ফ্রুট ব্যাগিং (বিশেষ ধরনের কাগজের ব্যাগ দিয়ে আবৃত করা আম) পদ্ধতিতে উৎপাদিত রাসায়নিক বালাইনাশকমুক্ত নিরাপদ আমের রপ্তানি শুরু হচ্ছে যুক্তরাজ্যে। আজ বুধবার দুই হাজার কেজি ল্যাংড়া ও ফজলি আম রপ্তানির জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। কাল বৃহস্পতিবার বিমানযোগে আমের এ চালান যাবে যুক্তরাজ্যে। এর মধ্য দিয়ে আরও আম রপ্তানির সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো। এগুলো যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের মাধ্যমে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শরফ উদ্দীন প্রথম আলোকে জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে তেমনভাবে অতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহারমুক্ত আম উৎপাদন হতো না। এ ছাড়া প্রচার ছিল যে, এখানকার আমে অতিরিক্ত রাসায়নিক বালাইনাশক স্প্রে করা হয়ে থাকে। তাই রপ্তানিযোগ্য নিরাপদ আম উৎপাদনের লক্ষ্যে নিয়ে গত বছর চীন থেকে আমদানি করা ফ্রুট ব্যাগ আমে আবৃত করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এতে সুফল পাওয়ার পর এ বছর আমচাষিদের ওই ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। চলতি বছর ১ লাখ ৫০ হাজার আমে ব্যাগিং করা হয়। এতে করে ১০০ মেট্রিক টন নিরাপদ আমের উৎপাদন নিশ্চিত হয়।
শরফ উদ্দীন আরও জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়াও এ মৌসুমে রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, গোপালগঞ্জ, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানেও বাণিজ্যিকভাবে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম উৎপাদিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে রপ্তানিকারক ও ফল উৎপাদনে সহায়তাকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরাই খোঁজখবর নিয়ে প্রথম পর্যায়ে দুই হাজার কেজি আম রপ্তানির উদ্যোগ নেন।
রপ্তানিকারক মেসার্স দ্বীপ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী পরিতোষ চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির আম নিরাপদ জেনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম রপ্তানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে হর্টেক্স ফাউন্ডেশনের সহায়তা পাওয়া গেছে। এভাবে উৎপাদিত আম রপ্তানিতে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিতে আম উৎপাদনকারী চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষি মো. মিলন, রবিউল ইসলাম, মো. হাসান ও পিন্টু মাস্টার রপ্তানিকারককে দুই হাজার কেজি আম সরবরাহ করেন। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ল্যাংড়া প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফজলি আম এখনো বাজারের সেভাবে নামেনি। আগাম জাতের ফজলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। চাষিরা ওয়ালমার্টের কাছে ল্যাংড়া ৭০ টাকা কেজি ও ফজলি ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। চাষি রবিউল ও হাসান জানান, এ বছর আমের প্রত্যাশিত দর না পেয়ে তাঁরা হতাশ ছিলেন। তবে ফ্রুট ব্যাগিং করে উৎপাদিত আমে কিছুটা হলেও লাভবান হয়েছেন।
ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি কি?
ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি সম্পর্কে শরফ উদ্দীন জানান, ফ্রুট ব্যাগিং হচ্ছে গাছে থাকা অবস্থায় বিশেষ ধরনের কাগজের ব্যাগ দিয়ে ফলকে আবৃত করে রাখা হয়। ৪০ থেকে ৫৫ দিন বয়সের আমে ব্যাগিং করার উপযুক্ত সময়। ব্যাগিং করার আগে আমে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করে শুকিয়ে নিতে হবে। তিনি জানান, রঙিন আমের জন্য সাদা ব্যাগ ও সবুজ আমের জন্য দুই আস্তরের বাদামি ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। ফল সংগ্রহের আগ পর্যন্ত লাগানো থাকে ব্যাগ। এসব ব্যাগ বৃষ্টি ও ঝড়ে ছিঁড়ে যায় না। তিনি আরও জানান, এই ব্যাগ ব্যবহারে আম বিভিন্ন ধরনের আঘাত, পাখির আক্রমণ, প্রখর সূর্যালোক, রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।
শরফ উদ্দীন বলেন, আম সংগ্রহ করার পর থেকে পরের মৌসুমে আম সংগ্রহ করা পর্যন্ত অসচেতন আমচাষিরা ১৫ থেকে ৬২ বার পর্যন্ত বালাইনাশকের ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, তিন থেকে পাঁচবার স্প্রে করাই যথেষ্ট। অর্থাৎ গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে প্রথমবার। দ্বিতীয়বার মুকুল ১০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার লম্বা হলে এবং তৃতীয়বার আম যখন মটর দানার আকার ধারণ করে। পোকামাকড়ের আক্রমণ রোধে বিশেষ প্রয়োজন আরও দুবার হতে পারে।
শরফ উদ্দীন জানান, আমে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বালাইনাশকের ব্যবহার কমানো সম্ভব। দেশে প্রচুর পরিমাণ আম উৎপাদন হলেও কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে রপ্তানি উপযোগী আম পাওয়া যায় না। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রপ্তানি উপযোগী আম পাওয়া সম্ভব। এ ছাড়া এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা আমের সংরক্ষণকাল বেশি এবং দেশি বাজারেও দাম পাবে বেশি।
ব্লগার লগ ইন
ব্লগ পুঞ্জিকা
ব্লগ ট্যাগ
আরও পড়ুন
-
১ গাছেই ধরে ৩০০ প্রজাতির আম!
-
ফলন্ত আম গাছের পরিচর্যা
-
গৌরমতি আমের খবর
-
আমের পোকা,ক্ষতির লক্ষন ও প্রতিকার
-
আম কীট নিয়ন্ত্রণ কৌশল
-
বারোমাসি আম চাষে কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজুলের সাফল্য
-
আমে আর পোকা ধরবে না, নষ্টও হবে না
-
১০০% টাটকা আম। এর উপর টাটকা দুনিয়াতে হয় না।
-
মধুময় ফল আম
-
আমের নাম নূরজাহান
-
ঝিনাইদহে মুকুলে ভরে গেছে আম বাগান
-
বিষাক্ত কেমিক্যালে পাকছে আম, সাতক্ষিরার কালিগঞ্জে ৪৯ ক্যারেট বিনষ্ট
-
কাঁচাগুলো বাড়ি খাচ্ছে আমে আমে
-
খরায় ঝরছে আমের গুটি
-
বিষ মুক্ত আমের গল্প!
-
রাজশাহীর আম নিয়ে ব্যবসা করতে চান?
-
আম গাছের পাতা থেকে ঝড়ছে মিষ্টি পানি !
-
ঝামেলাবিহীন আমের আচার
-
চারঘাটে আম গাছে আগাম মুকুল
-
আম বাগানে আনারস চাষ
-
কালটার রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে আমগাছ
-
সিলেট জুড়ে আম পাতায় কথিত মধু, করোনার ঔষধ বলে গুজব
-
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, লিচু গাছে আম ধরেছে !!
-
এক বসাতে ১০০ ল্যাঙড়া আম খেয়েছি – লোটাস কামাল
-
কবিতা-আম পেকেছে গাছে
-
মিঠাপুকুরে আম চাষে আব্দুস সালামের সাফল্য
-
ফরিদপুরে বারি আম চাষ শুরু
-
আমের মুকুল ঝরা রোধে করণীয়
-
কাঁচা আমের উপকার
-
গাছে গাছে আগাম আমের মুকুল
-
বিদেশে অাম আরপ্তানীতে আগ্রহী নবাবগঞ্জের আমচাষীরা
-
গরম পানিতে আম শোধন
-
আমে চাঙ্গা অর্থনীতি
-
ঝরে যাচ্ছে মুকুল, চিন্তায় আম চাষিরা
-
দিনের কোন সময়ে আম খাবেন
-
ফরমালিনমুক্ত ভালো আম চেনার উপায়
-
শরীর সুস্থ রাখতে গরমে চুটিয়ে খান কাঁচা আম
-
আম না ধান? কোনটাতে লাভ বেশি
-
আমের রাজধানীতে মিলছে ভারতীয় পাকা আম, স্বাদ নিলে গুনতে হবে চড়া দাম
-
আমে ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহারে বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত
-
আম বিদেশে রপ্তানির সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ
-
৭০ প্রজাতির আম গাছের বাগান
-
কলেজেের ভিতর আমের গাছ। শোভা ছড়াচ্ছে আমের মুকুল, মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা
-
রাজশাহীর আম সংরক্ষণ ও বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা
-
বিমানবন্দরে চুরি করে আম খাওয়ায় ১লাখ টাকা জরিমানা
-
পাকা আম সংরক্ষণ করবেন যেভাবে
-
আদিযুগে প্রাকৃতিক ভাবে আম পাকাতে ব্যবহার হতো আশ শেওড়া
-
রাজশাহীতে মৌসুম ফুরানোর সঙ্গে বাড়ছে আমের দাম
-
রাজশাহীর আম
-
পাহাড়ে বাম্পার ফলন। ৮০০ কোটি টাকার আম নিয়ে উদ্বেগ
সর্বশেষ মন্তব্য
-
আর খাইয়েন না। এক লাখ পুরা হলেই আজরাইল এসে ধরবে।
Written by মিজানুর on Friday, 29 May 2020 16:47 এক বসাতে ১০০ ল্যাঙড়া আম খেয়েছি – লোটাস কামাল -
Nice post, very interesting. Good work , If you have…
-
এই আম কোন মাসে পাকে
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
I have two drafting mango tree.May be 3 years old.But…
-
How can this be done?
-
মনজুরুল হক ভাইয়ের নাম্বারটা দেবেন
-
হিমসাগর কত করে??
-
5kg am lak ba gser
-
আঁচার আমার খুব পছন্দের। আমি একদিন এটা বানিয়ে নিব। ধন্যবাদ।
-
খুব ভালো লাগলো। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ধন্যবাদ লেখককে।
-
ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে আপনার জার্নির কথা শুনে... আর আমরা ঘরে…
-
চিন্তা করা যায়??
-
কৃষি কর্মকর্তারা কি বেতন খাচ্ছে আর ঘুমা্চ্ছে....
-
আমার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে.. আমি কি আম চাষ করতে পারবো?
