একটি ছোট পরিবার, মাত্র একবিঘা জমিতে আমচাষ করে সারাবছরের পারিবারিক সব চাহিদা মেটাতে পারবে।
এমন ধারণা থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি কৃষি খামার বারাদি হর্ট্টিকালচার সেন্টারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কয়ালদার এবার আরও একটি নতুন জাতের আম উদ্ভাবন করেছেন। তার এই উদ্ভাবিত আম চাষ করলে প্রতি বিঘাতে এক থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার আম উৎপাদন সম্ভব। দীর্ঘদিন গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উদ্ভাবিত এই জাতের আম উদ্ভাবন করেছেন তিনি। এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তার উদ্ভাবিত আমের নাম দিয়েছেন বেনানা ম্যাংগো।
ফেব্র“য়ারির দিকে এ আমের গাছে মুকুল এলেও আম পাকে আগস্টে। এজন্য এর আরেক নাম দেয়া হয়েছে লেট ভ্যারাটে। তবে মেহেরপুরের মানুষের দাবি, আমটির নাম মেহেরপুরের নামানুসারে মেহের ম্যাংগো রাখার। উদ্ভাবিত এই আমগাছের উচ্চতা হবে ১২ থেকে ১৫ ফুট। একবিঘা জমিতে ২৫০টি আমগাছ চাষ করা যাবে। গাছটি লাগানোর পরের বছর থেকেই আম পাওয়া যাবে। ছোট জাতের এই আমগাছের বয়স ৫ বছর হলেই প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিন মণ আম পাওয়া যাবে। একেকটি আম এক কেজি পর্যন্ত ওজনের হবে। এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার আরও একটি উদ্ভাবিত আমের নাম পালমার। মেহেরপুর বারাদি হর্ট্টিকালচার সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত উদ্যানতত্ত্ববিদ আওলাদ হোসেন জানান, এই আমের উদ্ভাবক ফার্মের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কয়ালদার কিডনি ড্যামেজ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি বিদেশে চিকিৎসাধীন। আওলাদ হোসেন জানান, গত বছর এই বেনানা ম্যাংগো গাছে প্রথম আম আসে। এবারও অনেক আম এসেছে। তিনি আমের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেন, দেরিতে পাকে। প্রচুর আম ধরে। পুষ্ট হলে নজরকাড়া রঙ আসে। আম পাকার পরও ২০ থেকে ২৫ দিন খাওয়ার উপযোগী থাকে। প্রতি বিঘা জমিতে ২৫টি গাছ লাগানো যাবে। বছরে কম করে ৬০ মণ আম পাওয়া যাবে। এক থেকে দেড় লাখ টাকার আম বেচাকেনা যাবে। সর্বোপরি যখন দেশের কোথাও আম পাওয়া যায় না, তখন এ আম পাওয়া যাবে। ব্যাপক এই আমের চাষ হলে বিদেশী আম আমদানি বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের আমই বিদেশে রফতানি সম্ভব হবে। সঞ্জয় কুমার কয়ালদার জানান, মেহেরপুরের মাটির গুণের কারণে আমটি সুস্বাদু। অন্য জেলার মাটিতে এই আমের এমন স্বাদ নাও থাকতে পারে। তবে নিু আয়ের মানুষ একবিঘা জমিতে এই আমের চাষ করে সারাবছরের অভাব মেটাতে পারবে।