হাঁড়িভাঙ্গা
- Published Date
- Written by Super Admin
- Hits: 918867
আমের ভরা মৌসুমে হাঁড়িভাঙ্গা বাজারে আসে। জুন মাস জুড়েই পাওয়া যায়। উৎকৃষ্ট জাতের এই আমটি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে প্রচুর পরিমাণে জন্মে।
আমের ভরা মৌসুমে হাঁড়িভাঙ্গা বাজারে আসে। জুন মাস জুড়েই পাওয়া যায়। উৎকৃষ্ট জাতের এই আমটি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামে প্রচুর পরিমাণে জন্মে।
বাংলাদেশে আর কোনো অঞ্চলে এই আমের উৎপাদন নেই। তবে ইদানীং এই আমের চারা নিলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনির হাট ও গাইবান্ধা জেলাও ছড়িয়ে গেছে। জানা যায়, প্রায় ১০০ বছর আগে মিঠাপুকুর উপজেলার উচাবালুয়া গ্রামের সোহরাব আলী নামের একজন হাড়ি পাতিলের ব্যবসায়ী আম খেয়ে আমের আঁটিটি বাড়ির পিছরে ঝোপঝাড়ে ছুড়ে ফেলেন। আঁটিটি পড়ে একটি ভাঙ্গা হাড়ির মধ্যে। সেখানেই আঁটি থেকে জন্ম নেয় একটি আম গাছ। সোহরাব হোসেনের জন্ম নেওয়া আম গাছটি অন্যত্র রোপণ করেন। গাছটি বড় হয়ে প্রচুর আম দেয়া শুরু করল। এভাবেই জন্ম হয়েছিল হাড়িভাঙ্গা নামের এই বিখ্যাত আমটির। আমটির জন্মের সাথে নামের বেশ মিল রয়েছে। মিঠাপুকুর উপজেলার ময়েনপুর, বালুয়অ, খোড়াগাছ, রাণীপুকুরসহ ১০টি ইউনিয়ণেই কম বেশি এই আমের চাষ হয়। বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবজুর, গোপালপুর, লোহানীপাড়া,কালুপাড়া, বিষ্ণুপুর ইত্যাদি গ্রামে এই আমের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। হাড়িভাঙ্গা আমের তিনটি প্রজাতি রয়েছে। প্রথমটি দেখতে প্রায় গোলাকার। ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম। দ্বিতীয়টি প্রায় গোলাকার তবে আকৃতি একটু বড়। ওজন ৩০০-৩২৫ গ্রাম, এই প্রজাতির হাড়িভাঙ্গা পাকলে বোটার আশেপাশে লাল বর্ণ ধারণ করে।তৃতীয় প্রজাতির হাড়িভাঙ্গাকে স্থানীয়ভাবে কপিলরাংড়ি ডাঁড়িভাঙ্গা বলা হয়। এর আকার ছোট এবং লম্বাটে। ৬-৭ টি আমে এক কেজি হয়। হাঁড়িভাঙ্গা আমের খোসা পাতলা ত্বক মর্সণ। পোক্ত অবস্থায় সবুজ। খোসা সংলগ্ন শাঁসের অংশ হলুদ। ভিতরের অংশ আটি পর্যন্ত কমলা রংয়ের। অত্যন্ত রসাল, সুমিষ্ট এবং সুস্বাদু এই হাড়িভাঙ্গা আম। আটিতে কোনো আশ নেই। রংপুর এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। সারা দেশেই এর জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। রংপুর এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। সারাদেশে এর জনপ্রিয় বেড়ে চলেছে। রংপুরের সেসকল এলাকায় এই আম বেশি জন্মে সেসকল এলাকায় আস্তে আস্তে আম চাষের এবং এর সাথে আনুসঙ্গিক ব্যবস্থাপনার ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে। পোক্ত অবস্থায় গাছ থেকে আম অহরণের কৌশল, অক্ষত অবস্থায় আম পেড়ে রক্ষণাবেক্ষণসহ ভোক্তার হাতে পৌছে দেবার সার্বিক ব্যবস্থাপনা এখনও রপ্ত না হবার কারণে খুব বেশি পরিমাণে আমের গায়ে ক্ষত লক্ষ্য করা যায়। এই আমে শত্রু পোকার আক্রমন বেশি হওয়ায়। এখানকার আম চাষীদের আগাম ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। আমটির বোটা শক্ত যে কারণে ফড়ে সহজে ক্ষতি হয় না।
আরও কিছু ছবিঃ
Leave your comments