আমের রাজধানীখ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমের মুকুল এসেছে দেরিতে। তবে মৌসুমের শুরুতে শীতের প্রকোপ ও বৃষ্টির কারণে দেরিতে মুকুল ফোটায় ফলনে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ। আম চাষি ও বাগান মালিকরা বৃষ্টিকে আশীর্বাদ হিসেবে মনে করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, এবারও ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় আমবাগানের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর। গত বছর ছিল ৩১ হাজার ৮২০ হেক্টর এবং গাছের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩০। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর জেলার মাঝারি ও ছোট অধিকাংশ গাছেই মুকুল এলেও বড় গাছগুলোয় তেমন মুকুল আসেনি। চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ ভাগ বাগানে মুকুল এসেছে। মার্চের মধ্যভাগ পর্যন্ত গাছগুলোয় মুকুল আসা অব্যাহত থাকবে। মুকুল দেরিতে আসার কারণ হিসেবে কৃষিবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কথা। আবার কোনো কোনো গাছের যে অংশে কিছুটা রোদ, আলো-বাতাস পড়েছে সে অংশে কিছু মুকুল ফুটেছে। মৌসুমের প্রথম দিকে চাষিরা শঙ্কায় থাকলেও বর্তমানে শঙ্কামুক্ত।
বৃষ্টি হওয়ার পর আমবাগানগুলোয় বাড়তি স্প্রে করতে হচ্ছে না। ফাগুনের বৃষ্টি হলেও পোকার আক্রমণের আশঙ্কাও খুবই কম।
আমচাষি হারুনুর রশিদ জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মুকুল একটু দেরিতে এসেছে। পরে মুকুল ভালো দেখা দেওয়ায় ফলনে প্রভাব পড়বে না বলে আশা প্রকাশ করছেন। প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ মুকুল এসেছে।
আরেক আমচাষি আনারুল ইসলাম জানান, বৃষ্টিতে গাছের পাতাগুলো পরিষ্কার হয়ে গেছে। এতে করে আপাতত বালাইনাশক ও ছত্রানাশক স্প্রে করতে হচ্ছে না। তবে মুকুলের ক্ষতিকর হপার পোকা ও মিজ পোকার আক্রমণ দেখা গেলে বালাইনাশক স্প্রে করবেন তারা। কিছুদিন পরই বাগানের এসব গাছে ধরবে নানা জাতের সুমিষ্ট আম। আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলনের আশা করছেন বাগানমালিক, আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হুদা জানান, জেলার প্রধান অর্থকরী ও লাভজনক ফসল হওয়ায় দিন দিন আমবাগানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার আমের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবারে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৫৫ হাজার টন। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার টন।
কৃষি বিভাগের পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা আশা করছে ভালো ফলনের। মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দিন জানান, এবছর প্রথম দিকে গাছে মুকুলের পরিমাণ কম ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছিল শীতের কারণে মুকুল ফুটবে না। মুকুল ফোটার জন্য ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা লাগে, ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে কিছুটা গরম পড়ায় তাপমাত্রার চাহিদা পূরণ হয়েছে।
এই নিউজটির মুল লিখা আমাদের না। আমচাষী ভাইদের সুবিধার্তে এটি কপি করে আমাদের এখানে পোস্ট করা হয়েছে। এই নিউজটির সকল ক্রেডিট: http://www.dainikamadershomoy.com