Articles
ফ্রুট ব্যাগ কি লাভ
- Published Date
- Written by Super Admin
- Hits: 62677
আমের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তিটি সবচেয়ে সফল ও সম্ভাবনাময়। যে সকল এলাকায় আম বাণিজ্যিবভাবে চাষাবাদ হয় না শুধুমাত্র পারিবারিক চাহিদা পূরণে আম গাছ লাগানো হয়। এই সমস্ত গাছে সময়মত স্প্রে করা হয় না বা সেই ধরনের প্রচলন এখনও ঐ সব এলাকায় চালু হয়নি ফলে প্রতি বছরই তাদের গাছে আম ধরে কিন্তু পোকা ও রোগের কারণে অধিকাংশ আম নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও যে সকল এলাকায় বৃষ্টিপাত বেশি হয় এবং আম দেরীতে পাকে সে সকল আমের জাতগুলো বিবর্ণ বা কারো রং ধারণ করতে দেখা যায় এবং মাছি পোকার আক্রমণ দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় নাবীজাত আশ্বিনাতে ১০০ ভাগ আমের মাছি পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়। যে সমস্ত বাগানে ঘন করে আম লাগানো হয়েছে এবং বর্তমানে গাছের ভিতরে সূর্যের আলো পৌছায়না সে সকল গাছে আমের মাছি পোকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে থাকে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে যত ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে বা প্রচলিত আছে কোনটিতেই এই পোকাটি শতভাগ দমন করা সম্ভব নয় বরং আক্রমণের হার কিছুটা কমিয়ে রাখা যায়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শতভাগ রোগ ও পোকামাকড় দমণ করা যায়।
আম রপ্তানির জন্য ভাল মানসম্পন্ন, রঙিন ও রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ মুক্ত আম প্রয়োজন। কিন্তু প্রচলিত পদ্ধতিতে এই তিন বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় ঘটানো সম্ভব নয়। বিভিন্ন আম রপ্তানিকারক দেশে বহুল পরিচিত ও ব্যবহৃত পদ্ধতি হচ্ছে ফ্রুট ব্যাগিং প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি দ্বারা ১০০% রোগ ও পোকামাকড় মুক্ত আম উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়াও ব্যাগিং করা আম সংগ্রহের পর ১০-১৪ দিন পর্যন্ত ঘরে রেখে খাওয়া যায়। সেই সাথে রঙিন, ভাল মানসম্পন্ন নিরাপদ আমও পাওয়া যায়।
এদেশের মানুষ কার্বাইড, ফরমালিন আতংঙ্কে যখন দেশীয় মৌসুমি ফল খাওয়া থেকে প্রায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সে সময়েই এই প্রযুক্তিটি মানুষের হাতের নাগালে। যে কোন আম চাষী, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করলেই এই প্রযুক্তিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে সুফল পেতে পারেন। অন্যদিকে, খরচ কমানো যাবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার।
প্রতি বছর কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকের আমদানি বাবদ খরচ করতে হয় কোটি কোটি ডলার এবং ব্যবহার করা হয় অপকারী পোকাকে মারার জন্য, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে উপকারী ও বন্ধুপোকাগুলোও মারা যায়।ফলে দেখা দিয়েছে পরাগায়নকারী পোকার ঘাটতি। পর্যাপ্ত ফল ধারণ হচ্ছেনা অনেক পর পরাগী ফলের। বর্তমান সময়ে আম বাগানে স্প্রে পরিমান লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষেত্ররেবিশেষে ১৫-৬২ বার। অথচ ব্যাগিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে ৭০-৮০ ভাগ স্প্রে খরচ কমানো সম্ভব। ব্যাগিং প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাগুলো হলো- নিরাপদ, বিষমুক্ত ও রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের একমাত্র উপায় শতভাগ রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণমুক্ত আম পাওয়া সম্ভব। যে কোন জাতের আমকে রঙিন করা যায় এবং আমের সংরক্ষণকাল বাড়ানো যায়, যেটি রপ্তানির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন (১০-১৪ দিন পর্যন্ত) আমের ক্ষেত্রে বালাইনাশকের ব্যবহার ৭০-৮০ ভাগ কমানো সম্ভব হবে।
Comments
- No comments found
Leave your comments