৩,৪,৮,৯ এবং ১১ চাষ করতে পারেন। বিস্তারিত তথ্য জানতে যোগাযোগ করুন: আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, আকবরপুর, মৌলভীবাজার।
প্রশ্ন -- প্রায় সাত দিন ধরে আমের গাছে মুকুল আসছে কিন্ত সব মুকুল ঝড়ে যাচ্ছে? এখন কি করব।
বিষয় :প্রায় সাত দিন ধরে আমের গাছে মুকুল আসছে কিন্ত সব মুকুল ঝড়ে যাচ্ছে? এখন কি করব।
উত্তর/মতামত--
আপনার আমের গাছ কি কলমের চারা, নাকি বীজের চারা, গাছের বয়স কত- এসব কিছুই জানান নাই। কলমের গাছ হলে ৪-৫ বছর বয়স পর্যন্ত কোন মুকুল, ফল ধরতে দেওয়া যাবে না, মুকুল আসলে ভেঙ্গে ফেলতে হবে। সারা বছর গাছের সঠিক পরিচর্যা, সেচ ও সার প্রয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। মুকুল ঝরে যাওয়ার লক্ষণসমূহ জানান নাই। এমতাবস্থায় পরামর্শ দেওয়া সমীচিন নয়। উপরোক্ত তথ্যসমূহ ঠিক থাকলে এখন পানি দিয়ে দেখতে পারেন। পাউডারী মিলডিউ, এনথ্রাকনোজ ও হপার পোকার আক্রমন আমের মুকুল ঝরার অন্যতম কারণ।
১। মুকুলে সাদা/ধূসর পাউডার (পাউডারী মিলডিউ) দেখা যায় তাহলে থিওভিট ২ গ্রাম অথবা টিল্ট ২৫০ ইসি ০.৫ মিলি প্রতি লি. পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। পাতা, মুকুলে কালো দাগ (এনথ্যাকনোজ) হলে ইন্ডোফিল ২ গ্রাম/লি. পানিতে মিশিয়ে পাতা, মুকুল, ডালপালা ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
৩। মুকুল শুকিয়ে বিবর্ণ (হপার পোকা) হলে রিপকর্ড ১০ ইসি/লি. পানিতে মিশিয়ে পাতা, মুকুল, ডালপালা ভিজিয়ে স্প্রে করতে হবে।
প্রশ্ন :আমের গাছে মুকুল আসার পর আম আটকানোর জন্য আমাকে কি ঔষধ দেওয়া লাগবে ?
উত্তর/মতামত--
আম গাছে মুকুল আসলে যে ঔষধগুলো দিতে পারেন:
১। কনফিডর ১ গ্রাম প্রতি ৫ লি: পানিতে এবং ইন্ডোফিল ২ গ্রাম প্রতি ১ লি: পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
২। রিপকর্ড ১ মিলি প্রতি লি: পানিতে এবং টিল্ট ০.৫ মিলি প্রতি লি: পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
এগুলো, ফুল যখন কুড়ি অবস্থায় থাকবে তখন একবার এবং ফল যখন মটর দানা আকৃত ধারন করবে তখন আরেকবার স্প্রে করতে হবে। আর ফল আটকানোর জন্য ফলের মটরদানা ও মার্বেল আকৃতিতে ২% ইউরিয়া স্প্রে করতে হবে।
প্রশ্ন :আমার আমের বাগান একটি আমের বাগান আছে অনেক আম হয় কিন্তু অধিকাংশ আমই পোকায় ধরে যেমন আমের উপর দেখে বোজার খমতা নাই যে ভিতরে পোকা আছে আর আমের বউল পরে যায় আমের করা কম থাকে
উত্তর/মতামত--
শোষক পোকা (হপার) এবং এনথ্যাকনোজ রোগ আমের প্রধান শত্রু । মুকুল আসার সময় এই পোকা এবং রোগের আক্রমনে ফুল ঝরে যায়। আমের মুকুল আসলে (ফুল ফোটার পূর্বেই) প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি ইন্ডোফিল মিশিয়ে এবং প্রতি ৫ লিটার পানিতে ১ মিলি কনফিডর মিশিয়ে একবার এবং তারপর আরেকবার গাছের পাতা, মুকুল, ডালপালা ভালভাবে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
আমের ফল ছিদ্রকারী/ভোমড়া পোকার কীড়া আমের গায়ে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খায়। সাধারণত কচি আমের ছিদ্র করে এরা ভিতরে ঢুকে এবং ফল বড় হওয়ার সাথে সাথে ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। তাই বাইরে থেকে আম ভাল মনে হলেও ভিতরে পোকা পাওয়া যায়। এই পোকার আক্রমন থেকে পরিত্রান পেতে আম গাছের মরা ও অপ্রয়োজনীয় শাখা, পরগাছা কেটে ফেলতে হবে। গাছে ফল মার্বেল(ছোট) অবস্থায় প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হারে সাইপার মেথ্রিণ (রিপকর্ড/সিমবুস) ১০ ইসি মিশিয়ে ১০-১৫ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
প্রশ্ন :১০ বছরের আম গাছের যত্ন ও সঠিক পরিমান সারের পরিমান ও প্রয়োগ পদ্ধতি সম্বন্ধে জানালে উপকৃত হতাম
উত্তর/মতামত--
আম গাছের যত্ন :
প্রতিবছর বর্ষার শেষে মরা, রোগাক্রান্ত , শুকনো ডালপালা কেটে ফেলা, পরগাছা দমন করা।
১০ বছরের গাছে সার : গোবর ২৫ কেজি, ইউরিয়া–৭৫০ গ্রাম, টিএসপি-৫০০ গ্রাম, এমওপি-২৫০ গ্রাম, জিপসাম-১০০ গ্রাম, জিন্কসালফেট-১৫ গ্রাম।
উল্লিখিত সার ২ ভাগ করে জৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে প্রথম ভাগ এবং আশ্বিন মাসে দ্বিতীয় ভাগ গাছের গোড়া থেকে ১ মিটার দুরত্বে রিং করে প্রয়োগ করতে হবে এবং প্রয়োজনে হালকা সেচ দিতে হবে।
#এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে অফিস চলাকালীন সময়ে উল্লেখ্য নাম্বারে যোগোযোগ করতে পারেন ---
* ড. মো. হামিম রেজা
মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মোবাইল ০১৭১২৭৬০৮২০/০১৮৭৪৬৯০৭৫৯
* ড. মদন গোপাল সাহা, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ফল বিভাগ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বিএআরআই, গাজীপুর
মোবাইল: ০১৫৫২-৪৫০১৮২
বিঃদ্রঃ লিখাটি কপি করা হয়েছে: http://smartfarmeralaminjuel.blogspot.com থেকে। সমস্ত ক্রেডিট উনাদের। আম চাষী ভাইদের উপকারের স্বার্থে লিখাটি এখানে প্রকাশ করা হলো।