২০২০ সালের মধ্যে আমকে অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে ভিয়েতনাম। দেশটির স্থানীয় কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের উপপরিচালক নগুয়েন থান তাই সম্প্রতি এ কথা জানান।
ভিয়েতনামে সর্বোচ্চ পরিমাণ আম উৎপাদন হয় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দং থাপ প্রদেশে। মেকং অববাহিকার অঞ্চলটির প্রায় ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে প্রতি বছর কমপক্ষে এক লাখ টন আম উৎপাদন হয়। ২০২০ সালের মধ্যে আমকে অন্যতম প্রধান রফতানি পণ্যে রূপান্তরের পরিকল্পনায় প্রদেশটির জন্য বড় ধরনের ভূমিকার কথা ভেবে রেখেছে ভিয়েতনাম সরকার।
নগুয়েন থান তাই জানান, এরই মধ্যে আঞ্চলিক পর্যায়ে কৃষিপ্রযুক্তি অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছে দং থাপ। এজন্য নদীতে বাঁধ নেটওয়ার্ক ও কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের পেছনে বেশ অর্থ ব্যয় করেছে প্রদেশটি। এছাড়া কৃষি খাতে গ্লোবাল গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসের (গ্লোবাল জিএপি) মান অর্জন ও ফসলোত্তর শিল্প কার্যক্রম স্থাপনের ক্ষেত্রেও বেশ উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।
তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে দং থাপ প্রদেশের চাও লান শহরের দুটি আম উৎপাদনকারী এলাকা গ্লোবাল জিএপি মান অর্জনের সনদ আদায় করে নিয়েছে। এছাড়া আরো দুটি এলাকা এরই মধ্যে গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিস ইন ভিয়েতনাম (ভিয়েতজিএপি) সনদ অর্জন করে নিয়েছে।
শুধু রফতানির উদ্দেশ্য নিয়ে এরই মধ্যে ৪১৬ হেক্টরেরও বেশি জায়গায় ছয়টি নিরাপদ আম উৎপাদনকারী অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে চাও লান। এছাড়া ক্যাট চু চাও লান ও ম্যাঙ্গো চাও লান নামে আমের দুটি ব্র্যান্ডের মেধাস্বত্বও নিবন্ধন করে ফেলেছে শহরটি।
এদিকে দেশটির কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের অধিভুক্ত অফিস অব টেকনোলজি অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি রিসার্চের প্রধান নগুয়েন ফুওং তুয়েন জানান, ভবিষ্যতে দং থাপ প্রদেশে আম আবাদ এলাকা খুব একটা বেশি পরিমাণে সম্প্রসারণ ঘটবে না। তবে এখানে আমের উৎপাদন ভ্যালু চেইনকে সমৃদ্ধ করে তোলার উদ্দেশ্যে সংরক্ষণাগার ও প্রক্রিয়াকরণ এলাকা স্থাপনের পেছনে বড় ধরনের বিনিয়োগ করা হবে।
দুই বছর আগে স্বাক্ষরিত এক চুক্তির আওতায় দং থাপ প্রতি মাসে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং ও নিউজিল্যান্ডে ১০০-২০০ টন করে আম সরবরাহ করে। দং থাপের প্রাদেশিক কৃষি কাঠামো ও কৌশলকে ঢেলে সাজানোর জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব চ্যান থোর বিশেষজ্ঞ ত্রান ভান হা। এ পরামর্শ বাস্তবায়ন হলে নিঃসন্দেহে প্রদেশটিতে আম উৎপাদন বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এছাড়া উৎপাদিত আমের মান বাড়ানোর দিকেও মনোযোগী হয়ে ওঠার বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।