নওগাঁয় এবার আম গাছে মুকুলে বিপুল সমারোহ দেখা দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন মুকুল হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন আম বাগন মালিকরা। জেলার বরেন্দ্র এলাকায় এবার আমের বাম্পার ফলন আশা
করছে চাষীরা । জেলা ১১টি উপজেলাসহ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আমের মুকুল পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন আমচাষিরা। মুকুল ঝরারোধে গাছে-গাছে কীটনাশক প্রয়োগ ছাড়া গাছের গোড়ায় সার ও পানি দিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।
নওগাঁ সদর উপজেলার বরুনকান্দি এলাকার আমচাষি মনোয়ার হোসেন জানান, এবারে গতবারের তুলনায় অনেক বেশি আমের মুকুল এসেছে এবং আমের বাম্পার ফলন হওয়ায় তিনি আশা বাদী। তিনি আরোও জানান, তাঁর আমের বাগানে গাছ প্রায় দেড় হাজারের মতো। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও সুস্বাদু আম রয়েছে যেমন-হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, খিরষা ভোগ, গোপাল ভোগ, খিরসাপাত, দুধ আম, গোপালজাম, সূর্যপুরি, ফজলি আমসহ আরোও একাধিক আম।
আর একারনেই আম গাছে মুকুল ধরার আগে দেশের বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আসেন তার বাগানে এবং সেখান থেকে বড় বড় ব্যবসায়ীরা জেলার আমচাষি ও বাগান মালিক দের আগ্রীম টাকা দিয়ে থাকেন।
সাপাহার উপজেলার আম চাষি আমিরুজ্জামান জানান, আমের বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত নওগাঁ। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগের সকল ব্যবস্থা আছে। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীদের আবস্থান সহ দৃষ্টি এখন নওগাঁর দিকে। ব্যবসায়ীক অবস্থা সুদৃঢ় হওযার কারণেই নওগাঁ দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক শহর। কৃষিক্ষেত্রে অধিক সম্ভাবনা থাকার পরও এ আঞ্চলের আমচাষিরা সহজ উপায়ে কৃষি ঋন থেকে বঞ্চিত হওযায় সকল সম্ভবনাই মুখ থুবরে পড়ে রয়েছে। কৃষকরা অতিকষ্টে ঘাম ঝড়িয়ে ফল বা ফসল উৎপাদন করার পরই সেগুলো নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন অঞ্চলের বড় বড় ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা তা বিক্রি করে লাভবান হলেও কৃষকরা সব কিছু উৎপাদন করেও সম্ভবনার চুড়ায় পৌঁছতে পারছেন না। তিনি জানান, বর্তমান মৌসুমে নওগাঁ প্রতিটি আম গাছই মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে এবং চাষিরা শত কষ্টে হলেও তা পরিচযায় ব্যস্ত রয়েছেন।
মুকুল ধরা থেকে আম পাকা পর্যন্ত যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শুধুমাত্র নওগাঁ জেলায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার আম বিক্রির আশা করছেন বাগান মালিকরা জানান।
মহাদেবপুর উপজেলার বাজিদপুর গ্রামের আম বাগান মালিক হাসান আলী জানান, নওগাঁ জেলার সবচেয়ে সুস্বাদু আম হলো হাড়িভাঙ্গা, মিস্রভোগ, খিরসাপাত, ফজলি আমও সুর্যপুরি আম। এ সব আম রাজশাহী বিভাগের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন ঢাকা, চট্রগ্রামে রপ্তানি করা হয়। এসব আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করার জন্য নওগাঁয় আম সংরক্ষনের জন্য একটি সরকারী কোল্ড স্টোরেজ নির্মানের দাবি জানান এলাকাবাসী। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এস এম নুরুজ্জামান মন্ডল জানান, গাছে গাছে যেভাবে আমারে মুকুল দেখা যাচ্ছে আবহাওযার পরিবর্তন না ঘটলে এবার এ জেলায় আমের ভাল ফলন হবে। আমের মুকুল ঝরে পড়ারোধে নিয়মিত গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া সহ ছত্রাক রোধে যে কোন কীটনাশক ¯েপ্র করার আহবান জানিয়েছেন তিনি । এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ আমচাষীদের করনীয় ব্যাপারে নিয়মিত লিফলেট বিতরন অব্যহত রেখেছে ।
চলছে আমের মৌসুম। নিজের শরীরের সুস্থতার দিকে নজর রাখতে এই মৌসুমে বেশি করে আম খেতে পারেন। তরকারি হিসেবে কাঁচা আমের গ্রহণযোগ্যতা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে পাকা আমের কদর।
কাঁচা অথবা পাকা যাই হোক না কেন আম আপনার শরীরকে সুস্থ রোগমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে। জেনে নিন আমের উপকারিতা।
আমের মধ্যে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। স্তন, লিউকেমিয়া, কোলনসহ প্রোস্টেট ক্যান্সারকেও প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে আম।
আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এমন কী পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে। এতে প্রচুর এনজাইমও পাওয়া যায়। ত্বকের যত্নেও আম অনেক উপকারী। আম খেলে লোমের গোড়া পরিষ্কার হয়। ফলে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
আমে রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখের দৃষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে। রাতকানা রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। সেই সাথে রয়েছে মালিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড যা শরীরে ক্ষার ধরে রাখে। আমে রয়েছে প্রচুর এনজাইম যা শরীরের প্রোটিনের অণুগুলো ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। যার ফলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায়।
তাই বেশি করে আম খান। নিজের শরীরকে সুস্থ রাখুন।
বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের ফল আছে। তবে আমের মতো এত সুস্বাদু ফল আর নেই। আমের যেমন ঘ্রাণ, তেমনি মজাদারও বটে। তাই তো বলা হয়, ফলের রাজা আম।
আম দিয়ে বানানো হয় চাটনি, আচার, আমসত্ত্ব, জুস। আমাদের দেশে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষীরশাপাত, কাঁচা মিষ্টি, হিমসাগর, আম্রপালি, খিরসাগর, ফজলি, কিষাণভোগ, মোহনভোগ, মিছরিভোগ, গুঁটি, লখনা, আশ্বিনাসহ আমাদের দেশে কয়েক শ’ প্রজাতির আম রয়েছে।
আম নিয়ে অনেক গল্পকথা রয়েছে। মহাভারতে আম নিয়ে মজার এক গল্প রয়েছে। সীতাকে রাবণ অপহরণ করে নিয়ে যায় লঙ্কায়। বন্দী অবস্থায় সীতাকে ফল খাওয়ানো হয়। নাম না-জানা ফল খেয়ে খুব মজা পায় সীতা। নিজের ভাগের অংশ থেকে সীতা কয়েকটা ফল রাম, লক্ষ্মণ ও হনুমানের জন্য রেখে দেয়। কদিন পর সীতার খোঁজে হনুমান গেল লঙ্কায়। ঠিক ঠিক হাজির হয় বন্দী সীতার কাছে।
সীতা হনুমানকে ওই ফল দিয়ে বলে, এগুলো তোমার, রাম ও লক্ষ্মণের জন্য। তোমরা খেয়ো। হনুমান সেই ফলগুলো থেকে একটা ফল খেয়ে আর লোভ সামলাতে পারেনি। সব ফল একাই খেয়ে ফেলে।
ফিরে যায় সীতার কাছে। বলে, মা, আমি অপরাধ করেছি। ফলগুলো রাম ও লক্ষ্মণকে না দিয়ে একাই খেয়েছি। এখন বলো এই ফলের নাম কী? কোথায় পাওয়া যায়?
সীতা বলে, আমি তো এখানে বন্দী। কোথায় কী আছে আমি বলতে পারব না। এই ফলের কী নাম, তা-ও জানি না। তবে আশপাশেই পাওয়া যাবে হয়তো। খোঁজ করে দেখতে পারো। হনুমান ফলের সন্ধানে বের হয়।
এত স্বাদের ফল, কী নাম এর? খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে যায় আমবাগান। গাছ থেকে একটি আম খেয়ে হনুমান বুঝতে পারল, সীতার দেওয়া ফলের মতো এই ফলেরও একই রকম স্বাদ। আমগাছে উঠে হনুমান ইচ্ছেমতো খেতে থাকে আর আমের আঁটি এদিক-সেদিক ছুড়ে মারতে থাকে। কথায় বলে, হনুমানের ছুড়ে দেওয়া আমের আঁটি থেকেই এই ভারত উপমহাদেশে জন্ম হয়েছে আমগাছের।
আমগাছের ইতিহাস
আমগাছ নিয়ে প্রচলিত গল্পে বলা হয়, ৬৩২-৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দে চীন দেশের পর্যটক হিউয়েন সাং ভারতবর্ষে বেড়াতে আসেন। সেই সময় তিনি ফল হিসেবে আমকে পরিচিত করে তোলেন। এরপর জানা যায় যে মোগল সম্রাট আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রিষ্টাব্দ) তার শাসনামলে ভারতের লাখবাগের দারভাঙা এলাকায় প্রায় এক লাখ আমগাছ রোপণ করেছিলেন। এটিকে বলা হয় ভারতীয় উপমহাদেশে সবচেয়ে বড় আমবাগান। মূলত মোঘল সম্রাটদের আমলে ভারত উপমহাদেশে বিভিন্ন জাতের আমের উদ্ভাবন হয়েছে।
উন্নত জাতের আম
বাংলাদেশের সব অঞ্চলে আমের চাষ হলেও উন্নত জাতের আম হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ ও দিনাজপুর এলাকায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট বাজারকে আমবাজারের রাজধানী বলা হয়। এ ছাড়া শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, আলীনগর, রহনপুর এলাকায় আমের বড় বাজার বসে। এখান থেকে আম ব্যবসায়ীরা আম কিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করেন।
আমের পুষ্টিগুণ
আমের অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। উচ্চমাত্রার চিনি, ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে এই ফলে। আমে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়। আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। আঁশ-জাতীয় ফল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, মুখের ব্রণ প্রতিরোধ করে। চিকিৎসকদের মতে, আমে খনিজ লবণের উপস্থিতিও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। দাঁত, নখ, চুল, মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী ভূমিকা পালন করে। বুদ্ধি ও শরীরের শক্তি বাড়ানোর জন্য আম ভীষণ জরুরি ফল।
আম আমাদের দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় ফল। এর সাথে অন্য কোন ফলের তুলনা হয় না। কারণ উৎকৃষ্ট জাতের আম স্বাদে, পুষ্টিতে, সুবাসে, তৃপ্তিতে এবং দেখতে খুবই আকর্ষণীয়। আম এমন একটি ফল যা কাঁচা পাকা সর্বাবস্থায় খাওয়া যায়। ঝরে পড়া ছোট আম আমাদের বাচ্চাদের কাছে যে কত প্রিয় তা ছোটরাই ভালো জানে। ফলটি দেশে বিদেশে সবার কাছে সমানভাবে সমাদৃত। আম পছন্দ করে না এমন লোক হয়ত খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই অনেকে আমকে ফলের রাজা বলে থাকেন।
আমের বর্তমান অবস্থাঃ
আমাদের প্রায় ৫০,০০০ হেক্টর জমিতে আমের গাছ বা বাগান রয়েছে। বর্তমানে মোট আম উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১,১০,০০০ টন। মাথাপিছু আম উৎপাদনের পারিমাণ দেড় কেজির মতো। যা অনেক দেশের তুলনায় আমাদের মাথাপিছু আমের উৎপাদন খুবই কম। প্রতিবেশি ভারতে মাথাপিছু উৎপাদন ১২ কেজি, পকিস্তানে ৭ কেজি এবং ফিলিপাইনে ১৩ কেজি। ষাটের দশকে এদেশে মাথাপিছু আমের উৎপাদন ছিল ৫ কেজির মতো। পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, একজন সুস্থ সবল স্বাভাবিক লোকের জন্য প্রতিদিন ৮৫ গ্রাম ফল খাওয়া প্রয়োজন অথচ এদেশে আমরা গড়ে ৪০ গ্রাম ফল খেয়ে থাকি যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। সুতরাং আমাদের পুষ্টিমান বজায় রাখার জন্য অন্যান্য ফলের সাথে আমের উৎপাদন বাড়াতে হবে।
আম চাষের মুনফাঃ
দানাশস্য যেমন ধান,গম ইত্যাদি চাষাবাদের চেয়ে আম চাষে ৫/৭ গুন বেশি লাভ। দানাশস্যে উৎপাদন খরচ অত্যন্ত বেশি। সে সাথে শ্রমিক সংকট সার, বালাইনাশক পেতে সমস্যার সৃষ্টি হয়। আমের উৎপাদন খরচ একেবারেই কম অপরদিকে নিট মুনাফার পরিমাণ অনেক বেশি। অনেক এলাকার আম বাগান মালিকগণ ৩/৪ বছরের জন্য আম বাগান বিক্রয় করে থাকেন, এসব ক্ষেত্রে মালিকের কোনো বিনিযোগ করতে হয় না এবং কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় না। আমের রোগাক্রান্ত ও ছাঁটাইকৃত ডালপালা এবং ঝরে পড়া পাতা সংগ্রহ করে জ্বালানির কাজে ব্যবহার করা যায়। উঁচু জমিতে আম বাগান স্থাপন করলে ৮/১০ বছর পর্যন্ত আম বাগানে ধান/ গম/ শাকসবজির চাষ করা সম্ভব। তাই আম বাগান স্থাপনের প্রথমদিকেও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। উপরন্তু বাগান স্থাপনের পঞ্চম বছর থেকেই আম গাছ থেকে মুনাফা আসা শুরু হয়। একটি আম বাগান স্থাপন করলে দু‘ভাবে মুনাফা পাওয়া যায়। এক, আম ফল ও ছাঁটাইকৃত ডালপালা বিক্রয় থেকে প্রতি বছর আয়। দুই, ফলন শেষে আম গাছ বিক্রয় থেকে আয়। সুতরাং আম চাষ করলে লাভের পরিমাণ যে অনেক বেশি একথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
খাদ্য হিসেবে আমঃ
আম এমন একটি ফল যা কচি অবস্থা থেকে খাওয়া যায়। কাঁচা, পাকা উভয় আমই সরাসরি খাওয়া যায়। উপরন্তু আম দিয়ে নানা রকম মুখরোচক ও উৎপাদেয় খাদ্য তৈরি করা সম্ভব। কাঁচা আম থেকে বহুবিধ খারার যেমন আচার, আমচুনা, চাটনি, মোরব্বা আবার পাকা আম দিয়ে জুস, জেলি, স্কোয়াশ, সিরাপ, টফি আমসত্ব ইত্যাদি খাদ্য তৈরি করা যায়। মুড়ি, খৈ ইত্যাদির সাথে পাকা আম খেতে বেশ সুস্বাদু। বেশি পরিমাণ আম খেলে হজমে অসুবিধা হয় না। কাঁচা আম দিয়ে তৈরি টক তরকারি ভাতের সাথে খেতে খুবই মজাদার। আম ছাড়া অন্য কোনো ফল থেকে এত প্রকার খাবার তৈরি করা সম্ভব নয়। আমের আঁটির ভিতরের শাঁসও গ্রাম এলাকায় অনেকে খেয়ে থাকেন। আম পাতা বা আমের খোসা গরু ছাগলের প্রিয় খাদ্য।
আমের ওষুধি গুণঃ
আম একটি ফল হলেও এর অনেক ওষুধি গুন রয়েছে। আয়ুবেদীয় ও ইউনানী পদ্ধতির চিকিৎসায় পাকা আমকে হজমকারক এবং বলকারক খাদ্যরূপে অভিহিত করা হয়। কাঁচা ও পাকা উভয় প্রকার আমে ভিটামিন‘এ’ থাকায় চোখের জন্য বেশ উপকারি। আম খেলে যকৃত ভালো থাকে। আম পাতা পোড়ানো ধোঁয়া হিক্কা রোগ ও গলার প্রদাহকে উপশম করে। আমের কচি পাতা চিবিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত ও মাড়ি শক্ত হয়। আম পাতা গোড়া ছাই আগুনে পোড়া ক্ষতে প্রয়োগ করলে তা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আম গাছের বাকলের রস বা কচি পাতার রস সাধারণ আমাশায় বা রক্ত আমশয়ে বেশ উপকারি। আম বীজের শাঁসের ক্লথ আদা সহকারে সেবন করলে উদরাময়ে উপকার পাওয়া যায়।
আম চাষের সম্ভবনাঃ
আমাদের দেশে মাথাপ্রতি চাষাযোগ্য জমির পরিমাণ খুবই কম। নতুন নতুন ঘর বাড়ি ও রাস্তা ঘাট তৈরি, কলকারখানা স্থাপন এবং নদী ভাংগনে অনেক চাষযোগ্য জমি প্রতি বছর কমে যাচ্ছে। তাই ফসলী জমিতে আম বাগান স্থাপনের সুযোগ কমে যাচ্ছে। চট্রগ্রাম, পার্বত্য চট্রগ্রাম, সিলেটের পাহাড়ের ঢালে আম বাগান স্থাপনের এাখনও সুযোগ রয়েছে। রাজশাহী বিভাগের বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচের সুবদ্যবস্থা না থাকায় চাষাবাদে বিঘœ ঘটে। সেখানকার আম বাগান সম্প্রসারণ করা যেতে পারে।
শহরাঞ্চলে বাড়ির আশেপাশে আম গাছ লাগানোর মত খোলা জায়গা নেই। তবে বাড়ির ছাদে ২/৪টি আম গাছ লাগানো তেমন কোনো কঠিন কাজ নয়।এতে পরিবারের আমের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব। ড্রাম, সিমেন্টের তৈরি টব বা ইটের তৈরি বড় টব বানিয়ে গাছ লাগানো সম্ভব। যে সমস্ত জাতের বৃদ্ধি কম যেমন বারি আম-৩, বারমাসি, লতা বোম্বাই ইত্যাদির চাষ করা যায়। আম গাছ লাগানোর ইচ্ছা থাকা সত্বেও ভালো চারার অভাবে অনেকে আম গাছ লাগাতে পারে না। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকায় উন্নত জাতের আমের চারা সরবরাহের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমাদের দেশের উল্লেখযোগ্য আম গাছ আঁটি থেকে উৎপন্ন। এদের ফলনও অত্যন্ত কম। উপরন্তু আম চাষে আমাদের অনভিজ্ঞতা ও অবহেলার কারণে হেক্টরপ্রতি ফলন তুলনামূলকভাবে অনেক কম। আঁটির গাছগুলোকে টপওয়াকিং-এর মাধ্যমে উন্নতজাতে পরিবর্তনের ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে ভালো জাতের আমের উৎপাদন বাড়াতে হবে। জনগণকে এ ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষে সরকার ও জনগণ উভয়কে এগিয়ে আসতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং সুচিন্তিত কর্মপদ্ধতি নিয়ে অগ্রসর হতে পারলে অবশ্যই দেশে আম উৎপাদন বাড়বে এবং অতিরিক্ত আম বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
আমের গবেষণাঃ
আমাদের দেশে আমের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় সরকার ১৯৮৫ সনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আম গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেন। আম একটি দীর্ঘ মেয়াদি ফসল হওয়ায় গবেষণার ফলাফল পেতে দীর্ঘ সমায়ের প্রয়োজন পড়ে। আম গবেষাণা কেন্দ্রে বিভিন্ন রকম সমস্যা থাকলেও বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত চারটি আমের জাত (বারি আম-১, বারি আম-২, বারিআম-৩ এবং বারি আম-৪) মুক্তায়ন করা সম্ভব রয়েছে। জাতগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এগুলো সুমিস্ট এবং প্রতি বছর নিয়মিত ফল দেয়। এদের মধ্যে দু‘টি জাত পাকার সময় উজ্জ্বল হলুদ রঙ ধারণ করে। এ ছাড়াও এ কেন্দ্র থেকে রোগ ও পোকা দমন, জাত উন্নযন, সার ও সেচ প্রদান ইত্যাদি বিষয়ের ওপর অনেক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ ও সম্প্রসারণ কাজের ফলে বৃহত্তর রাজশাহী জেলার আম চাষি ভাইয়েরা এখন অনেক- বেশি সজাগ। দেশের অন্যান্য এলাকার আম চাষি ভাইয়েরা আম চাষে যত্নশীল হলে শুধুমাত্র সাধারণ পরিচর্যা গ্রহণের মাধ্যমে আমের উৎপাদন সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করা সম্ভব। আম গবেষণা থেকে পরিপূর্ণ ফলাফল পেতে হলে গবেষণা কেন্দ্রটির উন্নয়ন তথা আরো বিজ্ঞানী নিয়োগ, গবেষণাগার উন্নয়ন, বিজ্ঞানীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও আরো বাজেট বরাদ্দ করা প্রয়োজন।
খাদ্য ছাড়া আমরা বাচি না। কিন্তূ এ খাদ্য এখন মরণের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। দেশে নিরাপদ খাদ্য বলতে কিছু নেই। সবই ভেজালে সয়লাব। আর ভেজাল মানেই তো বিষ।
চারদিকে ভেজালের জয়জয়কার : শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র ভেজালের দৌরান্ত । এক নির্ভরযোগ্য তথ্য থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের প্রায় ৯৬ শতাংশ খাদ্য সামগ্রী বিষাক্ত। তাহলে আমরা কি নিত্য বিষ খাচ্ছি? ভেজাল বিরোধী অভিযানে জানা গেছে চাল,ডাল, মাছ, গোশত, ভোজ্যতেল, ঘি, চিনি, লবন, দুধ, দই, মিষ্টি, আইসক্রিম, চকোলেট, ফ্রুট জুস, কোল্ড ড্রিংস, জেলি, শিশু খাদ্য, গুড়ো দুধ, মসলা, ফল ফলাদি সহ শতাধিক খাদ্য সামগ্রীতে ভেজাল বিদ্যমান।
বেশী দিন আগের কথা নয়- এ সোনার দেশটির মানুষ খেতো নির্ভেজাল সোনার খাবার। ঠেকি ছাটা চালের ভাত, যাতায় ভাঙা ডাল, পালের গাভির দুধ, হাতে ভাড়া মুড়ি, হাতে বানানো ঘি, ঘরে পাতা দই, ঘানিতে ভাঙানো সর্ষে তেল, মিঠা পানির সুস্বাদু দেশী মাছ, চাক ভাঙা মধু, ক্ষেতের টাটকা সবজী, গাছ পাকা ফল আরও কত মজাদার নির্ভেজাল খাবার। মেহমান আপ্যায়ন করা হতো ডাবের পানি বা লেবুর শরবত দিয়ে। এখন আর সেদিন নেই। বর্তমানে চটকদার বিজ্ঞাপনে লেখা থাকে খাটি গাওয়া ঘি, খাটি সরর্ষে তেল, খাটি দুধ, খাটি মধু। আগে খাটি লেখার প্রয়োজন হতো না। কারণ মানুষগুলো ছিল খাটি, জিনিষগুলোও ছিল খাটি। এরই মধ্যে বিজ্ঞান প্রযুক্তি অনেকদুর এগিয়ে গেছে। সে সুবাদে এক শ্রেণীর অসাধু ও লোভী ব্যবসায়ী দৌরান্তে আল্লাহ প্রদত্ত খাটি জিনিষগুলো ভেজালে সয়লাব হয়ে গেছে। খাটির নামে চলছে সবই খাটি। এভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছে ১৬ কোটি মানুষ।
ভাত বাঙালির প্রাণ। আমরা ভোতো বাঙালি। ডাল-ভাতে বাঙালি। মাছ- ভাতে বাঙালি। সাদা চালে রং মাখিয়ে লাল বিরুই বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। লাল রং মিশিয়ে বানানো হয় লাল আটা, ডালে রং মিশিয়ে চকচকে করে ভোক্তাদের আকৃষ্ট করা হয়। মাছ, গোশত তরতাজা রাখার জন্য মিশানো হচ্ছে বিষাক্ত ফরমালিন যা লাশের পচন রোধে ব্যবহার করা হয়। আরও বিপদজনক হল এখন বরফের সঙ্গেই ফরমালিন মিশিয়ে মাছ তাজা রাখা হচ্ছে। এ জীবন হন্তাকর ফরমালিন এখন ব্যাপক হারে ব্যাবহার করা হচ্ছে মাছ ফল ও দুধ তাজা রাখার জন্য। ফল বিষে ভরা। তাই অনেকেই ফল খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এখন ফল পচতে দেখা যায় না।খাবারের সংগে ফরমালিন মানবদেহে প্রবেশ করলে ধীরে ধীরে কিডনী, লিভার, হৃদপিন্ড, ফুসফুস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে পেট ব্যথা, হাইপারটেনশন, শ্বাসকষ্ট। ফরমালিন বেশী মাত্রায় শরীরে ঢুকলে রক্তে প্রোটিন জমাট বেঁধে যায় যা শরীরের কোন কাজে লাগে না। ফল বিশেষ করে অপুষ্ট ফল পাকানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ক্যালসিয়াম কার্বাইড। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাত্রাতিরিক্ত এসব ক্যামিক্যাল ব্যবহারে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকি ক্যান্সার বেড়ে যাচ্ছে।
পানির অপর নাম জীবন। আমাদের মতো গরিব দেশে পানি বিক্রি হবে তা কিছুদিন আগেও কল্পনাও করা যায়নি । পরীক্ষায় দামি বোতলজাত পানিতেও জীবানু, ক্ষতিকর লিড, ব্যাডমিয়াম ও জিংক পাওয়া গেছে। তাই এসব দামি দামি পানি খাওয়াও এখন স্বাস্থ্যের জন ঝুকিপূর্ণ। ইউরিয়া সার ফসলের খাদ্য। কিন্তূ আজকাল মুড়ি ভাজা হয় ইউরিয়া দিয়ে। ইদানিং আবার হাইডোজের মতো বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে মুড়ি ফোলানো ও ধবধবে সাদা করা হচ্ছে। সর্ষে তেলের মধ্যে সাবান তৈরীর কাষ্টার তেল ও ঝালালো বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশিয়ে খাঁটি সর্ষে তেল বলে দেদারছে বিক্রি করা হচ্ছে।
পাটালি গুড়ের পায়েস জামাই ভোলানো খাবার । চিটাগুড়, চুনের সংগে সালফেট, হাইডোজ মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে আকর্ষনীয় পাটালী গুড়। এসব কেমিকেলের দরুন লিভার কিডনী ও অন্যান্য দুরারোগ্য ব্যাধি দেখা দিচ্ছে।
বিস্কুট, কেক, লোভনীয় আইসক্রিম, চকোলেট, তিলের খাজা, সেমাই, আচার, নুডুলস, জ্যাম জেলী, দই, মিষ্টি ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয় টেক্সটাইল (কাপড়), লেদার (চামড়া) ও কাঠ শিল্পের রং যা মানুষের শরীরের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। চমমচে রাখার জন্য গাড়ির পোড়া মবিল দিয়ে ভাজা হয় প্যাটিস, চানাচুর, নুডুলস, বিস্কুট, সমুচা ইত্যাদি। পামওয়েল, হুইল পাওডার, সাবান, গরু খাসির চর্বি, মিষ্টি কুমড়া বা গাজর পিষে বিষাক্ত ক্যামিক্যাল ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরী করা হয় ঘি। মসলায় মিশানো হচ্ছে কাঠের গুড়ো ও ইটের গুড়ো। শুটকিতে মিশানো হয় মারাত্বক কীটনাশক। মানুষ খাবে কি? শাকসবজীতেও মিশানো হয় বালাইনাশক বিষ। দুধ আদর্শ খাদ্য। এখন অভিনব কায়দায় তৈরী করা হচ্ছে কৃত্রিম দুধ যা শুনলে পিলে চমকে উঠার মতো। দুধের ছানার সংগে বিষাক্ত পারক্সাইড, খাওয়ার সোডা, চর্বি, রং ও ক্যামিকেল মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে কৃত্রিম তরল দুধ। এ দুধ শিশুসহ অন্যরা খেলে মারাত্বক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক।
আজকাল কোল্ড ড্রিংস কিশোরদের কাছে ফ্যাশন। আর যুবকদের কাছে নেশা। সাময়িক আরাম ও আনন্দ পেতে বিশেষ করে প্রচন্ড গরমে ফ্রিজের ঠান্ডা সেভেন আপ, কোক, পেপসি, টাইগার অনেকের কাছে লোভনীয় পানীয়। কিন্তু তারা জানে না এসব কোমল পানীয় শরীরের জন্য কত ক্ষতিকর। এসবের মধ্যে থাকে চিনি, স্যাকারিন, ক্যাফেইন, এসপারটেম, ফ্লেভার, রং, ক্যামিকেল ও কৃত্রিম প্রিজারভেটিভ। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্যাফেইন হার্ট ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য ভীষন ক্ষতিকর। ১ গ্লাস ঠান্ডা পানীয়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ৩২ গ্লাস পানি খেতে হয়। বাজারে ফ্রুট জুস, ম্যাংগো জুস, ফ্রুটো ইত্যাদিতে নামে মাত্র ফলের রস থাকে। অতিরিক্ত কোল্ড ড্রিংস ও ফ্রুট জুস পানে অভ্যস্ত যুবকরাও ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছেন না।
জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ধরা পড়ছে ভেজাল। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদকে জানান ভেজাল ওষুধ উৎপাদনের জন্য ১৬ টি কোম্পানীর লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এ থেকে সহজেই আঁচ করা যায় যে ওষুধও বিষমুক্ত নয়।
ভেজালের ভয়ংকর রূপ : ভেজাল জাতির জন্য অভিশাপ। ভেজাল তথা বিষাক্ত খাদ্য গোটা জাতিকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভেজাল ও নিম্ন মানের খাবার খেয়ে দেশের মানুষ বিভিন্ন মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ভেজাল দুধ দিয়ে শিশু খাদ্য তৈরী হওয়ায় শিশুরা বিষক্রিয়ায় বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গর্ভবতী মহিলারা বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিচ্ছে। প্রতিবন্ধী, হাবাগোবা ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হচ্ছে দ্বিগুন হারে। গোটা জাতি মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিপর্যয়ের সন্মুখীন।
পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের পরীক্ষকদের মতে, নকল ট্যাংক ও চকলেট খেয়ে শিশু ও বয়স্ক যে কোন মানুষের কিডনী, লিভার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
• মাত্রাতিরিক্ত ভেজাল ও বিষাক্ত খাবার খেতে খেতে কিডনী লিভার, ফুসফুস, চোখের দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। বেড়ে যাচ্ছে বদহজম, পেটের পীড়া, ডায়রিয়া, গ্যাষ্টিক, আলসার, হৃদরোগ, জন্ডিস, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ এমনকি ক্যান্সার।
• দেশে প্রতি বছর নতুন করে ২ লাখের বেশী লোক ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হচ্ছে।
• কিডনী রোগীর সংখ্যা এখন প্রায় ১ লাখ বিশ হাজার। ক্যান্সার রোগের সংখ্যা আরও বেশী ভেজালের কারনে এসব মৃত্যুঘাতী রোগ হু হু করে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।
ভেজাল চিনুন সুস্হ থাকুন : দেশের প্রতিটি খাদ্যই ভেজালে ভর্তি। ভেজালে অন্তরালে থাকে বিষ। প্রতিনিয়ত আমরা বিষ উদরস্থ করছি। আর আক্রান্ত হচ্ছি নানা রোগ ব্যাধিতে। ভেজাল নিরব ঘাতক। ভেজালের বিষক্রিয়া তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তাই এ নীরব মৃত্যু নিয়ে কারও কোন মাথা ব্যাথা নেই। দিনাজপুর ও ঠাকুরগায়ে বিষাক্ত লিচু খেয়ে ১৪ টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আরও করুণ হলো যে ব্যক্তি বিষ স্প্রে করেছিল তার ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে।
এ জন্য ভেজাল চেনা জরুরীর চেয়েও জরুরী হয়ে পড়েছে। এ প্রসংগে ভেজাল খাদ্য চেনার কিছু টিপস দেওয়া হলো।
১. ফরমালিন দেয়া মাছ চেনার উপায় : রুই মাছে ফরমালিনের ভয় বেশি। পানিতে ফরমালিন মিশিয়ে মাছ ডুবানো হয় বা বরফে ফরমালিন মিশিয়ে মাছ রাখা হয়। কখনও বা ইনজেকশনের শিরিঞ্জ দিয়ে নাড়ি ভুড়িতে ফরমালিন ডুবানো হয়। রান্না করার পরও বিষাক্ততা কমে না।
• ফরমালিন দেওয়া মাছের চোখ ভিতরে ঢুকে যায়।
• মাছ ফ্যাকাশে দেখায়, শরীরে পিচ্ছিল পদার্থ থাকে না।
• ফুলকা কালচে বর্ণের হয়।
• মাছের শরীর শুকনো থাকে।
• মৃত্যু ভয়ে ফরমালিনযুক্ত মাছের উপর মাছি বসে না।
২. রং দেয়া মাছ চেনার উপায় : পচা বা আধাপচা মাছে কাপড় ও কাগজ শিল্পে ব্যবহৃত ক্রাইসোডান, অরামিন জাতীয় রঙ মিশানো হচ্ছে,
• ভাল করে খেয়াল করলে মাছের মুখ, কানকা, চোখ, বুকের পাখনা ও পেটের দিকে চকচকে রঙিন দেখতে পাবেন, এসব ক্ষতিকর রং রান্না করলেও নষ্ট হয় না যা কিডনী, লিভার এর জন্য ক্ষতিকর। তাই সাবধানে মাছ চিনে কিনুন।
৩. ভেজাল গোশত চেনার উপায় : ফরমালিন মেশানো গোশত শক্ত হয় ও শুকনা দেখায়। মাছিও বসে না।
৪. ভেজাল ফল চেনার উপায় : ফলের রাজা আম, লিচু, কলা, পেপে ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যাবহার করলে পাকার পর নিজস্ব স্বাভাবিক বা প্রাকৃতির রং হারিয়ে ফেলে। আশ্বিনা আমের স্বাভাবিক রং নীল-সবুজ। কিন্তু বাজারে দেখা যায় আশ্বিনা আমও হলদে বা কালচে হয়ে গেছে। ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়ে এ আম কিনছে সর্বাগ্রে। ফলের চামড়া অস্বাভাবিক টকটকে লাল/হলদে/গোলাপি নান্দনিক রং ও আনারসের চামড়া পোড়া পোড়া বা লালচে দেখলে বুঝবেন ভেজাল আছে।
• ঝুড়িতে সবগুলো ফল সমরুপ অথবা একই রকম হলে ভেজালের লক্ষণ। স্বাভাবিক অবস্থায় একটা ফল থেকে অন্যটা এমনকি একই ফলের দেহের রং এর মধ্যে কিছুটা হলেও পার্থক্য থাকে।
• অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহারে ফলের শাঁস শক্ত হয়। খেতে কখনও পানসে আবার কখনও তেতো বা বিস্বাদ লাগে। ফল চাষ করা উত্তম ও নিরাপদ। কলমের চারা গাছে দু’এক বছর পরই প্রচুর ফল ধরতে থাকে। টবেও চাষ করা যায়। সম্ভব হলে ফলের চাষ করে খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ
৫. ভেজাল চাল, আটা, ডাল চেনার উপায় : রঙিন চালে একটু পানি বা থুতু দিয়ে আঙ্গুলে ঘষা দিন, সাদা রঙের হয়ে গেলে বুজবেন রং দেওয়া হয়েছে। লালচে আটা না কিনে সাদা আটা কিনুন। লাল আটা আপনার কাছে প্রিয় হলে লাল গম কিনে ভাঙ্গিয়ে নিন। অস্বাভাবিক কালচে মসুর ডাল না কেনায় ভাল। অতি উজ্জল চকচকে মুগ ও ছেসারি ডাল কিনবেন না। স্বাভাবিক রং পরখ করে কিনুন।
ভেজাল মধু চেনার উপায় : গ্লাসে পানি ভরে কয়েক ফোটা মধু ঢেলে একটু অপেক্ষা করুন। পানির সংগে মিশে গেলে বোঝা যাবে এটা ভেজাল মধু। আর গদি মধুর ফোঁটা গ্লাসের তলায় চলে যায় তাহলে বুঝবেন এ মধু খাটি ।
• ধাতব পাত্রে ছোট ছিদ্র দিয়ে মধু ঢালুন। যদি আকাবাকা হয়ে পড়ে তাহলে মধু খাটি।
• কয়েক ফোটা মধু সাদা কাপড়ে রেখে তা ঘসে ধুয়ে ফেলুন। যদি কোন দাগ না থাকে তাহলে সে মধু খাটি।
খালি চোখে ফরমালিন পরীক্ষা করাটা একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। সিটি কর্পোরেশনের কাছেও পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি নেই যা তারা সহজে ফরমালিন বা কর্বাইড পরীক্ষা করা যায়।
ফরমালডিহাইডের পরীক্ষার জন্য কিছু কমপ্লেক্স কেমিক্যাল-এর প্রয়োজন। এগুলো হলো-
১. ফরমালডিহাইডের দ্রবণের সঙ্গে ২ সিসি ফিনাইল হাইড্রোজাইন হাইড্রোকোরাইড (১%) এবং ১ সিসি ৫% পটাসিয়াম ফেরিসায়ানাড দিয়ে তারপর ৫ সিসি ঘনীভূত হাইড্রোকোরিক অ্যাসিড মেশালে পুরো দ্রবণ গাঢ় গোলাপী রঙ হয়ে থাকে। একে বলা হয় সেরিভারস্ টেস্ট।
২. ফরমালডিহাইডের হালকা দ্রবণ যেমন মাছে ফরমালিন দেয়া আছে তা ধুয়ে তার পানিতে ১ সিসি সোডিয়াম নাইট্রোপ্রোসাইড মেশালে গাঢ় সবুজ নীল রঙ ধারণ করে। এতে ফরমালডিহাইড তথা ফরমালিনের অস্তিত্ব প্রমাণ করে। এ সমস্ত কেমিক্যাল এবং রি-এজেন্ট পাওয়া খুব কঠিন এবং দামও অনেক বেশী।
৩. সন্দেহযুক্ত ফরমালিন মাছ ধুয়ে পানিতে ৩% (ভলিউম) হাইড্রোজেন পারক্সাইড মেশালে ফরমালডিহাইড অক্সিডাইজড হয়ে ফরমিক অ্যাসিডে রূপান্তর হয়। ফরমিক এসিড প্রমাণের জন্য সে পানিতে অল্প মারকিউরিক কোরাইড মেশালে সাদা রঙের তলানি পড়বে। তাতেই প্রমাণ হবে ফরমিক অ্যাসিড তথা ফরমালডিহাইড তথা ফরমালিন।
রাজশাহীর গাছে গাছে আমের সমারোহ : চাষীদের মুখে হাসি
Written by Super Admin
প্রবাদে আছে আমে ধান, আর তেঁতুলে বান। বলা হয়ে থাকে যে বছর ধান হয়; সেবছর আমও ভালো হয়। ধানের বাম্পার ফলনের সঙ্গে সঙ্গে এবার আমেরও বাম্পার ফলন হচ্ছে। ফলে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ আম চাষ যেসব এলাকায় বেশি হয় সে এলাকার চাষিদের মধ্যে বিরাজ করছে আনন্দ। এরইমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে আম। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে আমকেই সবেচেয়ে সুস্বাদু এবং লোভনীয় ফল বলে মনে করা হয়। আমের কদর প্রাচ্য-পাশ্চত্যের দেশগুলিতেও সমান। আমের অন ইয়ার এবং অফ ইয়ার নামে দুটি শব্দ ব্যাপকভাবে চালু আছে। এবার আমের অন ইয়ার। যে বছর ফলন ভালো হয় তাকে অন ইয়ার বলে এবং যে বছর ফলন ততটা ভালো হয় না তাকে অফ ইয়ার বলা হয়ে থাকে। যদিও কৃষি বিজ্ঞানীরা এ ধারণাকে বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, আমের অফ ইয়ার অন ইয়ার বলে কিছু নেই। সবটাই নির্ভর করে প্রকৃতির উপর। আম একটি অর্থকরী কৃষিপণ্য। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কমবেশি আম উৎপাদিত হয়। তবে পরিমাণ ও মানের দিক থেকে এগিয়ে আছে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। প্রকৃতি ও জলবায়ুগত কারণে এই অঞ্চলে উৎকৃষ্টজাতের আমের ফলন হয়। বিশেষ করে রাজশাহী অঞ্চলের আমের খ্যাতি দেশজোড়া। শুধু তাই নয়, আমকে কেন্দ্র পর)
করে আবর্তিত হয় এই অঞ্চলের মানুষের জীবনজীবিকা। বিশেষ করে আমের মৌসুমে চাঙ্গা হয়ে উঠে রাজশাহী অঞ্চলের অর্থনীতি। মৌসুমী কর্মসংস্থান হয় লক্ষাধিক মানুষের। আম মৌসুমে গ্রাম-জনপদ রূপ নেয় উৎসবের। সংশ্লিষ্টরা জানান, অনুকূল আবহাওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই এবার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের আমবাগানগুলি ব্যাপকভাবে মুকুলিত হয়। ছোটখাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগে কিছু মুকুল নষ্ট হলেও এখন পর্যন্ত গাছে যে পরিমাণ আম অবশিষ্ট আছে, তাতে আমের বাম্পার ফলন হচ্ছে। চাষিরা আগের চেয়ে বেশি সচেতন বলে মুকুল রক্ষায় তাদের কার্যকরী পরিচর্যা আমের ভাল ফল দিচ্ছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে ৪৮ হাজার ৩১৩ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। যা থেকে ৫ লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এবার হেক্টর প্রতি আমের ফলন ধরা হয়েছে ১৩ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর চাষিরা প্রতি হেক্টরে আমের ফলন পেয়েছিল ৮ হাজার মেট্রিক টন। সূত্র মতে, রাজশাহী অঞ্চলে মোট আম বাগানের প্রায় অর্ধেকই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এ জেলায় ২৪ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এই পরিমাণ বাগান থেকে এ বছর ২ লাখ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে রাজশাহী জেলায় ৮ হাজার ৬৬৭ হেক্টর বাগান থেকে উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯০ হাজার ৩৫০ মেট্রিকটন। অন্যদিকে নওগাঁ জেলায় ৪ হাজার ৮২৫ হেক্টর বাগানে ৭৭ হাজার ২০০ মেট্রিকটন, নাটোর জেলায় ৩ হাজার ৭০০ হেক্টরে ৪২ হাজার ৮৪৬ মেট্রিকটন, বগুড়ায় ৩ হাজার ৪৭০ হেক্টরে ৩১ হাজার ২৩০ টন, জয়পুরহাটে ৬২২ হেক্টর বাগানে ৪ হাজার ১৩৬ টন, পাবনা জেলায় ১ হাজার ৯০৪ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার ৩৭৮ টন এবং সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমির আম বাগানে ২০ হাজার সাড়ে ৫০০ টন আম হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলের কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমের ফলন হয়। এসব জেলার আমও জাতীয় উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক অসীম কুমার পাল জানান, এবার রাজশাহী অঞ্চলে আমের ফলন ভালো হবে। কয়েকদিন পরেই রাজশাহী অঞ্চলের আম বাজারে আসবে। আমকেন্দ্রিক বাণিজ্যে চাঙ্গা হয়ে উঠবে এই অঞ্চলের অর্থনীতি। তিনি আরও বলেন, এবার মৌসুমের শুরু থেকেই মাঝেমাঝে বৃষ্টিপাত হওয়ায় আম পুষ্ট হয়েছে। ফলে আমের স্বাদও ভালো হবে। পুষ্ট হওয়ায় আমের মোট ফলনও বাড়বে। সেইসঙ্গে আম নষ্ট হবে কম, পুষ্টিগুণও বেশি পাবে ভোক্তা। প্রায় আড়াইশ জাতের আম উৎপন্ন হয় রাজশাহী অঞ্চলে। এগুলোর বেশিরভাগই দেশী বা স্থানীয় জাতের। তবে কিছু কিছু হাইব্রিড জাতের আমও এখন স্থান করে নিয়েছে রাজশাহী অঞ্চলের বাগানগুলিতে। তবে ফজলিকে আমের রাজা বলা হলেও স্থানীয় জাতের ল্যাংড়া, গোপালভোগ ও ক্ষিরসাপাত আম স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। এসব আমের দামও বেশি। এসব জাতের আম স্বল্পসময়ে বাজারে আসে আবার দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। এছাড়াও বোম্বাই, হিমসাগর, ফজলি, আম্রপালি, আশ্বিনা, ক্ষুদি, বৃন্দাবনী, গুটি, লক্ষণভোগ, কালীভোগ, তোতাপরী, দুধসর, লখনা ও মোহনভোগ জাতের আম বেশি হয় এই অঞ্চলে। রাজশাহী অঞ্চলের গাছে গাছে বাহারি জাতের আম এখন দেশের মানুষের রসনা মেটাতে প্রস্তুত হচ্ছে। আমচাষিদের মনে এখনই উঁকি দিচ্ছে মুনাফার আগাম বার্তা। কয়েকদিন পরেই রাজশাহী অঞ্চলের মোকামগুলি আমে সয়লাব হয়ে যাবে। আমযজ্ঞে মেতে উঠবে হাজার হাজার মানুষ। চাষিরা বাগান থেকে আম নামিয়ে আনবেন মোকামে। সেখান থেকে ব্যাপারিরা কিনে বিভিন্ন যানবাহনে পাঠাবেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে মে মাসের শেষ দিকে আগামজাতের আমগুলি বাজারে উঠবে। প্রথমে আসবে গোপালভোগ ও রানীপছন্দ। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই লখনা, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, লক্ষণভোগ, দুধসর, মোহনভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম বাজারে আসবে। মৌসুমের শেষে ফজলি এবং সবশেষ বাজারে উঠবে আশ্বিনাজাতের আম। আম শেষ হবে জুলাই মাসের শেষদিকে। পুরো তিনমাসে শত শত কোটি টাকার আম বাণিজ্য হবে। এই বাণিজ্যেই সারাবছর চাঙ্গা থাকবে এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি। দেশে আমের দুটি বড় মোকাম রয়েছে। একটি রাজশাহীর বানেশ্বর অন্যটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট। এ দুটি মোকাম থেকে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ট্রাক আম চালান হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। কখনও হয় আরও বেশি। হাজারো মানুষ এসব কাজে নিয়োজিত থাকেন। দিনরাত চলে এই কাজ। দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যাপারিরা পুরো তিন মাসই এ দুটি মোকামে অবস্থান করেন। কুমিল্লার বুড়িচং এর শহীদুল্লাহ ব্যাপারি জানালেন, ঢাকার বাদামতলী হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ফলের বাজার। বিভিন্ন স্থান থেকে আম এনে জড়ো করা হয় এখানে। এখান থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আম নিয়ে ছড়িয়ে পড়েন ঢাকা ও শহরতলীতে। আশপাশের জেলাতেও আম যায় এখান থেকে। এছাড়া চট্টগ্রাম, ফেনী, সিলেট ও কুমিল্লাও আমের বড় বাজার। সারাদেশের ব্যাপারিরা এসব বাজারে আম নিয়ে হাজির হন বিক্রির জন্য। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে ঢাকার ভোক্তারা তাজা ও টাটকা আম খাওয়ার সুযোগ পান। আবার এসব আমের দামও ভাল পান চাষিরা। দেশে বিপুল পরিমাণ আম উৎপাদিত হলেও সিংহভাগই সরাসরি ভোগ করেন ভোক্তারা। আমকেন্দ্রিক শিল্পের কিছু উদ্যোগ দেখা গেলেও তা সামান্যই। রাজশাহী অঞ্চলের আমের বিপুল চাহিদা রয়েছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু উপযোগী নীতিমালার অভাবে আম রপ্তানি করা যায় না। আম থেকে উন্নতমানের আচার, সস, জেলি, জুসসহ মুখরোচক খাদ্যপণ্য তৈরি সম্ভব। জানা যায়, নাটোরে প্রাণ গ্রুপ একটি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে তুললেও সেখানে উপাদিত আমের সামান্য অংশই কাজে লাগানো হয়। জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র থেকে পাঠানো আমের নমুনা ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলিতে দুবছর আগে গৃহীত হলেও বিদেশের বিশাল বাজার ধরতে পারছে না এই অঞ্চলের আম ব্যবসায়ীরা। উদ্যোগ নেই সরকারিভাবেও।
উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে বিপুল পরিমাণ আম শুধুমাত্র ব্যক্তিগত পর্যায়ে বিদেশে উপহার হিসেবে পাঠানো ছাড়া কখনই রপ্তানির উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত প্রতি বছর ৪১ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি করে। এমনকি পাকিস্তানও প্রতি বছর গড়ে ৪৭ হাজার মেট্রিক টন আম বিদেশে পাঠায়। ভারত ও পাকিস্তানের মত বাংলাদেশে উৎপাদিত আম বিদেশে রপ্তানির জন্য সরকারি কৃষিজ উৎপাদন রপ্তানিবিষয়ক প্রতিষ্ঠান হরটেক্স ফাউন্ডেশন একাধিকার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হয়। ২০১০ সালের ৩০ জুন হরটেক্স ফাউন্ডেশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ উদ্যানতত্ত্ব কেন্দ্র উদ্ভাবিত বারি-২ জাতের আমের নমুনা পাঠিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নে। নমুনা পাঠানোর মাত্র দুসপ্তাহের মাথায় ১২ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এক ফ্যাক্সবার্তার মাধ্যমে জানানো হয়, উৎকৃষ্টমানের এই আমের নমুনা তাদের খুব পছন্দ। কিন্তু এরপর দুবছর অতিবাহিত হলেও এবিষয়ে তেমন কোন অগ্রগতি নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ উদ্যান গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে আম উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম হলেও এখানে আধুনিক পদ্ধতিতে আম চাষ ও উন্নত বিপণন ব্যবস্থা গড়ে না উঠায় বিদেশে আম রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, এসব সমস্যার সমাধান হলে উৎপাদিত আম বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এক্ষেত্রে সবচেয়ে লাভবান হবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সত্রাজিতপুর গ্রামের আদর্শ আম চাষি হারুনুর রশীদ বলেন, আম এই জেলার মানুষের জীবনজীবিকার প্রধান অবলম্বন। আমবাগান বিক্রি করেই হাজার হাজার পরিবার চলে। জাতীয় অর্থনীতিতেও আমের ভুমিকা আছে। কিন্তু আম চাষিদের জন্য সরকারি কোন উদ্যোগ নেই বললেই চলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চাষিরা প্রাচীন পদ্ধতিতে আম চাষ করেন। এজন্য তারা আমের ফলন কম পান। ফড়িয়া ব্যাপারিরাই আমের সবটুকু লাভ তুলে নিয়ে যান। কৃষি বিভাগ আমের ফলন হিসাব করা ছাড়া আর কোন কাজ করে না।
কানসাটের আমচাষি মাহাতাবউদ্দিন বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে আম চাষ না করা, যুগপোযোগী প্যাকিং ব্যবস্থা গড়ে না ওঠা ও উন্নত বিপণন ব্যবস্থার অভাবে আম রপ্তানিতে পিছিয়ে পড়ছে রাজশাহী অঞ্চলের চাষিরা। অথচ বাংলাদেশ থেকে ফজলি, হিমসাগর, বারি-২, ল্যাংড়া, বারি-৭ জাতের আম বিপুল পরিমাণে রপ্তানি করা সম্ভব। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিওসার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, বিদেশে আম রপ্তানির বিষয়টি মাথায় রেখে তারা আম চাষি ও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের সভা-সেমিনার করে সচেতন করার চেষ্টা করছেন।
সাতক্ষীরায় বড় বাজারে আমের সরবারহ প্রতিদিন হাজার হাজার মন
Written by Super Adminজৈষ্ট্যে মাস মধুর মাস।আর এ মধু মাসে সাতক্ষীরার ফলের আড়তগুলোতে আমের জমজমাট কেনাবেচা হচ্ছে। গতকাল বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে আড়তগুলোতে শুধু আম আর আম।প্রতিদিন হাজার হাজার মন বিভিন্ন প্রজাতের কাঁচা পাঁকা আম বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা সাতক্ষীরায় আসছেন আম সংগ্রহ করতে। তারা এখানকার আম কিনে তা আবার ঢাকা চট্টোগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছে। তবে গত বছেরের তুলনায় এবার সাতক্ষীরায় আমের আমদানি যেমন বেশি তেমন দাম ও কম ।
আমের সরবারহ এত বেশি কেন জানতে চাইলে ব্যাবসায়ীরা জানান, আবহাওয়া বিরুপ প্রভাবের কারণে যারা আম গাছ কিনে রেখেছেন তারা আগে ভাগে কাচা আম পেড়ে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
গতকাল সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড় বাজার ফল ও কাচামাল বিক্রির আড়তগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে বিপুল পরিমান আমের আমদানি। এরমধ্যে হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, সিদুররাঙ্গা, লতা ও দেশী বোম্বাই উল্লেখযোগ্যা। সরবরাহ বেশির কারনে এবার পাইকারীতে আমের দাম গত বছরের তুলনায় অনেকাংশে কম বলে জানান ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।
সুলতানপুর বড় বাজারের কাঁচা মালের আড়ত মর্জিনা ভান্ডারে হিমসাগর আম বিক্রি হয়েছে প্রতি মন পাইকারী ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, গোবিন্দভোগ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে। এছাড়া সিদুর রাঙ্গা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা ও অন্যান্য আম ৯০০ শত থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে গত বছর এসময় হিমসাগর আম বিক্রি হয়েছে প্রতি মন পাইকারী ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা ও গোবিন্দভোগ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। আড়তদার কামরুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় এবার সাতক্ষীরাতে আমের সরবরাহ খুব বেশি। তাছাড়া জেলায় আমের উৎপাদন অনেক ভালো। যে কারনে আমের দামটাও কিছুটা কম এবার। পাইকারী আম ব্যবসায়ী নারায়নগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম জানান, গতকাল সুলতানপুর বড় বাজার থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ৩ হাজার মন আম ক্রয় করেন তিনি। তিনি জানান, এসব আম ঢাকা ও চট্ট্রোগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকাতে সরবরাহ করবেন। তিনি জানান, প্রতি বছরেই সাতক্ষীরা জেলা থেকে আম কিনে তা দেশের অন্যন্য জেলায় বিক্রি করেন।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় সাতটি উপজেলাতে ৩ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির আম চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ১ হাজার ২৮১ হেক্টর, উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৮১০ মেট্রিকটন, কলারোয়ায় ২৭৫ হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৩০০ মেট্রিকটন, তালায় ৬২৭ হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৫২১ মেট্রিকটন, দেবহটায় ৩৯৮হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫ হাজার ৯৭০ মেট্রিকটন, কালিগঞ্জে ৮৮৭ হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার ৬৪৪ মেট্রিকটন, আশাশুনিতে ১২০ হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ২০০ মেট্রিকটন ও শ্যামনগরে ১৩২হেক্টর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা। তবে এবার সাতক্ষীরায় আমের ফলন যা তাতে করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রাসরন অদিপ্তর।
দিন দিন ফরমালিনের ব্যাবহার ভয়াবহ হারে বেড়ে চলছে। ফরমালিনের ব্যবহার অচিরেই রোধ না করলে আমাদের দেশের মানুষের সুস্থতা হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষ করে শিশুদের মানসিক বিকাশে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি করবে । মাছে ভাতে বাঙালির আজ যেন মাছ খাওয়াই বারণ । বাজারের ৮৫% মাছেই বিষাক্ত ফরমালিন মেশানো হচ্ছে । সেটা রাজধানীর কাওরান বাজার বা বাংলাদেশের যে কোন অঞ্চলের বাজার। সবখানেই মাছ ফরমালিন যুক্ত । সাধারণত মাছ যাতে তাড়াতাড়ি না পচে যায় তার জন্য আগে বরফ ব্যবহার করা হত । সময়ের পরিক্রমায় আজ তা ঠেকেছে ফরমালিনে । কিন্তু ফরমালিনে যে পরিমান বিষ তাতে আমাদের অবস্থা যে কোথায় যে ঠেকবে তার অনুমান করছেনা কেউ । উন্নয়নশীল বিশ্বের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে একটি ভয়ঙ্কর সমস্যা হল অপুষ্টিজনিত সমস্যা ।
এমনিতেই পর্যাপ্ত পরিমানে খাবারের অভাব তারপর যেগুলো খাওয়া হচ্ছে তাতেও ভেজাল । বলা যায় শনির দশা । খাবারে ভেজাল আজ কোন গোপনীয় বিষয় নয়। বর্তমানে সব ধরনের খাবার যেমন ফল, মাছ , এমন কি দুধেও ফরমালিন, সহ মরণ ব্যাধি নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ মেশানো হচ্ছে । কিন্তু আমরা অনেকে জানিই না ফরমালিন, কার্বাইড কি ? কি এর অপকারিতা ? কি ধরনের রোগ হতে পারে এসব বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ গুলুর প্রভাবে ? সবচাইতে আলোচিত এবং বিষাক্ত ফরমালিন এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ। যা ফল বা মাছে মিশিয়ে পচন রোধ করা হয় । একসময়েএটি জিবানু নাশক হিসেবে ব্যবহার করা হত । তাছাড়া প্রাণীর মরদেহ সংরণের কাজেও এটি ব্যাবহার করা হয় । ব্যাকটেরিয়া নাশক হওয়ায় কসমেটিক তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হয় ।
ফরমালিন ব্যাবহারে যে তিটুকু হয় তার সামান্য নিম্নে উল্লেখ করা হল ১) ফরমালিন মানুষের দেহে বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা যেমন পাকস্থলী ক্যান্সার, দৈহিক বিকলাঙ্গতা এমন কি প্রাণহানিও ঘটাতে পারে । ২) ফরমালিনের মাত্রা বেশী থাকলে সে ক্ষেত্রে খাওয়ার পর মানুষের শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। ৩) ফুলকা ও পাকস্থলী সর্বাধিক তিগ্রস্থ হয়। লিভারেও সমস্যা হতে পারে । ৪) দৈহিক স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
কিন্তু কিভাবে চিনবেন মাছে ফরমালিন আছে কি না ? ফরমালিনযুক্ত মাছ চেনার কিছু উপায় নিম্নে দেওয়া হল- ১) মাছের দেহ শক্ত হয়ে যায় । যার জন্য আমরা কেনার সময় ভাবি ,আছ তাজা আছে । কিন্তু মাছ শক্ত হওয়া মানে বুঝতে হবে ফরমালিন মেশানো পানিতে মাছ গুলুকে ডুবানো হয়েছে । ২) আইশ উজ্জ্বল না হয়ে ধুসর রঙের হয়ে যায় । ৩) ফুলকা ধুসর রঙের হয় । ৪) চোখের স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে যায়, দেখা যায় ঘোলাটে ।
এ সব দেখে মাছ কিনলে ফরমালিন মুক্ত মাছ পাওয়া যেতে পারে । কিন্তু বাজারের যেখানে প্রায় মাছেই ফরমালিন মেশানো হয় তাতে মনে হয় এ সব কিছু মনে রাখলেও কাজ হবে বলে মনে হয় না । আর এটা মেশানো হয় কাক ঢাকা ভোরে । বাজারগুলুতে মাছ আসার সাথে সাথে ফরমালিন মেশানো পানিতে চুপিয়ে তোলা হয় । তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করলেই বুঝা যাবে ফরমালিন আছে কি না থথথ যেসব মাছে ফরমালিন ব্যাবহার করা হয় সেসব মাছে সাধারণত মাছি বসে না ।
মধু মাসের সবচেয়ে মজার ফলে কার্বাইড মিশিয়ে আম তাড়াতাড়ি পাকানো হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে টাটকা রাখছে এবং শক্ত রাখছে । আর আমরা সেই ফলের সাময়িক মিষ্টিগন্ধ শুঁকে তারপরে কিনে বিষমাখা ফল খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছি । সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখা যায় বাগান থেকে আম পাড়ার পর কমপে ৫বার স্প্রে করা হয়। রাতে গুদাম বন্ধ করার আগে ফরমালিন স্প্রে করা হচ্ছে । ফলে ভোরে আমে ফরমালিন এর উপস্থিতি ল্য করা যায় না । তাছাড়া অতিরিক্ত তাপে ক্যালসিয়াম কার্বাইড মেশানো আম রাখলে তা ক্যালসিয়াম সায়ানাইডে পরিনত হতে পারে । যা আমাদের জীবনের জন্য স্পষ্ট হুমকি স্বরূপ । ফলে কার্বাইড মেশানোই অনেক ধরনের উপসর্গ পরিলতি হয় , যেমন ফল খুভ সুন্দর কালারে পরিনত হয়, তাছাড়া অনেক দিন ধরে সংরণের জন্য ও ফরমালিন ব্যাবহার করা হয় । কার্বাইড মুক্ত ফল চেনা অতটা কঠিন কিছু না , যেমন – প্রাকৃতিক ভাবে পাকা ফলের রঙ কিছুটা সবুজ কিছুটা হলুদ হয়ে থাকে ।
কিন্তু কার্বাইড মেশানো ফল আগাগোড়ায় হলুদ হয়ে যায় । এছাড়াও ফরমালিন দেওয়া ফল খুভ সহজেই চেনা যায় প্রথমত এক ধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ থাকবে ফলে । যা কেনার আগে নাকের কাছে আনলে পাওয়া যায় । তাছাড়া ফলের এক অংশে টক অন্য অংশে মিষ্টি হয় । আর সচাইতে বড় কথা হচ্ছে ফরমালিন যুক্ত আম ফ্রিজে না রাখলে নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু ফরমালিন না দেওয়া আম ফ্রিজে রাখলেই পচে যাবে এবং স্বাদ টক হয়ে যাবে । কিন্তু বাজারে যেখানে প্রায় সব ফলেই ফরমালিন ব্যাবহার করা হয় এর মাঝে ফরমালিন মুক্ত ফল পাওয়া খুব দুস্কর । এ থেকে পরিত্রান পেতে উন্নত পাকেজিং প্ল্যান্ট হাতে নেওয়া যায় যাতে কিছু দিন যাবত ফল সংরণ করা যায় । আলট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়ে আম জিবানমুক্ত করে প্যাকেট করা যেতে পারে । এবং সর্বোপরি দরকার ফল দীর্ঘদিন সংরণ করার বিজ্ঞানসম্মত উপায় আবিষ্কার করা ।
ইদানিং আরেকটা মারাত্মক ঘটনা হচ্ছে মুড়িতে ইউরিয়ার সাথে হাইড্রোজ মেশানো । এতে করে মুড়ির স্বাদ কমার সাথে সাথে এই বিষাক্ত মুড়ি খেয়ে আমাদের শরীরে ক্যান্সার ও আলসারের মত জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছি । রমাজান মাসে বাজারে ভেজাল মুড়ির যে সয়লাব হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই । কিন্তু একটু সতর্ক থাকলে ভেজাল মুড়ি খাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ইউরিয়ার সাথে হাইড্রোজ মুড়ি গুলুর শরীরে অসংখ্য ছিদ্র থাকে এবং দেখতে খুব সাদা রঙের হয় । ইউরিয়াযুক্ত মুড়ি গুলু সাধারণত সাদা বর্ণের হয় তাছাড়া স্বাদ পানসে ধরনের হয় । এখন লিচুতে স্প্রে করা হয় যাতে করে লিচুর রঙ চকচকে দেখায় । এমনকি কাঁঠাল পাকাতেও রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে । আর রাসায়নিক পানি ছিটিয়ে পাকানো হয় কলা। বলা যায় গ্রীষ্মকালীন প্রায় সব ফলেই এখন ফরমালিন বা কার্বাইড অথবা না হলে রাসায়নিক স্প্রে ।
ফরমালিনযুক্ত খাবারে ফারমালদিহাইড এর ঝাঁজালো গন্ধ পাওয়া যায় ।একটু খেয়াল করলেই বুঝা যাবে। কিন্তু চারিদিকে ফরমালিনের এত ব্যাবহারে এটি ঠক বাঁচতে গা উজাড় হওয়ার মত অবস্থা হবে । দেখে দেখে বাজার সদায় করা হচ্ছে এক ধরনের নিরুপায় হয়ে করা। বর্তামানে ফরমালিন যে হারে ব্যবহার হচ্ছে তাতে এছাড়া আর কী করার উপায় আছে। বসতবাড়ির আশে পাশে এবং পরিতাক্ত জায়গায় ফল এবং সব্জির চাষ করলে এতে সারা বছরের জন্য না হলেও অন্তত কিছু দিন ধরে তো চাহিদার যোগান পাওয়া যাবে । আমাদের গ্রাম গঞ্জে পড়ে থাকা ডোবায় বা পুকুরেও মাছের চাষ করা যেতে পারে। এটি একদিকে প্রানিজ আমিষের চাহিদা পুরন করবে অন্য দিকে টাটকা মাছেরও স্বাদ মিলবে । এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে অতি অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প পুঁজিতে স্বাবলম্বীও হওয়া যাবে । আর শহরে যারা বসবাস করেন তারা একটু কষ্ট করে হলেও বাসার ছাদে টুকটাক সবজি চাষের ব্যবস্থা করতে পারেন।
মওসুম এখন আমের। ফলের রাজা হিসেবে পরিচিত এই আম কাঁচা-পাকা উভয় অবস্থায়ই শরীরের উপকার করে। শুধু ফল নয়, গাছের পাতারও আছে বেশ কিছু গুণাগুণ। আমের মধ্যে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। স্তন, লিউকেমিয়া, প্রোস্টেট ক্যান্সারও প্রতিরোধে সহায়তা করে আম। এতে রয়েছে প্রচুর এনজাইমও। অনেকেই বলেন, আম খেলে ওজন বাড়ে। তা হয়তো কিছুটা বাড়তেই পারে। তবে ওজন বাড়ানোর জন্য খেতে হবে বেশি আম। ওজন বাড়লেও কোলেস্টেরল কমে যায় আম খেলে। আমে আছে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি, সেই সাথে আরো আছে ফাইবার ও ফলের শাঁস, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ত্বকের যতেœও অনেক উপকারি এই মজাদার ফলটি। ভেতর ও বাইরে থেকে উভয়ভাবেই ত্বককে সুন্দর রাখতে সাহায্য করে আম। ত্বকের লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। ফলে ব্রনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আম চোখের জন্যও অনেক উপকারী। এক কাপ আম একজনের দৈনন্দিনের ভিটামিন এ-এর চাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশের জোগান দিতে পারে। এই ফলে পাওয়া যায় টারটারিক এসিড, ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক এসিড, যা শরীরে অ্যালকালাই বা ার ধরে রাখতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস রোগীদের আম খেলে সুগার বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলেও আমগাছের পাতা কিন্তু রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে। এ জন্য কিছু আমপাতা নিয়ে ভালো করে পানিতে জাল দিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে এই পানি পান করুন। ব্যাস এই টুকুই সাহায্য করবে রক্তে চিনির পরিমাণ ঠিক রাখতে।
dailynayadiganta.com
কাঁচা আমের উপকারিতা-যা শুধু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। তো দেরি কিসের??????
Written by Super Adminকাঁচা আম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। অনেক ক্ষেত্রে পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমের গুণ আরও বেশি। কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই। সত্যিই অবাক হইবেন কিন্তু সবাই ।
জেনে নিন কাঁচা আমের গুণাগুণ-যা শুধু আপনার জন্য অপেক্ষা করছে:
শরীরের রক্ত পরিস্কার রাখে
কাঁচা আম স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
ক্যারোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ কাঁচা আম চোখ ভালো রাখতে সেরকম ভূমিকা রাখে
বিটা ক্যারোটিন থাকায় হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে্ আপনাকে খুব সাহায্য করবে
পটাশিয়ামের অভাব পূরণ করবে
কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় রক্তসল্পতা সমস্যা সমাধানে বড়ই উপকারী
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হওয়ায় গরমে ঠাণ্ডা জতীয় রোগ প্রতিরোধ করবে
কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ সহায়তা করবে
লিভার সুস্থ রাখবে
নিঃশ্বাসের সমস্যা, জ্বরের সমস্যা উপশম করবে
অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করবে
ত্বক উজ্জ্বল ও মলিন করবে
দাঁতের রোগ প্রতিরোধ করবে
ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্টকাঠিন্য দূর করবে
এছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
চাঁপাইয়ে এখন কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। এমন কি পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন সি বেশি পরিমাণে থাকে।বেশি বেশি কাঁচা আম খেয়ে, শরীরের বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন। চলে আসুন আমার ভোলাহাটে। আ্মের রাজ্যে। অপেক্ষা করছি আপনার জন্যই শুধু। মিস করলেন তো, জীবনটাই……………..আর কহোবনা।
মৌসুমি ফল আম নিয়ে চলছে নানা প্রতারণা। বাজার ছেয়ে গেছে রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত আমে। পাশাপাশি নগরীর কয়েকটি পয়েন্টে রাসায়নিকমুক্ত আমও বিক্রি হচ্ছে। তবে এসব আমের দাম একটু বেশি। চেনার উপায় না থাকলেও আম কিনতে সচেতন হতে বললেন ব্যবসায়ীরা। সৌন্দর্য না দেখে গুণগত মান বুঝে আম কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাসায়নিক দ্রব্য 'কার্বাইড' দিয়ে আম পাকানো হচ্ছে। এছাড়া আমের পচন রোধে ব্যবহার হচ্ছে 'ফরমালিন'। এসব মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক হলেও এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী আমসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলে দেদারচে মেশাচ্ছে 'কার্বাইড' ও 'ফরমালিন'। ভ্রাম্যমাণ আদালতও ফলের আড়তগুলোতে অভিযান চালিয়ে কোনো প্রতিকার করতে পারছে না।
চট্টগ্রামের প্রধান ফলের আড়ত রেলওয়ে মেনস্ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী শফিউল আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা থেকে আসছে আম। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মেহেরপুর, চুয়াডাঙা ও কুষ্টিয়া থেকে আসবে। একই সময়ে পাওয়া যাবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম। তবে রাজশাহীর ফজলী আম চট্টগ্রামের বাজারে আসতে আরো এক মাস সময় লাগবে।'
আড়ত সূত্র জানায়, এখন বাজারে গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, মল্লিকা ও আম্রপালি আম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। আগামী মাসের শেষ দিকে উত্তরাঞ্চলের কানসাট, মির্জাপুর এলাকা থেকে আম আসবে। বাজারে দেশি আমের পাশাপাশি আমদানি করা প্রচুর আমও রয়েছে। আমদানি করা আমে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার তুলনামূলক বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
রাসায়নিক মিশ্রিত আম প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ হাসিনা আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত যেকোনো ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কার্বাইড দিয়ে পাকানো আম খেলে কিডনি ও লিভার নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।'
এদিকে মেরিডিয়ান ও ইস্পাহানী গ্রুপ তাদের নিজস্ব বাগান থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন জাতের দেশি আম বাজারজাত করছে। এসব আম রাসায়নিক মিশ্রণমুক্ত। এছাড়া নগরীর কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মির্জাপুর ও নওগাঁ জেলার নিজস্ব বাগান থেকে সরাসরি আম নিয়ে আসছেন চট্টগ্রামে। তারা নগরীর জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, হালিশহর এলাকায় অস্থায়ী স্টলে বিক্রি করছে রাসায়নিক মিশ্রণমুক্ত আম।
এ প্রসঙ্গে এস কে এগ্রো প্রোডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম ফরহাদ উদ্দিন সোহেল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে নিজস্ব আমের বাগান থেকে সরাসারি আম নিয়ে আসছি। রাসায়নিক মিশ্রন মুক্ত পণ্যের নিশ্চয়তা দিয়ে আমরা আম বিক্রি করছি। কারণ বাগান থেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আম নিয়ে আসায় আমরা এ নিশ্চয়তা দিতে পারছি। এক্ষেত্রে দামটা একটু বেশি।'
ব্লগার লগ ইন
ব্লগ পুঞ্জিকা
ব্লগ ট্যাগ
আরও পড়ুন
-
কার্যক্ষমতা বাড়ায় কাঁচা আম
-
তিন ফুট গাছে থোকা থোকা আম
-
আম সুরক্ষায় ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি
-
আম উৎপাদনে শীর্ষ দশে বাংলাদেশ
-
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘ব্যানানা আম’ চাষ
-
ফরিদপুরে বারি আম চাষ শুরু
-
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধ - ত্রাণের সঙ্গে আম দিতে হবে
-
কিসে নেই ফরমালিন!
-
আম বিতর্ক- বিষ কি শুধু আমে?
-
আকাশ থেকে আম পাতায় মধু পড়েছে’ এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন উপজেলায়
-
মালদার আম চলল ইউরোপে
-
রূপচর্চায় আম
-
আম বাগানে আনারস চাষ
-
এই গরমে কেনো আম খাবেন?
-
আমের রাজধানীতে ভারতীয় আম
-
বিদেশে অাম আরপ্তানীতে আগ্রহী নবাবগঞ্জের আমচাষীরা
-
ভারতের সবচেয়ে দামি আম! একটির দাম ১৫০০ টাকা!
-
সংসদ ভবনে আম গাছ
-
অনলাইনে আমের ব্যবসা করতে চাই কিভাবে করবো
-
আম রফতানির পরিকল্পনাআছে সরকারের
-
ফেসবুকে রাজশাহীর আম কিনতে চান?
-
দুর্বৃত্তরা বিনষ্ট করল ১৫ হাজার আমের চারা
-
আমের তেল mango Oil
-
আম খেয়ে এক পরিবারের ৯ জন হাসপাতালে
-
ফরমালিনমুক্ত আম বাজারে
-
জেনে নিন ফলের রাজা আম চাষের টুকিটাকি নানা জরুরি বিষয়
-
ফুরোচ্ছে রাজশাহীর আম
-
পচন রোধে আম শোধন
-
আম ফলের অবদান
-
মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে সেই আম গাছটি
-
ছাদে আম চাষ
-
আম উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধির হাতছানি রাজশাহীতে
-
বাগানে থোকা থোকা আম দেখে ইতোমধ্যে দরদাম হাঁকছেন বেপারিরা
-
খুলনায় আমের আগাম মুকুল ২০২০
-
বান্দরবানের পাহাড়জুড়ে ‘রাংগুয়ে’ আম বিপ্লব
-
আমে ভালো লাভের আশা রাজশাহীর চাষিদের
-
বাংলাদেশের বারোমাসি আম- বারি আম ১১ এর বিশেষ কিছু বিশিষ্ট্য
-
মামলা-জরিমানার পরও আগোরার প্রতারণা থেমে নেই
-
মেহেরপুরে নতুন জাতের বেনানা ম্যাংগো উদ্ভাবন
-
ফরমালিন ও ক্যালসিয়াম মিশ্রিত আমে সয়লাব রাজধানীর ফলের বাজার
-
পাহাড়ে বাম্পার ফলন। ৮০০ কোটি টাকার আম নিয়ে উদ্বেগ
-
বৈরী আবহাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবছর আম ফল উৎপাদন হূমকির মুখে
-
বালিয়াডাঙ্গীর প্রাচীন আম গাছটির দর্শনী ১০ টাকা
-
মালদহে আমচাষীদের কপালে ভাঁজ
-
নওগাঁয় আবাদী জমিতে গড়ে উঠছে আম বাগান
-
পুলিশ ‘মোতায়েন’ নয়, আমের বাগানে ‘নজরদারির’ নির্দেশ
-
প্রনিং পদ্ধতিতে ফলজ গাছ ছাটাই
-
এক বসাতে ১০০ ল্যাঙড়া আম খেয়েছি – লোটাস কামাল
-
আম ও আমতলা নিয়ে মুর্শিদাবাদের গ্রাম্য জীবন
-
ঠাকুরগাঁওয়ে আমের বাম্বার ফলন আশা
সর্বশেষ মন্তব্য
-
আর খাইয়েন না। এক লাখ পুরা হলেই আজরাইল এসে ধরবে।
Written by মিজানুর on Friday, 29 May 2020 16:47 এক বসাতে ১০০ ল্যাঙড়া আম খেয়েছি – লোটাস কামাল -
Nice post, very interesting. Good work , If you have…
-
এই আম কোন মাসে পাকে
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
How can this be done?
-
মনজুরুল হক ভাইয়ের নাম্বারটা দেবেন
-
হিমসাগর কত করে??
-
5kg am lak ba gser
-
আঁচার আমার খুব পছন্দের। আমি একদিন এটা বানিয়ে নিব। ধন্যবাদ।
-
খুব ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ লেখককে।
-
ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আপনার জার্নির কথা শুনে... আর আমরা ঘরে…
-
চিন্তা করা যায়??
-
কৃষি কর্মকর্তারা কি বেতন খাচ্ছে আর ঘুমা্চ্ছে....
-
আমার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে.. আমি কি আম চাষ করতে পারবো?
