এ বছর রংপুরের চাষিরা হাঁড়িভাঙ্গা আম গাছে রেকর্ড পরিমাণ মুকুল ধরায় শতকোটি টাকার স্বপ্ন দেখছে। রংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলায় প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় আম্র মুকুল শোভা পাচ্ছে। এবার উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম উৎপাদনের আশা করছেন চাষিরা।
রংপুর কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে শুধু রংপুর জেলায় ১৫ হাজার ১২০ হেক্টর এবং বাসাবাড়ি ও ক্ষুদ্র পরিসরে ৩ হাজার ১১৪ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় এই আম বাগানের পরিমাণ ৪৫ হাজার ৫০০ হেক্টর। এই পরিমাণ জমিতে প্রায় ৪১ লাখ ৭৪ হাজার গাছ রয়েছে। যা থেকে গড়ে ৫ মণ করে আম উৎপাদনের মাধ্যমে ২ লাখ ২৫ হাজার মণ আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পরিমাণ আমের মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
মধ্যে অর্ধেক চাষি এবং বাকি অর্ধেক মধ্যস্বত্বভোগী, আড়তদার, ব্যাপারীর পকেটে ঢুকবে। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৃষি বিভাগের কাছে রংপুরে হাঁড়িভাঙ্গাসহ আম উৎপাদনের একটি তালিকা থাকলেও আম চাষিদের জন্য কৃষি বিভাগের দৃশ্যমান নির্দেশনা ও কার্যক্রম নেই। ফলে এবার ব্যাপক মুকুল আসলেও চাষিরা রয়েছে চিন্তায়। তারা মুকুল থেকে আমের এই গুটি হওয়ার সময়ে যে কোনো ধরনের পচন রোগ এবং গুটি নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয়ভাবে নিজে অভিজ্ঞতা এবং ওষুধ কোম্পানির ওপর ভর করে আম বাগানে স্প্রে করছেন।
সরেজমিন রংপুরের মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ, ময়েনপুর, রানীপুকুর, বালুয়া মাসিমপুর, ছড়ান, বড়বালা, লতিবপুর, সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করনী এবং বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর, গোপালপুর, লোহানীপাড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, হাঁড়িভাঙ্গা আম বাগানে ব্যাপক মুকুল এসেছে। এখন মুকুল থেকে আমের কুঁড়ি বের হচ্ছে।
আম চাষি আমজাদ উদ্দিন পাইকার জানান, আল্লাহ এবার হাঁড়িভাঙ্গা আমের মুকুলের জোয়ার দিয়েছেন। স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুকুল এসেছে এবার। যা অতীতে কখনও আসেনি। এখন মুকুল থেকে আমের কুঁড়ি বের হচ্ছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সরওয়ারুল হক জানান, রংপুরের ঐতিহ্যবাহী হাঁড়িভাঙ্গা আমের এবার রেকর্ড পরিমাণ মুকুল ধরেছে।
মুকুল থেকে নাকফুল ও মোটরদানা বের হচ্ছে। আমরা হাঁড়িভাঙ্গা আম চাষিদের পাশে আছি। ১২টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। তিনি বলেন, বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙ্গা আমের বাম্পার ফলন হবে। যা উৎপাদনের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।