আম গাছের পরগাছা (Parasitic plant) রোগটি রাস্না ও লোরানথাস নামক পরগাছার আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। আমাদের দেশে আম গাছে ২-৩ প্রকার পরগাছা উদ্ভিদ জন্মাতে দেখা যায়। পরগাছা আকর্ষণীয় ফুল ও ফল উৎপন্ন করে। বীজসহ ফল পাখীরা খায়, কিন্তু বীজ হজম না হওয়ায় তা মলের সাথে বের হয়ে আসে। এ বীজ আমের ডালে পতিত হয়ে অঙ্কুরিত হয় ও বাড়তে থাকে। বর্ষাকালে পরগাছার বীজ বিস্তার লাভ করে।
রোগের লক্ষন
বড় বা বয়স্ক আমগাছে পরগাছার আক্রমন বেশী হয়ে থাকে। পরগাছার বীজ আম গাছের ডালের উপর অংকুরিত হলে এর শিকড় বা হষ্টোরিয়া ডালের ভিতরে প্রবেশ করে সেখানে উক্ত পরগাছা ক্রমান্বয়ে ডালপালা ও পাতায় সমৃদ্ধ হয় পরগাছার ডালপালা ও পাতা অনেকটা আমগাছের মতই। ইহাকে দূর থেকে সহজে বুঝা যায় না। তবে পরগাছায় যখন ফুল ফোটে তখন দূর থেকে লক্ষ্য করলে লাল ফুল সহজে পরিলক্ষিত হয়। ইহা গাছ হতে পানি, খাদ্যরস এবং খনিজ পদার্থ শোষণ করে বেঁচে থাকে এজন্য আক্রান্ত আম গাছ দুর্বল হয় এবং আমের ফলন অনেক কমে যায়।
রোগের প্রতিকার
আম গাছের আক্রান্ত ডাল হতে পরগাছা গোড়াসহ কেটে পুড়ে ফেলতে হবে এবং কাটা অংশে বর্দোপেষ্ট (প্রতি লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম তুঁতে ও ১০০ গ্রাম চুন) লাগাতে হবে।
বর্ষা আসার পূর্বে অর্থাৎ পরগাছার ফুল আসার আগেই ইহা ছাটাই করতে হবে।
ডিজেল ওয়েল ও সাবান দ্বারা তৈরী ইমালসান (২০০ মিলি ডিজেল ওয়েল + ১০ গ্রাম সাবান + ১ লিটার পানি) গাছে ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।
কপার সালফেট ও আগাছা নাশক ২, ৪ ডি (ডাইক্লোরোফেনোক্সিএসিটিক এসিড-ঈ৮ঐ৬ঈষ২ঙ৩) ছিটিয়ে বা ইনজেকশন দিয়ে পরজীবি উদ্ভিদকে মেরে ফেলতে হবে।