বাংলাদেশের মানুষ অতীতকালে আম পাকাতে এই গাছের পাতা ব্যবহার করতেন।
কিন্তু ফল পাকাতে ক্ষতিকারক ক্যালসিয়াম কার্বাইডের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় এই গাছের কদর নেই।
বরুণ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম- Crateva religiosa। বরুণ Crateva গণের একটি ফুল গাছের নাম। এটি Capparaceae পরিবারের একটি ফুল। অন্যান্য নাম- প্বৈন্যা, শ্বেতপুষ্প, কুমারক, সাধুবৃক্ষ, শ্বেতদ্রুম, মহাকপিথা, মারুতাপহ, Spider Tree, Temple Plant, Garlic Pear। প্রচলিত ভাষায় বৈন্যা।
সাধারণত একটু নিচু জায়গায় জন্মে বা বলা যেতে পারে জলাভূমিপ্রিয় একটি গাছ হলো বরুণ। বসন্তকালে সাদা ও হালকা হলুদ ফুলে গাছ ভর্তি থাকে। পাতা বড় একটা দেখা যায়না তখন। দূর থেকে দেখতে অনেকটা আমেরিকার Dog wood-এর মত। ফুলের সে রকম কোন গন্ধ নেই। বসন্তকালে পুষ্পাবৃত গাছ সবার দৃষ্টি আকর্ষন করে থাকে।
ভাটি অঞ্চলে ধানকাটার সময় টেপী বোরোর গরম গরম ভাতের সঙ্গে বরুণের কচি ডগা ভর্তা-ভাজি করে গৃহস্থ নারীরা কামলাদের খেতে দেন। চৈত্রসংক্রান্তির দিনে হাওরের নারীরা সংগ্রহ করেন বরুণ ফুল। আসছে বছরটি যাতে পরিবার ও গ্রামসমাজের জন্য মঙ্গলময় হয়, সে জন্য বরুণের ফুল গ্রামময় গেঁথে দেওয়া হয় গোবরের দলায়। হাওরাঞ্চলে এ পর্ব আড়িবিষুসংক্রান্তি নামে পরিচিত।
অতি প্রাচীন কাল থেকেই ভেষজ গাছ হিসেবে পরিচিত। অর্থব বেদে এর কথা উল্লেখ আছে। চরক ও সুশ্রুতে এর গুনগান করে অনেক কথা উল্লেখ করেছেন। এমনকি পাশ্চাত্যেও খ্রিষ্টপূর্ব এক শতাব্দীতে এক ভেষজ পন্ডিত Crataeva এর ছাল নিয়ে অনেক পরীক্ষা করেছেন।