ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমগাছে এখন ভরপুর মুকুল। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে হলুদ রঙের মুকুলে হাতছানি দিচ্ছে এর অপরূপ সৌন্দর্যেরও। তবে এখন প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার পালা এসব মুকুলের। আর এবার গাছে ভালো মুকুল আসায় ভালো ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা মুকুলের পরিচর্যায় পার করছেন ব্যস্ত সময়।

জানা গেছে, চলতি বছর শীতের তীব্রতা ও ঘন কুয়াশার মতো নানা সমস্যা কাটিয়ে আম গাছে মুকুল এসেছে ৬০ ভাগ। গত বছরের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভালো ফলনের আসা করছেন বাগান মালিকরা। সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার একাধিক আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বড় গাছের তুলনায় ছোট বা কম বয়সী গাছে মুকুলের পরিমাণ বেশি। এসব আমবাগানে বালাইনাশক ছিটানোর কাজ করছেন শ্রমিকরা।

কৃষি বিভাগ ও আমচাষিরা বলছেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলেও আবহাওয়া অনুুকূলে থাকলে এবার আমের ভালো ফলন হবে। মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা করছেন আমবাগানের মালিক ও চাষিরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকও ব্যবহার করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রায় সব জাতের আমের উৎপাদন হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর কৃষিজমিতে বাড়ছে আমের আবাদ। আম রুপালি, ফজলি, খিরসা, মোহনা, ল্যাংড়া, রাজভোগ ও গোপাল ভোগসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও ছোট ছোট পরিত্যক্ত ও বাড়ির আশপাশে জায়গাগুলোতেও অনেক আমগাছ রয়েছে। ইতোমধ্যে আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশজুড়ে যত আমবাগান তার বেশিরভাগই রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এ জেলার উৎপাদিত আম এলাকার চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া বড় একটা অংশ বিদেশেও রফতানি করা হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, ঘনকুয়াশার কারণে আমের মুকুল কিছুটা নষ্ট হয়েছে। এরপর ঝুঁকি রয়েছে শিলাবৃষ্টি ও অতি খরার। জেলার ২৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে প্রায় ২০ লাখ আমগাছ রয়েছে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৪ হাজার টন। আর গত বছর এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই লাখ ৪০ হাজার টন।