এক নজরে আম চাষ
- Published Date
- Written by Super Admin
- Hits: 9328
পরিচিতি:
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংদেশের প্রায় সব জেলাতেই আম জন্মে তবে উৎকৃষ্টমানের আম প্রধানত: উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলেতে
পরিচিতি:
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংদেশের প্রায় সব জেলাতেই আম জন্মে তবে উৎকৃষ্টমানের আম প্রধানত: উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলেতে
যেমন চাপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, বংপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলাতে ভাল জন্মে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে ১ লক্ষ ৯০ হাজার মেঃ টন আম উৎপন্ন হয় যা আমাদের প্রয়োজনের মাত্র ১/৫ পূরণ হয়ে থাকে। আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ’এ’ থাকে। আম থেকে চাটনি, আচার, জেলী, মোরব্বা, আমসত্ব, জুস প্রভৃতি তৈরী করা যায়।
জলবায়ু ও মাটি:
আম প্রধানত উষ্ণ মন্ডলের ফল। তবে এর বিস্তৃতি অব উষ্ণ মন্ডল পর্যন্ত। ২০ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা আম চাষের জন্য উপযুক্ত। আম গাছ যে কোন প্রকার মাটিতে জন্মে তবে গভীর, সুনিষ্কাশিত উর্বর দোঁ-আশ মাটি আম চাষের জন্য উপযুক্ত।
জাত:
আম পাকার সময় অনুসারে আমের জাত সমুহকে আগাম, মাঝ মৌসুমী এবং নাবি এ তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়।
আগাম জাতঃ যে সব জাত মধ্য মে - মধ্য জুন মাসের মধ্যে পাকে সেগুলো আগাম জাতের অর্ন্তভূক্ত। যেমন- বারি আম-১ (মহানন্দা), গোপালভোগ, খিরসাপাতি, বৃন্দাবনী ইত্যাদি।
মাঝ মৌসুমী জাতঃ যে সব জাত মধ্য জুন - জুন মাসের মধ্যে পাকে সেগুলো মাঝ মৌসুমী জাতের অর্ন্তভূক্ত। যেমন- বারি আম-২ (লক্ষনভোগ), বারি আম-৩ (আম্রপালি), বাউ আম - ২ (সিন্দুরী), বাউ আম - ৩ (ডায়াবেটিক), ল্যাংড়া, সূর্যপুরী, হিমসাগর, কিষাণভোজ এবং কোহিতুর অন্যতম।
নাবী জাতঃ যে সকল জাত জুলাই মাস হতে পাকে সেগুলোকে নাবী জাত বলে। নাবী জাতের মধ্যে বারি আম-৪, বাউ আম -১ (নিলাম্বরী), বাউ আম - ৫ (পলিএ্যাম্বায়নী), ফজলী, আশ্বিনা, কুয়াপাহাড়ী এবং মোহনভোগ অন্যতম।
বংশ বিস্তার
আম গাছের বংশ বিস্তারে প্রধানতঃ জোড় কলম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে ক্লেফ্ট ও ভিনিয়ার গ্রাফটিং পদ্ধতি বহুল ভাবে প্রচলিত। এ জন্য রোগমুক্ত ও পাকা আম হতে ষ্টক চারা তৈরী করে নিয়ে তার উপর কাঙ্খিত জাতের ডগা বা সায়ন জোড়া দিয়ে এ কলম করা হয়। সাধারণত মে, জুন এবং জুলাই মাস আমের জোড় কলমের জন্য উপযুক্ত সময়। তবে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এ সময়ের কিছুটা তারতম্য হতে পারে। পরীক্ষায় প্রমানিত হয়েছে যে, বামন জাতের আদি জোড়ের উপর বামন জাতের সায়ন জোড়া লাগালে উৎপন্ন কলমটিতে প্রকৃত বামন চরিত্র প্রকাশ পায়।
জমি নির্বাচন ও তৈরী:
আম বাগানের জন্য সেচ- নিষ্কাশন সুবিধা যুক্ত, রৌদ্রময় স্থানে উঁচু থেকে মাঝারী উঁচু জমি নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচিত জমিটিকে ভালভাবে চাষ মই দিয়ে আগাছা মুক্ত ও সমতল করে তৈরী করতে হবে। আম গাছ প্রধানত বর্গাকার পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়। তবে ষঢ়ভূজী বা হেক্সাগোণাল পদ্ধতিতে রোপণ করা গেলে সমপরিমান জমিতে ১৫% গাছ বেশী রোপণ করা যায়।
চারা রোপণের সময়:
জ্যৈষ্ঠ - আষাঢ় মাস এবং ভাদ্র - আশ্বিন মাস চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।
রোপণ দুবত্ব:
বড় আকৃতির জাতের জন্য ৮ -১০ মিটার এবং বামন আকৃতির জাতের জন্য ৫ মিটার দুরুত্ব দেয়া উত্তম।
মাদা তৈরী ও সার প্রয়োগ:
মাদা ১মি x ১মি x ১মি আকারে তৈরী করতে হবে। প্রতি মাদায় ১৮-২২ কেজি জৈব সার, ১০০-২০০ গ্রাম ইউরিয়া, ৪৫০-৫৫০ গ্রাম টিএসপি, ২০০-৩০০ গ্রাম এমওপি, ২০০-৩০০ গ্রাম জিপসাম এবং ৪০-৬০ গ্রাম জিংক সালফেট সার মিশিয়ে তৈরী করতে হবে।
চারা রোপণ:
মাদা তৈরীর ১০-১৫ দিন পর মাদার ঠিক মাঝখানে চারাটি রোপণ করতে হবে। চারা রোপণের পর পানি, খুঁটি ও বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপরিসার প্রয়োগ:
গাছের বয়স অনুযায়ী নির্ধারিত মাত্রার সারকে সমান দুই বারে গাছে প্রয়োগ করা হয়। ১ম বার জৈষ্ঠ্য- আষাঢ় মাস এবং ২য় বার আশ্বিন মাসে প্রয়োগ করতে হবে। বয়স অনুযায়ী গাছের গোড়া থেকে ৩-৪ ফুট বাদ দিয়ে দুপুরের রোদের সময় যতটুকু যায়গায় গাছের ছায়া পড়ে ঠিক ততটুকু এলাকাতে সার ছিটিয়ে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। মাটি কোপানোর সময় হাতের কনুই গাছের দিকে দিয়ে কোপালে গাছের শিকড় কম কাটা যাবে। গাছের বয়স অনুযায়ী বাৎসরিক সারের মাত্রা ছকে দেয়া হলো।
সেচ প্রয়োগ:
চারা গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য ঘন ঘন সেচ দিতে হবে। ফলন্ত গাছের বেলায় মুকুল ফোটার শেষ পর্যায়ে ১ বার এবং আম যখন মটর দানার আকৃতি ধারন তখন একবার সেচ দিতে হবে। রিং / বেসিন পদ্ধতি আম গাছে সেচ প্রদানের জন্য উত্তম।
ডাল ছাঁটাইকরন:
গাছের প্রধান কান্ডটি যাতে সোজাসুজি ১ থেকে ১.৫ মিটার হয় সেদিকে লক্ষ রেখে গাছের গোড়ার সকল ডাল ছেঁটে দিতে হবে।
গাছের মুকুল ভাঙ্গন:
গাছ রোপনের পর গাছের বয়স চার বছর না হওয়া পর্যন্ত গাছের মুকুল ভেঙ্গে দিতে হবে। তা নাহলে গাছটি দুর্বল হয়ে যাবে।
ফল সংগ্রহ:
আমের বোটার দিকে হলুদাভ বং ধারন করলে বা গাছ হতে ২-১টি আধাপাকা আম পড়া আরম্ভ করলে আম গাছ হতে সংগ্রহ করতে হবে। আম গাছ হতে ঝাকি দিয়ে না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা উত্তম। আম সংগ্রহের পর বোটাটি নিচের দিকে রাখলে বোটার কশ আমের গায়ে লাগবেনা। বোটার কশ গায়ে লাগলে আমের উপরিভাগ আঠালো হয়ে যায় এবং পাকা আমের উপর তেল ছিটছিটে এবং বাজার মূল্য হ্রাস পায়।
Comments
- No comments found
ফজলি আপডেট
- অনলাইন আম সেলারদের তালিকাঃ
- আমের জন্য ই-কমার্স ব্যবসা: কিভাবে করবেন বিস্তারিত জনুন
- আমের ই-কমার্স ব্যবসা কি ভাবে শুরু করা যায়? | আমের ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন
- চালু হতে যাচ্ছে ই-আম সেলারদের প্লাটফরম
- ই-ক্যাব ফেক ক্রেতার একটা লিস্ট তৈরি করতে পারে
- Bangladesh Rapid eTrade Readiness Assessment
- একটি সফল ই কমার্স ওয়েবসাইট এর হোমপেজ
- একটি প্রতারণার এবং অন্যদের প্রতি সাবধানতা
- খুব শীঘ্রই ৬৪ জেলায় হবে ই-কমার্স ওয়্যার হাউস
- আমার পেজ এর পিক অন্য পেজে ব্যবহার করছে
- কিভাবে ফেসবুক পেজ বিজনেসের জন্য ব্যাবহার করবেন
- ই-ব্যবসার পাইকার জিলিঙ্গো আসছে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ নিয়ে
- মার্কেটিং নয় যেন টাকা ছাপানোর লাইসেন্স হাতে পাওয়া
- ফেসবুকে এড দিলে লাইক কমেন্ট আসে কিন্তু সেল আসে না। কি করবেন?
- আমি আধা পাকা কলা দেয়ার কথা উল্লেখ করে দিলেও তারা পাকা গলা কলা নিয়ে আসে
- স্যামসাং অফিসিয়াল কেউ কি আছেন, কিছু কি করবেন?
- ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৪৮১০০ টাকা ছিল সেটি এখন ৬% মূল্যছাড়ে ৫৩০০০ টাকা
- ড্রপশিপিং কোম্পানীগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভেন্ডর ম্যানেজমেন্ট
- ২০১৯ সালে ফেসবুক মার্কেটিং এর জন্য ৯ টি প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান
- লোকাল বিজনেসের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ম্যাজিক
আরোও কিছু আম

Leave your comments