x 
Empty Product

ছোট সোনা মসজিদ (ভিডিও)

User Rating:  / 1
PoorBest 

অপূর্ব স্থানত্য কলার প্রাচীন নিদর্শন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাধীন শাহ্বাজপুর ইউনিয়নের ফিরোজপুর মৌজায় অবস্থিত সোনা মসজিদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে গৌড়ের কোতওয়ালী দরজা আসতে মহাসড়কের ডান

অপূর্ব স্থানত্য কলার প্রাচীন নিদর্শন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলাধীন শাহ্বাজপুর ইউনিয়নের ফিরোজপুর মৌজায় অবস্থিত সোনা মসজিদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ হতে গৌড়ের কোতওয়ালী দরজা আসতে মহাসড়কের ডান

দিকে সহজেই চোখে পড়বে চোখে ধাঁধানো, বিস্ময় রস সমৃদ্ধ অমর এই পূরাকীর্তিটি। একটি বিশাল দিঘীর দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্ত জুড়ে এর অবস্থান। এটি সুলতানী আমলের স্থাপত্যের রত্নবলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এ মসজিদের বড় বিশেষত্ব হচ্ছে, মসজিদের দেযাল (ভিতরে ও বাইরে) গ্রানাইট পাথর দ্বারা আচ্ছাদিত। তাতে নানা প্রকার ফুল লতাপাতা ও হিন্দু আমলের শিকল এবং ঘন্টার মোটিফ অনুসরণে বিভিন্ন ধরণের ঝুলন্তরীত অনুসরণ করা হয়েছে। মসজিদটির দৈর্ঘ্য বাইরের দিকে উত্তর দক্ষিণে ৮২ফুট এবং পশ্চিমে সাড়ে ৫২ফুট উচ্চতা ২০ফুট। অভ্যন্তরীণ ভাগের পরিমাপ প্রায় সোয়া ৭০ ফুট  এবং সোয়া ৪০ফুট। এ হতে সহজেই এর দেয়ালের প্রশস্থতা আঁচ করা যায়। মসজিদের গায়ে আচ্ছাদনকৃত পাথর খন্ডের ঢেরা কোটা সবগুলো একই বিষয়বস্তু খোদায়কৃত অলংকরণ রয়েছে। রখাদায়কৃত অলংকরণগুলিই এ মসজিদের গৌরব। মসজিদটির পূর্ব দিকের দেয়ারে পাঁচটি খাজ ও খিলানযুক্ত প্রবেশ পথ রয়েছে। উত্তর দক্ষিণে একই পদ্ধতির আরো ৩টি করে মোটা ৬টি প্রবেশ পথ রয়েছে। অভ্যন্তর ভাগে ৮টি প্রস্তর স্তম্ভের ওপর ভোল্ট যুক্ত ১৫টি গম্বুজ বিদ্যামান। উত্তর দক্ষিণে ৩টি গম্বুজ সারি রয়েছে। প্রতি সারিতে ৫টি করে গম্বুজ সোভা পাচ্ছে। প্রতি সারিতে উত্তর দক্ষিণে ২টি করে মোট ৩টি সরিতে ১২টি অর্ধ গোলাকার গম্বুজ রয়েছে। মধ্যের ৩টি গম্বুজ অপেক্ষাকৃত বড় এবং বাংলা চৌচালা ঘরের সাদৃশ্য। পল্লীর কাঁচা ঘরে বাঁশ খড়ের ছাউনীর অনুরূপ এক অদ্ভুদ শৈল্পিক নিদর্শন এ গম্বুজত্রয় সত্যই দৃষ্টি নন্দন। এত নির্মাতা শিল্পী তার অপূর্ব শিল্প রস ও কৌশল ঢেলে অপরূপ ভাবে প্রস্ফুটিত করেছেন। মসজিদের পূর্ব দেয়ালের প্রবেম পথ বরাবর অভ্যান্তর ভাগে পশ্চিম দেয়ালে ৫টি অর্ধবৃত্তাকার মিহরাব রয়েছে। মিহরাবগুলিও ছিল পাথরের বিচিত্র নক্শা ফুল লতাপাতা অংকিত। মিহরাবগুলির অধিকাংশই এখন পাথর বিহীন এবং মূল ইটের দেয়াল দেখা যাচ্ছে। এর উত্তর পাশে দ্বিতল কায়দায় নির্মিত একটি রাজকীয় গ্যলারী রয়েছে। একে অনেকে মহিলাদের গ্যালারী বলে থাকেন। এ গ্যালারিটিও এখন ধ্বংসন্মুখ। উত্তর পশ্চিমে কোণে ছিল গ্যালারীর প্রবেম পধ। দরজার সংগে সংযুক্ত একটি উঁচু সিঁড়ি যুক্ত প্লাটফর্মের ওপর দিয়ে গ্যালারিতে প্রবেশ করা যায়। এটি বর্তমানে বন্ধ। গ্যালারির সন্মুখেও অপেক্ষাকৃত ছোট একটি মিহরাব এবং দরজার উপর ছোট একটি জানালা রয়েছে।

                মসজিদের বাইরের দিকে চার কোণে চারটি বহুভূজাকৃত বুরুজের সাহায্যে কোণগুলির মজবুত অবয়ব সৃষ্টি করেছে। এর ছাদের কার্নিসগুলি সামান্য ধনুকের মত বাঁধানো। ছাদ হতে বৃষ্টির পানি নামার জন্যে পাথরের ছোট নালা ব্যবহার করা হরয়ছে।

                মসজিদ অভ্যন্তরে গম্বুজ ও খিলানগুলি চুন সুরকির কাদার সাহায্যে আচ্ছাদিত মধ্যে মধ্যে পোড়া মাটির ফলক, নানা প্রকার ফুল অলংকৃতখিলানের স্প্যান্ড্রিল ও ফ্রেমের উপরের স্থানগুলি আকর্ষণীয় অলংকরণে দিয়ে ভিন্ন ভিন্নভাবে খোদাই করা গোলাপ ফুলের নক্সা দিয়ে ভরাট করা হয়েছে।
 
                মসজিদের প্রধান প্রবেশদ্বারা বরাবর পূর্ব দিকের অঙ্গিনার বর্হিদেয়ালে সীমানা প্রাচীন এর মধ্যস্থলে একটি প্রাধান ফটক দেখা যায়। অতীত এ ফটকটিরও পাথর আবৃত ও গোলাপসহ নানা নক্সার কারু কাজ ছিল বলে জানা যায়।

                ছোট সোনা মসজিদটি খোজা-কি-মসজিদ নামেও পরিচিত। জনশ্রুতিমতে জনৈক খোজা ব্যক্তি কর্তৃক এটি নির্মিত হয়। মনে হয় মসজিদ নির্মাতা ওলি মোহম্মদ খোজা ছিলেন। মালদহের ভূর্তপূর্ব কালেকটর মিঃ পর্চ সাহেবের মতে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্ এর আমলে রাজকীয় হেরেমের দায়িত্ব নিয়োজিত কোষাধ্যক্ষ কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত। ফিরোজপুরের এ সোনা মসজিদির অনুরুপ মসজিদ মালদহ জেলার ইংরেজি বাজার থানা এলাকায় রয়েছে। এ মসজিদটি বার দুয়ারী নামেও খ্যাত। এটি ফিরোজপুরস্থ সোনা মসজিদ অপেক্ষা বড় বলেই এ মসজিদের নাম হয়েছে বড়গ সোনা মসজিদ। ঐ মসজিদটি আলাউদ্দিন হোসেন শাহের পুত্র সুলতান নসরৎ শাহ্ কর্তৃক ৯৩২ হিজরী ১৫২৭ খ্যিঃ নির্মিত। বড় সোনা মসজিদ নির্মাণের প্রায় ১৫/১৬ বছর পূর্বে ফিরোজপুরে ছোট সোনা মসজিদটির নির্মাণ কৌশল ও কারুকার্য বেশী সুন্দর। বলা হয়ে থাকে গৌড় লখনৌতিত যত মসজিদ বিদ্যমান তন্মধ্যে ছোট মসজিদই সবচেয়ে সুদৃশ্যপুর্ণ।



                সোনা মসজিদ নামকরণ সম্পর্কে জেনারেল কানিং  হ্যাম উল্লেখ করেছেন যে, জন সাধারণের প্রচলিত সোনা মসজিদ নামটি নিয়ে ফ্রাষ্কলিন বেশ ফাঁপরে পড়েছিলেন এবং তিনি একটা অদ্ভুদ মতের সূচনা করেছিলেন। তার মতে যেহেতু এর মধ্যে স্বর্ণের চিহ্ন মাত্রও নেই, সেজন্য এর নির্মাণ সামগ্রীর বিপুলতা ও ব্যয়ের পরিমাণ থেকেই এর নামটির উৎপত্তি হয়ে থাকবে। স্থানীয় লোকজনেরা বৃহদাকার বস্তুকে সোনালী বলের না। তারা মূল্যের বাস্তব বা কল্পিত পরিমাণ অনুসারেই বস্তুর নামকরণ করেন। যেমনটি পান্ডুয়ার  এক লাখী মসজিদ ও লাহোরের নওলাখী প্রাসাদ।

                আসল বিষয়টি হচ্ছে যে, মসজিদের গম্বুজগুলো প্রাকৃত অর্থেই স্বর্ণমন্ডিত ছিল। গম্বুজের উপরাংশএত বেশী অংশ এভাবে অলংকরন বা গিল্টি করা হয়েছিল যে, সূর্য বা চাঁদের আলোকের স্মিত স্থাপনাটিকে সম্পূর্ণরূপে স্বর্ণনির্মিত দেখতো। এ তেকেই এর নাম হয়েছে সোনা মসজিদ। সোনায় মোড়া কোন অংশ এখন আর চোখে পড়েনা। কিন্তু জনসাধারণের মধ্যে ঐ কিংবদন্তী প্রচলীত আছে। এছাড়া গৌড়ে সোয়া প্রহর সোনা বর্ষেছিল বলে এ মসজিদের নামকরণ  করা হয়েছে “সোনা মসজিদ।

                ক্রেইটন মন্তব্য করে গেছেন, মসজিদের উপর স্বর্ণ মোড়ায়ের ধ্বংসাবশিস্ট এখনো দেখা যায় এবং অট্টলিকাটির সোনালী অ্যাখার কারণ এটিই হতে পাড়ে। ১৮৭৯ খ্রিঃ পরবর্তী সময়েও যখন জেনারেল ক্যানিং হ্যাম ভ্রমনে আসেন তখনও ছোট সোনা মসজিদের উপর কিছু স্বর্ণ মোড়াই অবশিষ্ট ছিল। রজনীকান্ত চক্রবর্তী, এম আবিদ আলী খান, এ.বি.এম. হোসেন, মাঃ আমিরুল ইসলাম, ডঃ মাযহারুল ইসলাম তরু, মাওঃ ময়েজউদ্দিন প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ তাদের প্রকাশিত পুস্তকে এ বিষয়ে উল্লেখ করে গেছেন।

                ছোট সোনা মসজিদ উত্তর প্রান্তে দীঘিটির তলদেশ হতে একটি লোহার জিঞ্জির সোনা মসজিদের প্রাঙ্গের পর্যন্ত সুবিস্তৃত ছিল। যা দীর্ঘ দিন যাবৎ দেখা যেত। কিছু কাল হতে তা আর দেখা যাচ্ছে না। বিষয়টি রহস্যউদ্দিপকও বটে।

মসজিদের মিহরাবটি ছিল কারুকার্য খচিত ও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এতে অনেক মূল্যবান পাথর এমনকি হীরক খন্ড সন্নিবেশিত ছিল। ১৮৯৭ খ্রিঃ প্রলয়স্করী ভূমিকম্পে মসজিদটির পশ্চিম দেয়ালের বিরাট অংশের প্রস্তরের আচ্ছাদন ও মিনারগুলি বিধ্বস্থ হয়। মিহরাবের উপর স্থাপিত শ্বেত প্রস্তরের উজ্জ্বল প্রস্তর খন্ড ও বহু দূর্বভ প্রস্তরাংশ সন্নিবেশিত ছিল। মসজিদের ভিতরের প্রস্তর খন্ড হতে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে পুরো মসজিদ আলোকিত হত এবং বহিবিভাগের প্রস্তার খন্ড হতে বিচ্ছুরিত আলো মসজিদের আঙ্গিনা চত্বর আলোকিত করে রাখতো বলে কিংবদন্তি রয়েছে। ১৯০০ মতন্তে ১৯০৯ সালে বৃটিশ সরকার মসজিদটির সংস্কারের নামে মূল্যবান প্রস্তার খন্ডগুলো সেই সময় ইংরেজরা সংগ্রহ আবার কোনটি মসজিদের গা হতে খুলে নিয়ে বৃটেনে পাচার করে। এর মধ্যে কিছু কিছু নির্দশন বৃটিশ যাদু ঘরে রক্ষিত আছে বলে জানা যায়।

মসজিদটির মধ্য দরজার কিছু উপরে ব্যাসল্ট পাথরের উপর একটি শিলা লিপি উৎকীর্ণ রয়েছে। লিপিটির উপরের ডান দিকের কোণ ও নিচের বাম দিকের কোণ ভেংগে গেছে। ফলে এর তারিখ ঠিক থাকলেও প্রতিষ্ঠা সন উল্লেক নেই। মনে হয় অতীত কে বা কারা শিলা লিপিটি খুলে নেয়ার চেষ্ঠা করেছিল। অনুরুপভাবে ডান দিকের পূর্ব দেয়ালের উত্তরাংরশ দরজার মধ্যবর্তী বাম পাশের একটি কারুকার্য খচিত প্রস্তর খন্ড খুলে নিয়েছে। স্থানটি খালি চোখে দেখলেই খুলে নেয়ার বিষয়টি সহজেই প্রতিয়মান হয়। যাই হোক মসজিদে উৎকীর্ণ লিপিটির মধ্য লাইনে তিনটি শোভা বর্ধক বৃত্ত রয়েছে। প্রতিটিতে রয়েছে আল্লাহ্ তালার পবিত্র নাম। মধ্য বৃত্তটির মধ্যে রয়েছে ইয়া আল্লাহ্ “ওহ আল্লাহ্” ডানদিকের বৃত্তে “ইয়া হাফিজ”- ওহে রক্ষক, বাম বৃত্তে “ইয়া রহিম” “ওহে দয়াময়”।

শিলা লিপিতে যেহেতু বাদমাহ’র নাম ও রাজত্ব কালের কথা উল্লেখিত হয়েছে, সেহেতু লিপিটি সনের উল্লেখ না থাকায় আমরা ধরে নিতে পারি মসজিদটি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ্ এর আমলে অথাৎ ৮৯৯-৯২৫ হিজরী, ১৪৯৩-১৫১৯খ্রিঃ এর মধ্যেই নির্মিত হয়েছিল। প্রতিষ্ঠাতার নাম ওয়ারী মুহম্মদ বিন আলী। সুলতানের রাজ দরবারে যাঁবে উপাধি ছিল “মসলিম উর মসজিদ, মজলিস মনসুর নামের সাথে গাম্ভীর্যপূর্ণ উপাধিই নিদের্শ করে, রাজদরবারে তিনি একটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ পদের অধিকারী ছিলেন।

                "দয়াময় ও করুনাময় আল্লাহ্র নামে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ্তালা বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহ্ এবং শেষ বিচারের দিন বিশ্বাস করে, নামায কায়েম করে এবং যাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ্ ছাড়া কাউকে ভয় করে না, সেই মসজিদ নির্মাণ করে যাতে সে সৎপথ প্রাপ্ত লোকদের মধ্যে গণ্য হয়। নবী (সাঃ) বলেছেন যে ব্যক্তি আল্লাহ্র জন্য একখানি মসজিদ নির্মান করেন, আল্লাহ্ তার জন্য বেহেশতে অনুরূপ একটি ঘর নির্মান করবেন। এই জামে মসজিদের ইমারত সুলতানদের সুলতান, সৈয়দদের সৈয়দ, শুভ কাজের ফোয়ারা, মসিলমান নরনারীদের প্রতি দয়ালু যিনি সত্য এবং ভালো কাজ সমুন্নত করেন, যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারকের সাহায্যে প্রাপ্ত, মহান দয়ালু (আল্লাহর) রাস্তায় যোদ্ধা, প্রমাণ ও সাক্ষ্যমতে আল্লাহর খলিফা, ইসলাম ও মুসলমানদের ত্রাণকারী আলা-উদ-দুনিয়া ওয়াদ দীদ আব্দুল মুজাফ্ফর হোসেন শাহ্ সুতৈান হোসেনীর রাজ্বকালে নির্মিত হয়, আল্লাহ্ তার রাজ্য ও ক্ষমতা চিরস্থায়ী করুন। সৎ ও মহৎ উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহ্র উপর নির্ভর করে আলীর পুত্র ওয়ালি মুহাম্মদ, যার উপাধি হচ্ছে মজলিস-উল-মজালিস মজলিস মনসুর এই জামে মসজিদ নির্মান করেন। আল্লাহ্ তাঁকে ইহকাল ও পরকাল সাহায্য করুন। এর শুভ তারিখ পবিত্র রজব মাসের ১৪ তারিখ, আল্লাহ্ এই মাসের মূল্য এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করুন......।"

 ছোট সোনা মসজিদের আরো একটি শিলা লিপির কিছু অংশ আবিস্কৃত হয়েছে। তা কোলকাতা ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে। এই আংশিক লিপিতে দেখা যায় যে, উভয় শিলা লিপির ভাষায় প্রায় অভিন্ন। তবে শেষোক্তটির তারিখ যতটুকু পড়া যায় তা রমজান মাসের ২৭তারিখ। আরো একটি শিলা লিপির কিছু অংশ পাওয়া গেছে। (মূলে কোথায় ছিল তা জানা যায়না) এতে নির্মাতার নাম মুহম্মদ বিন আলী বিন আমীর হাজী। সম্ভকতঃ শেষোক্ত শিলা লিপিটির তাখাস্থ হযরত শাহ নিয়ামত উল্লাহ (রঃ) এর মাজারে রক্ষিত আছে। এছাড়া ঐ মজারের দক্ষিণ পার্শ্বস্থ ঘরে আরো একটি লম্বা শিলা লিপি রক্ষিত আছে।

                ২০০৪-২০০৫ অর্থ বছরে বাংলাদেশ পূরাত্বত বিভাগ ঐতিহাসিক ছোট সোনা মসজিদ আঙ্গিনা চত্বর খননের পর প্রায় ১ ফট মাটির নিচ থেকে রকমারী কারুকার্য খচিত প্রায় ৫ হাজার প্রাচীন টাইলস উদ্ধার করেছে। দেশের প্রাচীন কোন স্থাপন থেকে এ ধরণের প্রাচীন নির্দশন উদ্ধার বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম বলে প্রত্নতত্ব বিশেষঞ্জ গণের অভিমত ৭ অক্টোবর ২০০৫ ঐ স্থাপনাগুলোর সংস্কার কর্মসূচির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজে এ লেখক সেখানে গেলে প্রত্নতত্ব বিভাগের জনৈক প্রকৌশলী জানান, স্থাপনা সংস্কার কল্পে খনন কাজ চালিয়ে যে, ধরণের নকর্শা করা টাইলস উদ্ধার করা হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল। তিনি জানান, বিক্ষিপ্তভাবে ছিটানো টাইলসগুলোকে একত্রে করে নকর্শা মিলানোতে তাদের এক মাস সময় রেগেছে। টাইলসগুলির নকর্শা পর যে, বৃত্ত আকারের ডিজাইন সৃষ্টি হয়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর ও দৃষ্টিনন্দন। যা আধুনিক কালের ডিজাইনকেও হার মানায়। ব্রিক্স টাইলসগুলো নানা ডিজাইন ও বিচিত্র কারুকাজ সম্ভলিত। উপারাংশে নানা রঙ ও সিরামিকের গ্লেজ করা নকর্শা ও ফুরপাতা অংকিত। বিষয়টি চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না ১৫৭৫ খ্রিঃ ভয়াবহ মহামারীর কারণে গৌড় নগরী চুরান্তভাবে পরিত্যক্ত হয়। নির্জন নিঝুমপুরী বন জঙ্গলে আবৃত ও দীর্ঘকাল অবহেলা আর অযত্নেপড়ে থাকার কারণে টাইলসগুলো সহ পরো আঙ্গিনা চত্বর মাটি চাপা পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পুরাতত্ব বিভাগ টাইলসগুলোর ডিজাইন মিরানোর পর স্থানীয় ডাক বাংলোয় (সোনা মসজিদের পশ্চিমে পুরাতত্ব বিভাগীয় রেষ্ট হাউস) একটি ডিসপ্লে করে। পুরাতত্ব বিভাগ বলেছে ছোট সোনা মসজিদ আঙ্গিনা চত্বরে সর্বমোট ৩৬টি টাইলস সার্কেল (বৃত্ত) ছিল। বৃত্তগুলি ৮টি ডিজাইনের বিভিন্ন প্রকার ও রং-এর টাইলস দিয়ে মিলানো ছিল।

 

আরও কিছু ছবিঃ

Leave your comments

0
terms and condition.
  • No comments found