x 
Empty Product
Thursday, 22 June 2017 09:56

কানসাটে প্রতিবছরের ন্যায় আমের বাজার জমে না উঠায় হতাশ আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা

Written by 
Rate this item
(0 votes)

আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ হলেও উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড় বগ এ মৌসুমে ওজন ও মন প্রতি কমিশন সহ বিভিন্ন জটিলতায় দেরীতে আম কেনাবেচা শুরু হলেও বিভিন্ন সমস্যায় হতাশায় জর্জড়িত আম ব্যবসায়ীরা। সরজমিনে গিয়ে আম ব্যবসায়ীরা জানান, এবছর ঝড় ও শিলায় শিবগঞ্জের আমের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় একদিকে আমের উৎপাদন কম, অন্যদিকে দেরীতে আম কেনাবেচার শুরু হওয়াল বড় বড় ব্যাপারীরা এখনো কানসাট মুখী না হওয়ায় আমের বাজার জমজমাট হচ্ছে না। শুক্রবার সকালে কানসাট বাজারে ঘুরার সময় অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে।, দুই একটা ভ্যান ও সাইকেল আম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কিছুটা এগিয়ে গিয়ে কানসাটের মূল বাজারে দেখা গেল, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাইকেলে, ভ্যানে করে আম নিয়ে হুসেন আলি জানান নিজ বাগানের বোমবাই ও ল্যাংড়াজাতের আম নিয়ে এসেছি। কিন্তু বড় ব্যাপারী না থাকায় কেউ আম নিচেছ না।যে কয়জন আছে তারা আশানুরূপ দাম বলছে না। বেশি ব্যাপরী নামলে আমের দাম ভালো পাওয়া যায়।
মাসুদ রানা নামে একজন আম চাষী ফ্রুট ব্যাগ প্রযুক্তিতে উৎপাদিত আম বিক্রী করলেন ২হাজার ৩শ ৫০ টাকা মন ধরে। তিনি জানালেন ফ্রুট ব্যাগ করেছিলেন ৫০ হাজার আমে, নানাবিদ কারনে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে না, তাই কানসাটে নিয়ে এসেছি।
কানসাট বাজারে আম কেনা আম ঢাকায় পাঠান শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এবার কানসোটে আমের দর বেশী হওয়ায় ঢাকায় আম পাঠিয়ে লাভ হচ্ছে না। তবে আম ব্যবসায়ীরা বলছেন তাদের ক্ষতি হচ্ছে, আপনি বলছেন দাম চড়া এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন এবার ঝড় ও শিলার কারনে শিবগঞ্জে আমের উৎপাদন কম হওয়ায় আম ব্যবসায়ী(ব্যবসায়ীদের) লক্ষ্যমাত্র ঘাটতি হওয়ায় গত বারের চেয়ে দাম কিছু বেশী হলে তারা যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থের সম্মুখীন।
অন্যদিকে যখন আম পাঠানোর চিন্তা করছি, তখন দেখছি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়া দেশের অন্য এলাকার আম কিছুটা কম দামে ও বেশি ওজনে কিনে ব্যাপারিরা ঢাকা পাঠাচ্ছে, তখন ঢাকার আড়তে বেশি দামে আমাদের আম নিতে চায় না।
কানসাট আম বাজর ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের খিরসাপাত (হিম সাগর ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২হাজার ৫শ-২ হাজার৬শ টাকায়, মাঝারি মানের ২হাজার-২হাজা ২শ টাকা ও ছোট সাইজের ১হাজার ৪শ -১হাজার ৬শ টাকা।
অন্যদিকে ভালো মানের ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ২হাজার টাকায়, মাঝারি মানের ১হাজার ৫শ টাকায়, ছোট সাইজের ল্যাংড়া বিক্রি হচ্ছে ১হাজার ২শ হতে১হাজার ৩শ টাকায়। বিভিন্ন ধরনের গুটি আম বিক্রি হচ্ছে ৮শতথেকে ১ হাজার ২শ টাকার মধ্যে। সব আমই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ কেজিতে মণ হিসাবে। সেই সাথে আরো ১ কেজি আম দিতে হচ্ছে আড়তদারকে।
এদিকে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে আম পাঠানোর প্রতিবছরের ন্যায় কানসাট বাজারে গড়ে উঠা প্রায় আড়াইশ আমের আড়তের এখনো অর্ধেকমত চালু হয়নি।
কানসাটে একটি বড় আমের আড়ত মেসার্স শফিকুল ট্রেডার্সর মা মালিক শফিকুল ইসলামের সাথে জানান, এবছর আমের আমদানি কম, এবছর ঝড় ও শীলার কারনে আমের উৎপাদন কম হয়েছে। তাই ব্যবসার পরিস্থিতি খুব ভালো না।
তিনি জানান, অন্যান্য বছর এই সময় তার আড়ত থেকে প্রতিদিন ৫-৬ ট্রাক আম পাঠাতে পারলেও এবার অনেক ব্যাপারী এখনো না আসায় গড়ে ২ ট্রাক আম নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো জানান তার আড়তে কাজ করার জন্য ৬০ জন শ্রমিকের মধ্যে এ পর্যন্ত ২০জনকে কাজে লাগাতে পেরেছেন। ঈদের পর বড় বড় ব্যাপারীরা কানসাট মুখী হলে ব্যবসা ভাল হবে।
তবে ঝড় ও শিলায় আমের ক্ষতি হলেও সব মিলিয়ে গড় উৎপাদন ব্যাহত হবে না বলে মনে করেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা। তিনি জানান, জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার মে.টন। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে উৎপাদন হবে ২ লাখ ৪৩ হাজার মে.টন। তবে তিনি ঝড় ও শিলায় শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নসহ নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলার আংশিক এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে স্বীকার করেন।

Read 3103 times

Leave a comment

Make sure you enter the (*) required information where indicated. HTML code is not allowed.