প্রাকৃতিক পরিবেশে আম পাঁকাতে আটছুটির বিকল্প নেই। গ্রামঞ্চালে মানুষের কাছে এটি কেউ আট ছট্টি বা আটছুটি বলে। একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। তবে সর্বত্র এ গাছ দেখা যায়। বিশেষ করে ঝোঁপঝাড়ে বাগানে বেশি দেখা যায়।
বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুইমাস মধু মাস। কারণ এসয় হরেক রকমের পাঁকা ও কাঁচা ফল পাওয়া যায়। এসব ফলের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি মধুর ফল আম।
আগের দিনে গ্রামের মানুষ পলিথিনি মুড়িয়ে, মাটিতে পুঁতে, বদ্ধ ঘরে ধোয়া দিয়ে ফল পাকানোর পর পরিবারের জন্য এবং বাজারে বিক্রয় করত। বর্তমানে অস্বাধু ব্যক্তিরা অর্থ উপার্জনের আশায় রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে আমসহ বিভিন্ন ফল পাকায়।
কিন্তু প্রকৃতিকভাবে আম সহ বিভিন্ন ফল পাকাতে আটছুটির বিকল্প নেই। আটছুটি পাতায় খুব সহজে আম পাকে। মাটিতে কাগজ বা খড় (ধানের শুকনো গাছ) বিছিয়ে দিয়ে ততে আম বিছিয়ে দিয়ে হালকা আটছুটি পাতা বা ডাল ছড়িয়ে দিলে দুএক দিনে আম পেকে যাবে। শুধু তাই নয় পাশাপাশি আমগুলোর রং আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ প্রকৃতিক হওয়ায় মানব দেহের উপর প্রভাব পড়ার সংঙ্কা নেই। গ্রামীণ এই সহজ পদ্ধতি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধু আম নয় কলা, কাঁঠাল পাকাতে আটছুটি বিশেষ কার্যকরী। তবে আম পাকাতে আটছুটি যত সহজে কাজ করে, কাঁঠাল বা কলার ক্ষেত্রে একটু সময় বেশি লাগে।
গ্রামের রাস্তার পাশে কিংবা বাগানে আটছুটি জন্ম নেওয়ায় বাড়তি অর্থ খরচ হয় না। সহজে গাছগুলো কেটে আম পাকাতে ব্যবহার করা যায়। আটছুটি আম পাকানোর পাশাপাশি দাতন (ব্রাশ) হিসাবে ব্যবহার করা হয়। আটছুটির কান্ড ও ডাল শক্ত হওয়ায় ভালোভাবে ব্রাশের প্রয়োজন মেটায়। আটছুটির ফল শিশুদের খেলার উপকরণ হিসাবেও ব্যবহার হয়। এছাড়া আধছুটি গাছের পাতার রস, লিভারের সমস্যা, কাশি ও বাত ব্যাথার উপশম করে। আধছুটি পাতার রস রক্তশূন্যতা ও জন্ডিস প্রতিরোধে কাজ করে।
সাধারণত আটছুটি মূল, চারা ও বীজ থেকে জন্মায়। আটছুটি গাছ ৩/৪ ফুট পর্যন্ত উচু হতে পারে। এ গাছের কান্ডের রং ধূসর। এর পাতার রং সবুজ। পাতা পাতলা, মসৃণ। আটছুটির ফুল হালকা মিষ্টি গন্ধ যুক্ত, ফল সবুজ রঙের। তবে ফল পাকলে গোলাপি রং ধারণ করে। ফল মটর দানার চেয়ে সামান্য বড়। প্রতি থোকায় ২০-৫০ পর্যন্ত ফল থাকে।
মুক্তকোষ উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, আটছুটি এর অপর নাম আশশেওড়া। একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর ইংরেজি নাম orange berry Ges gin berry, বৈজ্ঞানিক নাম এ Glycosmis pentaphylla।
আশশেওড়া
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে< আশশেওড়া (ইংরেজি: orangeberry এবং gin berry, বৈজ্ঞানিক নাম: Glycosmis pentaphylla) একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র এদের দেখা যায়। এরা যেকোনো পরিবেশে সহজে অভিযোজিত হতে পারে সহজেই।
রাস্তার দুই ধার, জমির আইল, বাড়ির পেছনে, পুরনো দালানের ইটের খাঁজে, পুকুর পাড়ে, নদীর ধারে, ঘন ঝোপের আড়ালে; সর্বোপরি প্রায় সকল জায়গাতেই জন্মাতে ও বেড়ে উঠতে পারে এরা।
দৈহিক গঠন
আশশেওড়া ৩-৪ ফুট উঁচু হতে পারে। কিছু কিছু গাছ ৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। কাণ্ডের রং ধূসর। কাণ্ড বেশ শক্ত। কাণ্ডের ১.৫-২ ফুট পর্যন্ত কোনো ডালপালা হয় না বললেই চলে। কাণ্ডের বেড় ১.৫-২.৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। আশশেওড়া মূল, চারা বীজ থেকে জন্মায়। পাতার রং সবুজ। পাতা একপক্ষল, উপবৃত্তাকার। পাতার দৈঘ্য ৩-৪ ইঞ্চি। মাঝ বরাবর প্রস্থ ২-২.৫ ইঞ্চি। পাতা পাতলা, মসৃণ।
ফুল
ফুল খুব ছোট, সবুজাভাব সাদা রঙের। মঞ্জরি বহুপুষ্কপক। ফুলের ব্যাস ৫-৭ মিলিমিটার। প্রতি ফুলে ৫ টা করে পাঁপড়ি থাকে। ফুল হালকা মিষ্টি গণ্ধ যুক্ত, ফল সবুজ রঙের। তবে ফল পাকলে গোলাপি রং ধারণ করে। ফল মটর দানার চেয়ে সামান্য বড়। প্রতি থোকায় ২০-৫০ পর্যন্ত ফল থাকে।
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
---|---|
জগৎ: | Plantae |
(শ্রেণীবিহীন): | Angiosperms |
(শ্রেণীবিহীন): | Eudicots |
(শ্রেণীবিহীন): | Rosids |
বর্গ: | Sapindales |
পরিবার: | Rutaceae |
উপপরিবার: | Aurantioideae |
গোত্র: | Clauseneae |
গণ: | Glycosmis |
প্রজাতি: | G. pentaphylla |
দ্বিপদী নাম | |
Glycosmis pentaphylla (Retz.) DC.[১] |
|
প্রতিশব্দ | |
|
সুত্র: https://barciknews.com/archives/9803
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B6%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%93%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE